Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Yellowstone Super Volcano

‘ঘুম’ ভেঙেছিল বহু আগে, প্রলয় দেখেছিল বিশ্ব! ‘ঘুমন্ত দৈত্য’ জেগে উঠলে ছারখার হবে গোটা আমেরিকা

আমেরিকার বিখ্যাত ইয়েলোস্টোন জাতীয় উদ্যানের নীচে রয়েছে বিরাট এক সুপ্ত আগ্নেয়গিরি। যার জেরে পার্কে ঘটে নানান অদ্ভুত কাণ্ডকারখানা।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০১
Share: Save:
০১ ১৯
Yellowstone super volcano of USA which may cause of mass extinction

গরম জলের ফোয়ারা আর উষ্ণ প্রস্রবণ। সঙ্গে উপরি পাওনা অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। যা দেখতে সারা বিশ্ব থেকে ভিড় জমান লাখ লাখ মানুষ। সুবিশাল সেই পার্কের নীচে ঘুমিয়ে রয়েছে ভয়ঙ্কর এক ‘দৈত্য’! হঠাৎ সে জেগে উঠলে মুহূর্তে জনশূন্য হতে পারে গোটা একটা মহাদেশ। তেমনটাই দাবি ভূবিজ্ঞানীদের।

০২ ১৯
Yellowstone super volcano of USA which may cause of mass extinction

আমেরিকার ইয়েলোস্টোন জাতীয় উদ্যান। ১৯৭৮ সালে যাকে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’-এর তকমা দিয়েছে ইউনেস্কো। ৮ হাজার ৯৮৩ বর্গ কিলোমিটারের ওই পার্কের নীচে ঘুমিয়ে রয়েছে একটা ভয়ঙ্কর আগ্নেয়গিরি। যা ফেটে লাভা বেরিয়ে এলে গোটা মহাদেশের সব কিছু নিশ্চিহ্ন হতে পারে বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা।

০৩ ১৯
Yellowstone super volcano of USA which may cause of mass extinction

২০১৫ সালে ভূবিজ্ঞানীরা উদ্যানটির নীচে বিশাল আকারের একটি লাভা ভর্তি প্রকোষ্ঠের সন্ধান পান। যা দেখে চোখ কপালে উঠেছিল তাঁদের। ওই লাভা বেরিয়ে এলে বিশ্ব মানচিত্র থেকে আমেরিকা মুছে যেতে পারে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেন তাঁরা। ফলে এই নিয়ে বাড়তে শুরু করে উদ্বেগ।

০৪ ১৯
Yellowstone super volcano of USA which may cause of mass extinction

পার্কের নীচের ওই আগ্নেয়গিরি কখনই জেগে ওঠেনি, এমনটা নয়। বেশ কয়েক বার ঘুম ভেঙেছে তার। সেখানে থেকে বেরিয়ে আসা লাভা, ছাই ও গ্যাসের মাত্রা একটাই বেশি ছিল যে, তা ১০টা এভারেস্টকে ছাপিয়ে যাওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। তবে আগ্নেয়গিরিটি শেষ বার কয়েক কোটি বছর আগে জেগে উঠেছিল বলে মনে করেন বিশ্বের তাবড় ভূবিজ্ঞানীরা।

০৫ ১৯
Yellowstone super volcano of USA which may cause of mass extinction

গবেষকদের দাবি, বর্তমান সময়ে ফের একবার ইয়েলো স্টোন আগ্নেয়গিরি জেগে উঠলে, সেই ধ্বংসলীলা হবে অকল্পনীয়। কারণ, এর লাভা উদ্‌গীরণের পরিমাণ অন্য যে কোনও আগ্নেয়গিরির তুলনায় হাজার গুণ বেশি হবে। যা গোটা আমেরিকাকে অনায়াসে ধূলোর চাদরে ঢেকে দিতে পারে। ফলত, সারা বিশ্বেই পড়বে এর প্রভাব।

০৬ ১৯
Yellowstone super volcano of USA which may cause of mass extinction

বিজ্ঞানীদের অনুমান, ইয়েলো স্টোনের নীচের ‘ঘুমন্ত দৈত্য’ জেগে উঠলে এর লাভা এবং আগুনের গোলা ১ হাজার ৬০৯ কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়বে। উদাহরণ হিসাবে এর অবস্থান মুম্বইয়ে ধরে নিলে আগ্নেয়গিরিটির ধ্বংসলীলার আওতায় চলে আসবে দিল্লিও!

০৭ ১৯
Yellowstone super volcano of USA which may cause of mass extinction

দ্বিতীয়ত, এই আগ্নেয়গিরি থেকে বেরিয়ে আসা ধোঁয়ার মেঘের আড়ালে সূর্যের ঢাকা পড়াও খুব একটা আশ্চর্যের নয়। সে ক্ষেত্রে ভূপৃষ্ঠে পৌঁছবে না সূর্যালোক। ফলে তাপমাত্রা হু-হু করে নামতে শুরু করবে। যার জেরে ফের একবার পৃথিবীতে ফিরতে পারে তুষার যুগ। আলোর অভাবে উদ্ভিদ জগতের অপমৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে। দুনিয়া জুড়ে দেখা দেবে খাদ্যসঙ্কট। ঠিক যে কারণে কয়েক কোটি বছর আগে অতিকায় ডাইনোসর চির দিনের জন্য হারিয়ে গিয়েছিল বলে মনে করেন জীববিজ্ঞানীদের একাংশ।

০৮ ১৯
Yellowstone super volcano of USA which may cause of mass extinction

গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো হলুদ পাথর উদ্যানটি আবার অতিমাত্রায় ভূমিকম্পপ্রবণ। ভূবিজ্ঞানীরা হিসাব করে দেখেছেন, এই এলাকায় দিনে গড়ে অন্তত পাঁচ বার কম্পন অনুভূত হয়। বিপদের জায়গাটা হল, ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরিকে জাগিয়ে তুলতে অনেক সময়েই অনুঘটকের কাজ করে ভূমিকম্প।

০৯ ১৯
Yellowstone super volcano of USA which may cause of mass extinction

এত আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও কেন বছরের পর বছর ‘কুম্ভকর্ণের নিদ্রা’ দিচ্ছে ইয়েলো স্টোনের আগ্নেয়গিরি? এর নেপথ্যে একাধিক কারণের উল্লেখ করেছেন বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের দাবি, ভূপৃষ্ঠ প্রকৃতপক্ষে একাধিক প্লেটের সমাহার। সাধারণত, ঘর্ষণের জেরে দু’টি প্লেটের সংযোগস্থলে ভূমিকম্প হলে সেখান শুরু হয় অগ্নুৎপাত। কিন্তু মজার বিষয় হল, উদ্যানটি মোটেই দু’টি প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত নয় ।

১০ ১৯
Yellowstone super volcano of USA which may cause of mass extinction

শুধু তা-ই নয়, ইয়েলোস্টোন জাতীয় উদ্যান এলাকায় হওয়া ভূমিকম্পের তীব্রতা এতটাই কম যে, আমজনতার পক্ষে তার মালুম পাওয়া শক্ত। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা দুই বা তারও কম থাকে। বিজ্ঞানীদের দাবি, উদ্যানটির নীচে যে লাভার প্রকোষ্ঠ রয়েছে, তাতে তাপজনিত চাপের কারণেই বার বার কেঁপে ওঠে সেখানকার মাটি। ফলে এটি আগ্নেয়গিরিটিকে জাগিয়ে তুলতে কতটা সহায়ক হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

১১ ১৯
Yellowstone super volcano of USA which may cause of mass extinction

বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, উদ্যানটির নীচে আশ্চর্য এক প্রাকৃতিক খেলা চলছে। সাধারণত, ভূমিকম্পের জেরে মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে লাভা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ব্যাপারটা সম্পূর্ণ উল্টো। গরম লাভার তাপজনিত চাপের জেরে বার বার কম্পন অনুভূত হচ্ছে। এই ভূমিকম্প না থাকলে ওই চাপ বাড়তে বাড়তে একটা সময়ে এমন জায়গায় পৌঁছবে যা আগ্নেয়গিরিটিকে জাগিয়ে তুলবে।

১২ ১৯
Yellowstone super volcano of USA which may cause of mass extinction

উদ্যানটির নীচে বিশাল লাভার প্রকোষ্ঠ আবিষ্কারের পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে গবেষণায় মেতে ওঠেন ভূবিজ্ঞানীরা। তাঁদের একাংশের আবার দাবি, এলাকাটির নীচে থাকা লাভার মাত্র পাঁচ থেকে ১৫ শতাংশই গলিত অবস্থায় রয়েছে। বাকিটা জমে পাথর হয়ে গিয়েছে। ফলত, এর থেকে বিপদের আশঙ্কা খুবই কম।

১৩ ১৯
Yellowstone super volcano of USA which may cause of mass extinction

দুনিয়ার বিপজ্জনক আগ্নেয়গিরিগুলির একটি তালিকা রয়েছে। সেখানে ২১তম স্থানে জ্বলজ্বল করছে ইয়েলোস্টোনের নাম। সাম্প্রতিক গবেষণায় আর পাঁচটি আগ্নেয়গিরির তুলনায় একে সামান্য বড় বলেছেন ভূবিজ্ঞানীরা। এর জেগে ওঠার সম্ভাবনা ০.০০০১৪ শতাংশ। তাঁদের কথায়, ‘‘আগ্নেয়গিরিটির সমস্ত লাভা গলিত অবস্থায় থাকলে এবং এর অবস্থান দু’টি প্লেটের সংযোগস্থলে হলে এর জেগে ওঠার সম্ভাবনা থাকত ১০০ শতাংশ। তখন প্রলয়ের মুখে পড়তে হত বিশ্বকে।’’

১৪ ১৯
Yellowstone super volcano of USA which may cause of mass extinction

উদ্যানে রয়েছে একাধিক উষ্ণ প্রস্রবণ। যার জল লাভা প্রকোষ্ঠের উপর দিয়ে বেরিয়ে ভূপৃষ্ঠের উপর দিয়ে দিব্যি বয়ে চলেছে। উষ্ণ প্রস্রবণগুলির তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কোনও কোনও জায়গায় তার চেয়েও বেশি। সবচেয়ে ভয়ের বিষয় হল, এগুলির জলে মিশে রয়েছে অ্যাসিড। যা এতটাই তীব্র যে, কোনও ক্ষেত্রে লোহাকেও গলিয়ে দিতে পারে।

১৫ ১৯
Yellowstone super volcano of USA which may cause of mass extinction

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, উদ্যানের নীচের প্রকোষ্ঠে গলিত লাভা থাকায় সেখান থেকে ক্রমাগত সালফার গ্যাস নিঃসরণ হচ্ছে। যা জলের সংস্পর্শে এসে বিক্রিয়া করে সালফিউরিক অ্যাসিড তৈরি করছে। ফলে এখানকার কোনও উষ্ণ প্রস্রবণে কেউ স্নান করতে পারেন না।

১৬ ১৯
Yellowstone super volcano of USA which may cause of mass extinction

এ ছাড়া উদ্যানটিতে রয়েছে একাধিক উষ্ণ জলের ফোয়ারা। যা মাঝেমধ্যেই মাটি ফেটে বেরিয়ে আসছে। এগুলির তাপমাত্রা উষ্ণ প্রস্রবণের চেয়েও বেশি। কিছু কিছু উষ্ণ জলের ফোয়ারার তাপমাত্রা ১৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে জানা গিয়েছে।

১৭ ১৯
Yellowstone super volcano of USA which may cause of mass extinction

উদ্যানটির মধ্যে থাকা উষ্ণ জলের ফোয়ারাগুলির মধ্যে ‘ওল্ড ফেথফুল’ সবচেয়ে জনপ্রিয়। প্রতি ৬০ থেকে ৬৪ মিনিট পর পর মাটি ফুঁড়ে এর জল ফোয়ারার মতো করে লাফিয়ে উঠে উদ্যানের মাটি ভিজিয়ে দেয়। তবে সম্প্রতি সেই সময়সীমা কিছুটা বেড়ে ৯৪ মিনিট হয়েছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।

১৮ ১৯
Yellowstone super volcano of USA which may cause of mass extinction

ইয়োলোস্টোনের আর একটি আকর্ষণীয় বিষয় হল এর বিচিত্র রঙিন ভূমি। যা নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা সেখানে ২৪০ কোটি বছরের পুরনো থার্মোফিলিক এবং অ্যাসিডোফিলিক প্রাণের সন্ধান পেয়েছেন। যা ওই তাপ এবং অ্যাসিড-সমৃদ্ধ পরিবেশে দিব্যি বেঁচে রয়েছে। পাশাপাশি, সেখানকার রঙিন ভূমি ও অনির্বচনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নেপথ্যেও সেগুলির ভূমিকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

১৯ ১৯
Yellowstone super volcano of USA which may cause of mass extinction

আমেরিকার গবেষকদের দাবি, ৭ কোটি ৬০ হাজার বছর আগে শেষ বার এটি জেগে উঠেছিল। প্রতি বছর আমেরিকার এই পার্কে গড়ে ৪০ লাখ পর্যটক আসেন। যা দেশটির অন্যান্য পর্যটনস্থলের চেয়ে অনেক বেশি।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE