Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Presents

কী ভাবে নজর রাখবেন বিনিয়োগের উপর, জানুন তার কৌশল

ভাবুন তো বাজারে বিভিন্ন সংস্থা যদি স্কিমগুলোকে নিজের মতো করে তৈরি করত তাহলে কী হত?

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২১ ২১:৫৯
Share: Save:

আপনার বিনিয়োগ বাজারে কেমন করছে তা কিন্তু নজরে রাখতে হবে নিয়মিত। আর তা করতে গেলে প্রথমেই আপনার বিনিয়োগকে ভাগ করতে হবে তিন ভাবে:

  • ফান্ডের ধরন
  • শ্রেণি এবং
  • গঠন

এই ভাগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি-র করা

ভাবুন তো বাজারে বিভিন্ন সংস্থা যদি স্কিমগুলোকে নিজের মতো করে তৈরি করত তাহলে কী হত? পটলের সঙ্গে কি আলুর তুলনা করা যায়? তাই সেবি বলে দিয়েছে কোন ধরনের স্কিমে কী থাকবে। এটা করার কারণ একটাই। দুটি সংস্থার স্কিম থেকে যাতে লগ্নিকারী বেছে নিতে পারেন তাঁর নিজের পছন্দমতো একটি। সেবি-র এই নিয়ম মেনে তাই ইক্যুইটি ফান্ডের জন্য ১০টি, ডেট ফান্ডের জন্য ১৬টি এবং হাইব্রিড ফান্ডের ৬টি শ্রেণি নির্ধারিত হয়েছে। মিউচুয়াল ফান্ড সংস্থাগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে তাদের বিভিন্ন স্কিম এই শ্রেনি অনুযায়ীই ভাগ করে দিতে হবে। একটি শ্রেণিতে একটির বেশি ফান্ড বা স্কিম রাখা যাবে না। এ ছাড়াও সেবি-নির্ধারিত নিয়মে লার্জ ক্যাপ, মিড ক্যাপ এবং স্মল ক্যাপ স্টক বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এর আগে বিভিন্ন সংস্থা নিজস্ব নিয়মে নিজেদের মতো লগ্নি সাজিয়ে স্কিম তৈরি করত। তাতে তাদের মধ্যে তুলনা করা কঠিন হয়ে যেত।

এর ফলে এক দিকে যেমন নতুন লগ্নিকারিদের পক্ষে ফান্ড নির্বাচন সহজ হয়ে গিয়েছে, তেমনই পুরনো বিনিয়োগকারীদের জন্যও তাদের বর্তমান মিউচুয়াল ফান্ড পোর্টফোলিও পুনর্মূল্যায়ন জরুরি হয়ে গিয়েছে। কারণ, নতুন নিয়মে বেশ কিছু ফান্ডের শ্রেণি এবং গঠন পুরোপুরি বদলে গিয়েছে, যা ভবিষ্যতের রিটার্নেও প্রভাব ফেলতেই পারে। তাই নতুন নিয়ম অনুযায়ী ফান্ড কোন শ্রেণিতে পড়ছে, তা নিশ্চিত করে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, পোর্টফোলিওতে যেন একই শ্রেণির একাধিক ফান্ড না থাকে।

যাচাই করুন তহবিল লক্ষ্য মেপে

আপনার সম্পদ থেকে আপনি কোথায় কতটা টাকা রাখবেন, তা সাধারণত স্থির করা হয় দীর্ঘমেয়াদী পোর্টফোলিও, অর্থাৎ সাত থেকে দশ বছরের বিনিয়োগের কথা মাথায় রেখে। তবে স্বল্প বা মধ্যমেয়াদী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নিজের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্যর কথা ভেবেই মিউচুয়াল ফান্ড পোর্টফোলিও বাছাই করা উচিত।

ধরা যাক, তিন বছর পরে আপনাকে মেয়ের কলেজের ফিজ দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে যতই লাভজনক মনে হোক, প্রয়োজনীয় টাকা ইক্যুইটি ফান্ডে রাখবেন না কোনও মতেই। একই ভাবে অবসরের পরে আপনার বিনিয়োগের উদ্দেশ্য হল, মাসিক প্রয়োজনের টাকাটা উপার্জন করে নেওয়া। দীর্ঘমেয়াদী লাভই শুধু এ ক্ষেত্রে আপনার লক্ষ্য নয়। তাই বলছি লক্ষ্য মিলিয়ে স্কিম বাছুন।

তাই নিজের ফান্ড পোর্টফোলিও আরও এক বার খতিয়ে দেখে নিন। কম সময়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকলে পুনর্মূল্যায়ন করে উপযুক্ত ফান্ড বেছে নেওয়া জরুরি।

মাথায় রাখুন রিটার্ন কিন্তু অনিশ্চিত, ভাবুন অন্যভাবে

লগ্নি থেকে কত টাকা ফেরত পাবেন, সে বিষয়টা এড়িয়ে যাওয়ার কোনও উপায় নেই। তবে এ নিয়ে একেবারে শেষে মাথা ঘামানোই ভাল এবং অবশ্যই সঠিক পদ্ধতিতে। গত বছরের রিটার্ন নিয়ে ভাবনার তেমন কিছু নেই। বার্ষিক রিটার্নের হিসেব থেকেও ছবিটা স্পষ্ট না হতেই পারে। কারণ, কয়েক বছর ভাল রিটার্ন এলেও বেশির ভাগ বছরেই হয়তো পারফর্ম্যান্স ভাল ছিল না।

এ সবের চেয়ে অনেক বেশি কাজে লাগবে বিভিন্ন সময়ে ফান্ডের রিটার্নের ওঠাপড়া খতিয়ে দেখা এবং তার তুল্যমূল্য বিচার। ওই নির্দিষ্ট ফান্ডে কত দিনের জন্য টাকা রাখতে চান, তার ভিত্তিতে এই সময়কাল বেছে নিতে পারেন। তা তিন বছর হতে পারে, আবার হতে পারে পাঁচ কিংবা সাত বছরও। এই সময়কালের রোলিং রিটার্নের হিসেব থেকে ফান্ডের কার্যকারিতা বা ধারাবাহিকতা সম্পর্কে তুলনামূলক ভাবে স্পষ্ট একটা ধারণা পাওয়া সম্ভব।

এড়িয়ে চলুন খরচ বেশি এমন ফান্ড

যে ফান্ডে তুলনামূলক ভাবে খরচ কম ঝুঁকুন তার দিকে। অবশ্যই অন্য সব কিছু দেখে। মাথায় রাখবেন তুলনামুলক ভাবে যে ফান্ড পরিচালনার খরচ বেশি, সেই ফান্ড কিন্তু আপনার রিটার্নে ভাগ বসিয়ে আপনার রিটার্ন কমিয়ে দিচ্ছে। এই হিসার একদম যে ভাবে ব্যবসায় লাভ-ক্ষতির হিসাব হয়, সে ভাবেই ভাবতে হবে।

পুনর্মূল্যায়নের ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় নিশ্চিত ভাবে মাথায় রাখা জরুরি-

১। পুনর্মূল্যায়ন মানেই বদল আনা বাধ্যতামূলক নয়।

২। হয় নির্দিষ্ট সময়কাল অথবা বড়সড় আর্থিক পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে পুনর্মূল্যায়ন করুন।

৩। অল্পদিন অন্তর পুনর্মূল্যায়ন করে নিয়মিত ফান্ড বদলাবেন না। মনে রাখুন, স্টক বা ফান্ডে ওঠা পড়া থাকবেই। আজ যদি পড়ে যায় তো কাল তা বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উঠে যেতে পারে। তাই নিয়মিত দেখুন, কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে। বছরে দু’বার, অন্যথায় বছরে অন্তত এক বার বিনিয়োগ পুনর্মূল্যায়ন করাই যথেষ্ট বলে মনে করা হয়।

৪। নিজের পরিকল্পনা এবং বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত বজায় রাখুন। বাজারের পরিস্থিতি দেখে যখন-তখন তা বদলে ফেলবেন না।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy