প্রতীকী ছবি
পাঠকের প্রশ্ন: অবসরপ্রাপ্ত, বয়স ৬২। হাতে রয়েছে প্রায় ৮০ লাখ টাকা। দুই নাতি নাতনির জন্য বড় অঙ্কেরসঞ্চয় করে যেতে চাই। এখন তাদের বয়স ৫ ও ৭ বছর। ফলে একাধিক এবং ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগ করতে চাই। ১৮ বছরের মেয়াদ হলে ভাল। কোন খাতে কত বিনিয়োগ করব?
উত্তর দিচ্ছেন আর্থিক উপদেষ্টা:
ধারাবাহিক বিনিয়োগ করতে গেলে প্রাথমিক করণীয়ই হল অবসরকালীন টাকা এমন ভাবে লগ্নি করা, যাতে আয় হয় বেশি। তাই আপনার আয় এক এক করে নীচের প্রকল্পগুলিতে লগ্নি করুন।
১। সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম (এসসিএসএস) ভারতে অবসরপ্রাপ্তরা এমন প্রকল্পের খোঁজ করছেন, যা তাঁদের জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও নিয়মিত আয়ের পথ খুলে দেয়। এটা স্বাভাবিক। যে সব প্রকল্পে সরকারি গ্যারান্টি আছে, সেই সব প্রকল্পেই মানুষের ঝোঁক বেশি। এসসিএসএস অর্থাৎ সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম সে রকমই একটি বিনিয়োগ। ২০০৪ সালের আগস্ট থেকে ভারত সরকার প্রকল্প চালু করেছে। এসসিএসএস কেন্দ্রীয় সরকার সমর্থিত সঞ্চয় প্রকল্প। ঝুঁকিবিহীন ঋণের কথা ভাবলে এটিই উপযুক্ত বিকল্প। ৬০ বছরের উর্ধ্বে যাঁরা, তাঁরা এই স্কিমের আওতায় আসেন। বিনিয়োগের পুরো মেয়াদ জুড়ে নিশ্চিত আয়ের নিরাপত্তা দেয় এই স্কিম। ২৩-২৪ সাল থেকে বাজেট অনুযায়ী সর্বোচ্চ সীমা রাখা হয়েছে ৩০ লাখ। ষাটের আগেও অবসর নিলে এই প্রকল্পের সুযোগ নেওয়া যায় শর্ত সাপেক্ষে। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করা সম্ভব।
২। প্রধানমন্ত্রী বয়ঃবন্দনা যোজনা (পিএমভিভিওয়াই) সমস্ত প্রবীণ নাগরিকদের জন্য ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী বয়ঃবন্দনা যোজনা বা পিএমভিভিওয়াই চালু হয়। এলআইসি বা লাইফ ইনস্যুরেন্স কর্পোরেশন এই যোজনা পরিচালনা করে। এই যোজনা একটি অবসর ও পেনশন প্রকল্প। এই তাৎক্ষণিক বার্ষিক পরিকল্পনায় এক মুঠো টাকা বিনিয়োগ করলে এক জন বিনিয়োগকারী হিসাবে আপনাকে তা নিয়মিত একটি নির্দিষ্ট টাকার অঙ্ক প্রদান করে। এর সর্বোচ্চ সীমা ১৫ লাখ। মাসিক, অর্ধবার্ষিক, ত্রৈমাসিক ও বার্ষিক সুদ পাওয়া যায়।
৩। পোস্ট অফিস মান্থলি ইনকাম স্কিম (পিওএমআইএস)পোস্ট অফিস মাসিক আয় স্কিম অর্থ মন্ত্রকের আওতায়। প্রবীণ নাগরিকদের জন্য এই বিনিয়োগ বিকল্পে নির্দিষ্ট মাসিক সুদ মেলে। এক দিকে যেমন কম ঝুঁকিপূর্ণ মাসিক আয়ের স্কিম, পাশাপাশি যথেষ্ট মূলধন সুরক্ষা প্রদান করে। এই দিকগুলি অবসরের প্রাথমিক বছরগুলিকে রক্ষা করে। এই প্রকল্পের সময়কাল ৫ বছর। জয়েন্ট হোল্ডারদের জন্য সীমা ৯ লক্ষ। তবে এই বাজেটে তা ১৫ লক্ষ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
