এখন প্রশ্ন হল, সিটিসি আসলে কী? কোনও কর্মীর পিছনে তাঁর নিয়োগকারী সংস্থা বছরে যে টাকা ব্যয় করে, অর্থনীতির পরিভাষায় তাকেই বলা হয় কস্ট টু কোম্পানি। চাকরি দেওয়ার সময়ে সংশ্লিষ্ট কর্মীকে এই আর্থিক প্যাকেজের কথাই বলে থাকে নিয়োগকারী সংস্থা। নিয়ম অনুযায়ী, কখনওই সিটিসির পুরো অর্থ কোনও কর্মী বেতন বাবদ পেতে পারেন না। ‘ইন হ্যান্ড স্যালারি’ ও সিটিসির মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে।
সিটিসি থেকে বেশ কিছু টাকা কেটে নিয়ে ‘ইন হ্যান্ড স্যালারি’ তৈরি করে সংশ্লিষ্ট সংস্থা। সিটিসির মধ্যে থাকে একাধিক উপাদান। সেগুলি হল মূল বেতন (বেসিক পে), বাড়ি ভাড়ার ভাতা (হাউস রেন্ট অ্যালাউন্স বা এইচআরএ), চিকিৎসা বিমা এবং ভবিষ্যৎ তহবিল। এ ছাড়াও খাবার ভাউচার, ট্যাক্সি বা গাড়ির বিল, ভর্তুকি যুক্ত ঋণ এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা এর অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
গ্র্যাচুইটি হল বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের বেতনেরই একটা অংশ। একটি নির্দিষ্ট সময় কাজ করার পর কৃতজ্ঞতা হিসাবে ওই টাকা দিয়ে থাকে নিয়োগকারী সংস্থা। প্রাথমিক ভাবে অবসরের পর গ্র্যাচুইটির টাকা পেয়ে থাকেন সংশ্লিষ্ট কর্মী। আয়কর আইন অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি একটি প্রতিষ্ঠানে ন্যূনতম পাঁচ বছর চাকরি করলে, তিনি গ্র্যাচুইটি পাওয়ার যোগ্য হয়ে থাকেন।
সিটিসি থেকে আয়কর, পেশাগত কর এবং অন্যান্য ব্যবসায়িক কাটছাঁটের পর টাকার পরিমাণ যত দাঁড়াবে, তাঁকে বলে ‘গ্রস পে’। সিটিসির মধ্যে মহার্ঘ ভাতা (ডিএ), ছুটি ও ভ্রমণ ভাতা (লিভ ট্র্যাভেল অ্যালাউন্স বা এলটিসি), জ্বালানি ভাতা (ফুয়েল অ্যালাউন্স), ফোনের বিল, ইনসেনটিভ এবং বিশেষ ভাতা বা স্পেশ্যাল অ্যালাউন্স সংযুক্ত থাকতে পারে।
একটি উদাহরণের মাধ্যমে ব্যাপারটা বুঝে নেওয়া যাক। ধরা যাক, এক জন ব্যক্তির সিটিসি ছ’লক্ষ টাকা। অর্থাৎ, ওই কর্মীর জন্য বছরে ছ’লক্ষ টাকা খরচ করবে তাঁর নিয়োগকারী সংস্থা। এখন যদি তিনি ৪০ হাজার টাকা বোনাস পান, তা হলে ওই ব্যক্তির গ্রস বেতন দাঁড়াবে ৫ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। এ ক্ষেত্রে সিটিসি থেকে বোনাসের টাকা বাদ দিয়ে ‘গ্রস পে’ হিসাব করা হবে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে গ্রস বেতন থেকে বাদ যাবে পেশাদার কর এবং প্রভিডেন্ট ফান্ড তহবিলে জমা করা টাকা। ধরা যাক তার পরিমাণ বছরে যথাক্রমে ২,৪০০ টাকা ও ২০ হাজার ৫০০ টাকা। ইপিএফের নিয়ম হল, কর্মীর বেতনের যে পরিমাণ টাকা ওই তহবিলে জমা পড়বে, সম পরিমাণ অর্থ সংশ্লিষ্ট সংস্থাকেও জমা করতে হবে। অর্থাৎ, এ ক্ষেত্রে প্রভিডেন্ট ফান্ড বাবদ ৪১ হাজার টাকা বাদ পড়বে। পেশাদার কর মিলিয়ে মোট কাটছাঁটের অঙ্ক দাঁড়াবে ৪৩ হাজার ৪০০ টাকা।
এর পর প্রতি মাসের বেতন জানতে হলে এই টাকার অঙ্ককে ১২ দিয়ে ভাগ করতে হবে। তখন টাকার পরিমাণ কমে দাঁড়াবে ৪৩ হাজার ৫০। এই অর্থই প্রতি মাসে বেতন বাবদ সংশ্লিষ্ট কর্মী হাতে পাবেন। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হল, সিটিসি থেকে প্রতি মাসের বেতন জানতে প্রথমেই ‘গ্রস পে’ হিসাব করতে হবে। এর পর পেশাগত কর এবং প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা বাদ দিলে প্রতি মাসে হাত কত টাকা মিলবে, তা বুঝতে পারবেন সংশ্লিষ্ট কর্মী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy