প্রতীকী ছবি
পাঠকের প্রশ্ন: নিজের ব্যবসা রয়েছে। বয়স ৩৯। মাসে আয় প্রায় ৪০ হাজারের কাছাকাছি। পরিবারে স্ত্রী(৩৮) ও সন্তান(১০)।মাসে খরচ প্রায় ২৫ হাজার। সব মিলিয়ে সঞ্চয় প্রায় ৬৫ লক্ষ। জীবনবিমা রয়েছে ২৫ লক্ষের। পারপেচুয়াল ইন্টারেস্ট বন্ডে বিনিয়োগ করতে চাই। কতটা পরিমাণ ও কোথায় বিনিয়োগ করব?
উত্তর দিচ্ছেন আর্থিক উপদেষ্টা:
পারপেচুয়াল বন্ড বা স্থায়ী ঋণপত্র বলতে সাধারণত বোঝায় সেই সব ঋণপত্র যা ঋণগ্রহণকারীরা স্থায়ী ঋণ হিসাবে দেখে। বিনিময়ে ক্রেতাদের নিয়মিত সুদ দিয়ে থাকে। তাই লগ্নিকারীদের কাছে এটি স্থায়ী নিয়মিত আয়ের রাস্তা হিসাবে বিবেচিত হয়। এই ধরনের বন্ড প্রায়শই ইক্যুইটি হিসাবেও বিবেচিত হয়। এর চরিত্রের জন্য।পারপেচুয়াল ম্যাচুরিটি বন্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার কোনও তারিখ থাকে না। অন্যান্য বেশিরভাগ বন্ডের মতো সুদ পরিশোধের জন্য বিনিয়োগকারীদের কাছে কুপন ইস্যু করে। যা আসলে ঋণের উপর সুদ। যাইহোক, এই বন্ডে কোনও রিডেম্পশন, রিপেমেন্টের তারিখ নেই। যে সব বন্ড নির্দিষ্ট সময়ের মেয়াদে রিডিম করতে পারবেন সেগুলি ‘কলেবল পারপেচুয়াল’ বন্ড নামে পরিচিত।
কোথায় কিনবেন পারপেচুয়াল বন্ড?
সাধারণত ব্যাঙ্ক বা সরকারি সংস্থা এই বন্ডগুলি বাজারে ছাড়ে। বিনিয়োগকারীরা বন্ড কেনেন যাতে নিশ্চিত আয়ের রাস্তা খোলা থাকে যতক্ষন না বন্ডগুলি রিডিম করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তিনি। যে সংস্থা এই ঋণপত্র বাজারে ছাড়ে তার মূল ঋণের টাকা শোধ করার দায় থাকে না। তার দায় ওই সুদের টাকা মেটানোতেই সীমাবদ্ধ।
পারপেচুয়াল বন্ডের সুবিধা ও অসুবিধা
পারপেচুয়াল বন্ডে বিনিয়োগের অর্থ নিয়মিত নির্দিষ্ট হারে উপার্জন। যেহেতু এই বন্ডের কোনও মেয়াদ পূর্তির তারিখ নেই, সুতরাং দীর্ঘ সময় জুড়ে আয় করা যায়। বাজারের অন্যান্য বিনিয়োগের রাস্তার তুলনায় এই বন্ডের বিনিয়োগে রিটার্ন বেশ ভাল। চলুন পারপেচুয়াল বন্ডের কিছু সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনা করা যাক।
পারপেচুয়াল বন্ডের সুবিধা
পারপেচুয়াল বন্ডের মাধ্যমে সুদ হিসাবে বিনিয়োগে রিটার্ন দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারত বেশ উল্লেখযোগ্য। পারপেচুয়াল বন্ডের ক্ষেত্রে অনির্দিষ্টকাল ধরে কুপন পেমেন্ট পেতে পারেন বিনিয়োগকারী। ফিক্সড ইনকামে যাঁরা বিনিয়োগ করেন তাঁদের কাছে পারপেচুয়াল বন্ড মূল আয়ের উৎস। যদিও সুদের হার ও ক্রেডিট রিস্কের ক্ষেত্রে পারপেচুয়াল বন্ড ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু সামগ্রিক ঝুঁকির কথা যদি ধরি তা হলে ইক্যুইটির ঝুঁকির তুলনায়এর ঝুঁকি বেশ কম। সংস্থা দেউলিয়া হয়ে গেলে, এই জাতীয় ঋণপত্রের বিনিয়োগকারীর টাকা ফেরত পাওয়ার ব্যাপারে অগ্রাধিকার পায়।
পারপেচুয়াল বন্ডের অসুবিধা
এটা হতেই পারে যে বাজারে অনেক বিনিয়োগের রাস্তা এই জাতীয় ঋণপত্রের থেকে অনেক বেশি লাভজনক। তাই আপনি যদি এই জাতীয় ঋণপত্রে বিনিয়োগ করেন তা হলে হয়ত আরও বেশি লাভজনক লগ্নির রাস্তায় হাঁটার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলেন। সেটা কিন্তু সঞ্চয়ের তত্ত্বে একটা খরচ। আরও লাভজনক বিনিয়োগের সুযোগ হারানোর খরচ। এই বন্ডে আরও একটি ঝুঁকি রয়েছে। একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর ইস্যুকারী বন্ডটি রিডিম করতেপারবেন আর পারপেচুয়াল বন্ডে সাধারণত মুদ্রাস্ফীতির ঝুঁকি থাকে। অর্থাৎ যে সুদের প্রতিশ্রুতি নিয়ে আপনি টাকা ঢাললেন, মুদ্রাস্ফীতির কারণে সেই সুদের প্রকৃত হার কমে গেল। তাই অনেকেই মেয়াদী ঋণপত্রে বিনিয়োগ করা পছন্দ করেন যাতে মুদ্রাস্ফীতির কারণে প্রকৃত আয় হারাতে না হয়।
পারপেচুয়াল বন্ডের কর
বিনিয়োগকারীর মোট আয়ের সঙ্গে পারপেচুয়াল বন্ডের বার্ষিক কুপন যোগ হয় এবং ব্যক্তি যে আয়কর বন্ধনীর আওতায় পড়েন সেই অনুযায়ী কর আরোপ করা হয়। যাই হোক যদি সেকেন্ডারি মার্কেটে বন্ডটি বিক্রিকরা হয় এবং বিনিয়োগকারী দীর্ঘমেয়াদী মূলধন লাভ করেন (এক বছর হোল্ডিং পিরিয়ডের পরে), তা হলে দীর্ঘমেয়াদী মূলধন করের সুযোগ পাওয়া যায় না। আয়ের উপর ১০ শতাংশ হারে কর দিতে হয়। তাই স্থায়ী ঋণপত্র আপনার সঞ্চয় থেকে আয়ের একমাত্র সূত্র না হয়ে, একাধিক বিনিয়োগের একটি হয়ে থাকাই ভাল।
প্রতিবেদক সঞ্চয় উপদেষ্টা। বক্তব্য নিজস্ব।
বিশেষজ্ঞদের কাছে সমাধান খুঁজতে সঞ্চয় নিয়ে আমাদের প্রশ্ন পাঠান — takatalk2023@abpdigital.in এই ঠিকানায় বা হোয়াটস অ্যাপ করুন এই নম্বরে — ৮৫৮৩৮৫৮৫৫২আপনার আয়, খরচ এবং সঞ্চয় জানাতে ভুলবেন না। পরিচয় গোপন রাখতে চাইলে অবশ্যই জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy