Scientists solve mystery of China's Terracotta warriors dgtl
International news
কী ভাবে মাটির নীচে হাজার হাজার বছর ধরে ‘পাহারা’ দিচ্ছে চিনের টেরাকোটা সেনা, রহস্যভেদ বিজ্ঞানীদের
আজ থেকে ৪৫ বছর আগে মাটির নীচে আরও একবার ‘জীবন্ত’ হয়ে উঠেছিল এই টেরাকোটা সেনারা।
সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৯ ১১:৪৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১০
ঠিক যেন আলাদা একটা সাম্রাজ্য। বিশাল তার সেনাবাহিনী। দুর্গদ্বার আগলে যেন পাহারা দিয়ে যাচ্ছে দিবারাত্র, বছরের পর বছর। যে বাহিনীর বেশিরভাগটাই মাটির বা ব্রোঞ্জের। বিশ্বকে বিস্ময়ের মধ্যে ফেলে দিয়েছিল চিনের জিংওয়ার এই টেরাকোটা আর্মি। আজ থেকে ৪৫ বছর আগে মাটির নীচে আরও একবার ‘জীবন্ত’ হয়ে উঠেছিল এই টেরাকোটা সেনারা।
০২১০
শুধু এই খোঁজই বিজ্ঞানীদের অবাক করেছিল তা নয়, বিস্ময়ের আরও একটা কারণ রয়েছে। বছরের পর বছর মাটির নীচে ঢাকা পড়া টেরাকোটা সেনার অবিকৃত গঠন হতবাক করেছিল। সম্প্রতি সংরক্ষণের সেই রহস্যই সমাধান করলেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার জার্নাল নেচার-এ তা প্রকাশিত হয়েছে।
০৩১০
চিনের টেরাকোটা সেনা প্রথম আবিষ্কার করে জিংওয়ার এক কৃষক পরিবার। ১৯৭৪ সালে। বাড়ির কাছেই পাতকুয়োর জন্য গর্ত করছিলেন ওয়াং পাঝি নামে এক ব্যক্তি। মাটি থেকে ২ মিটার নীচে অন্য রকম মাটি চোখে পড়ে তাঁর। অপেক্ষাকৃত শক্ত এবং লাল রঙের সেই মাটি। সেখান থেকেই টেরাকোটা সেনার কিছু টুকরো এবং ব্রোঞ্জের অস্ত্র তিনি বার করে আনেন।
০৪১০
এমন ঘটেছে জানতে পেরে ওই গ্রামে ভূতত্ত্ববিদদের একটি দল পৌঁছয়। প্রায় ২০ হাজার বর্গ মিটার এলাকা জুড়ে খনন করেন তাঁরা। সেখান থেকে ৮ হাজার সেনা, ১৩০টি রথ, ৫২০টি ঘোড়া এবং ১৫০ ঘোড়সওয়ার সেনার মূর্তি মেলে।
০৫১০
এই টেরাকোটা সেনা নিয়ে নানা মত রয়েছে। এক প্রত্নতত্ত্ববিদের মতে, ৩০০০ বছর আগে চিনের মানুষ মৃত্যু পরবর্তী জীবনে বিশ্বাস করত। কোনও মহৎ মানুষের মৃত্যুর পর তাঁকে সমাধি দেওয়ার সময় সঙ্গে এক বিশ্বস্ত কর্মচারীকেও সমাধি দেওয়া হত। পরবর্তীকালে এই নিয়ে খুব বিতর্ক হয়। তারই বিকল্প সম্ভবত এই টেরাকোটা।
০৬১০
কিন্তু এত বছর ধরে প্রায় অক্ষত অবস্থায় মাটির নীচে কী ভাবে রয়েছে এই মূর্তিগুলো? এতদিন বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল মরিচা ধরবে না এমন কিছু ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে গবেষণায় আরও অবাক করা তথ্য উঠে এসেছে।
০৭১০
আসলে আলাদা করে কোনও রাসায়নিক নয়, জিয়াং ও তার আশেপাশের মাটিই এগুলোকে সংরক্ষণ করে আসছে বছরের পর বছর ধরে, মত বিজ্ঞানীদের।
০৮১০
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, যেখানে টোরাকোটা সেনাদের রাখা হয়েছিল তার চারপাশের মাটিতে জৈব পদার্থের উপস্থিতি খুবই কম। মাটির ক্ষারকতাও মাঝারি পরিমাণে। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, টেরাকোটা সেনা অন্য জায়গায় মাটির নীচে রেখে দিলে ৪ মাসের মধ্যেই ক্ষয় হতে শুরু করেছে। জিয়াংয়ের মাটিতে যা হয় না।
০৯১০
এর আগে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, মরিচার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য সমস্ত ব্রোঞ্জের অস্ত্রের বাইরের অংশে কারিগর ক্রোমিয়ামের প্রলেপ লাগিয়ে দিতেন। কারণ ব্রোঞ্জের অস্ত্রের বাইরে ক্রোমিয়াম অক্সাইডের আস্তরণ পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা।
১০১০
যে কোনও ধাতব বস্তুকে মরিচার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বর্তমানেও ক্রোমিয়াম অক্সাইডের প্রলেপ লাগানো হয়ে থাকে। তবে পরবর্তীকালে জানা যায়, সেই ধারণা ভুল ছিল। ক্রোমিয়ামের যে প্রলেপ মিলেছিল তা আসলে ধাতব বস্তুর পালিশের কাছে ব্যবহৃত হয়েছিল।