৪। সিনিয়র সিটিজেন ফিক্সড ডিপোজিট কোভিড-১৯ অতিমারি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আর্থিক নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে। তবে প্রবীণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে অর্থাৎ যাঁদের উপার্জনের মেয়াদ আর বেশি বছর নেই এবং সুদের আয়ের উপর নির্ভরতা বেশি, তাঁদের কাছে এই বিষয়টি ভয়াবহ হয়ে দাঁড়িয়েছে।অতিমারির আর্থিক প্রভাবগুলি সরাসরি সুদের হারকে প্রভাবিত করে। সিনিয়র সিটিজেন ফিক্সড ডিপোজিট স্কিম ৬০ বছর অথবা তার বেশি বয়সী বিনিয়োগকারীদের নিয়মিত আয় প্রদান করে।
৫। মিউচুয়াল ফান্ডমিউচুয়াল ফান্ড একাধিক বিনিয়োগকারীদের থেকে অর্থ সংগ্রহ করে এবং ইক্যুইটি ও ঋণের মতো বিভিন্ন সম্পদ শ্রেণিতে বিনিয়োগ করে। ফান্ড ম্যানেজার নিশ্চিত করে, বিনিয়োগের উদ্দেশ্য যাতে পূরণ হয়। যে রকমটা আগে বলা হল, বেশির ভাগ স্থির-আয় বিনিয়োগ উপকরণ শুধুমাত্র মুদ্রাস্ফীতি স্তরের রিটার্ন দেয়। অন্য দিকে মিউচুয়াল ফান্ডের রিটার্নগুলি উল্লেখযোগ্য ভাবে মুদ্রাস্ফীতির মোকাবিলা করতে পারে।
অবসরের পর ঝুঁকি নেওয়ার ইচ্ছে কমে যায় এবং মূলধনের নিরাপত্তা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ইক্যুইটি ভিত্তিক মিউচুয়াল ফান্ডে প্রচুর বিনিয়োগ আপনাকে দ্বিধায় ফেলতে পারে, যা আপনার জন্য স্বস্তির না-ও হতে পারে, বিশেষত স্বল্প মেয়াদে। অতএব, হয় আপনি ঋণপত্র বা ডেট মিউচুয়াল ফান্ডে অথবা হাইব্রিড মিউচুয়াল ফান্ডে অল্প ইক্যুইটি অথবা ইক্যুইটি-র ঝুঁকি এড়িয়ে বিনিয়োগ করতে পারেন। আপনার ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা এবং আর্থিক লক্ষ্যের উপর ভিত্তি করে বাছাই করুন।
এ বার এই আয় থেকে আপনার দুই নাতি-নাতনির জন্য ডাইভারসিফায়েড ইক্যুইটি ফান্ডে এসআইপি চালু করুন। পাশাপাশি মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে চাইল্ড প্ল্যানে অর্থ বরাদ্দ করতে পারেন।
প্রতিবেদক সঞ্চয় উপদেষ্টা। বক্তব্য নিজস্ব।
বিশেষজ্ঞদের কাছে সমাধান খুঁজতে সঞ্চয় নিয়ে আমাদের প্রশ্ন পাঠান — takatalk2023@abpdigital.in এই ঠিকানায় বা হোয়াটস অ্যাপ করুন এই নম্বরে — ৮৫৮৩৮৫৮৫৫২আপনার আয়, খরচ এবং সঞ্চয় জানাতে ভুলবেন না। পরিচয় গোপন রাখতে চাইলে অবশ্যই জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy