প্রতীকী ছবি।
মিউচুয়াল ফান্ড যাঁরা পরিচালনা করেন তাঁরা সবাই পেশাদার। কিন্তু সবার দক্ষতা তো এক নয়। বাজারে একই রকম স্কিম অনেক সংস্থার আছে। তাই কার স্কিমে বিনিয়োগ করবেন তা দেখতে সেই স্কিমের ম্যানেজারদের দক্ষতা যাচিয়ে নেওয়াই ভাল। এটাও কিন্তু আপনি দেখে নিতে পারবেন ওয়েব সাইটে। একজন ম্যানেজার নানান স্কিম পরিচালনা করেন। প্রতিটি স্কিম কে পরিচালনা করছেন তা কিন্তু লেখা থাকে।
কী ভাবে যাচাই করবেন
এটা যাচাই করার একটাই উপায়। সেই ম্যানেজার যে স্কিম পরিচালনা করছেন সেইসব স্কিম বাজারে কেমন করছে? কী রকম রিটার্ন পাওয়া যাচ্ছে সেই সব স্কিমে? এটা দেখতে নজর রাখুন সেইসব স্কিমের আলফার উপর। যদি দেখেন আলফা মোটামুটি স্থির থাকছে বিভিন্ন ত্রৈমাসিকে, তাহলে জানবেন তিনি দক্ষ। সঙ্গে মিলিয়ে নিন বিভিন্ন ত্রৈমাসিকে তাঁর পরিচালিত স্কিমের তুলনামূলক রিটার্ন।
মাথায় রাখবেন ফান্ড ম্যানেজারের বদল হতেই পারে। তাতে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। নতুন যিনি এলেন, তাঁকেও একই ভাবে যাচাই করার উপায় তাঁর অতীত থেকেই খুঁজে পাবেন একই ভাবে।
যদি দেখেন ফান্ড ম্যানেজার বদলের পরে ফান্ডের কার্যকারিতায় বড়সড় বদল এসেছে এবং তা আপনার ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতার সঙ্গে মানানসই হচ্ছে না, তখনই কিন্তু স্কিম থেকে বেরিয়ে আসার কথা ভাবতে পারেন।
বিনিয়োগের উদ্দেশ্য
ফান্ড নির্বাচনের সময়ে মাথায় রাখুন আপনার ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা কতটা এবং কী উদ্দেশে ফান্ড কিনতে চাইছেন। ২০ বছর বাদে মেয়ের বিয়েতে খরচের কথা ভেবে লিক্যুইড ফান্ড কিনে ফেলবেন না। বরং এমন দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যের জন্য ইক্যুইটি ফান্ড বেছে নেওয়া ভাল। মিডিয়াম টার্মে নেগেটিভ রিটার্ন দেখে ভয় পেলে অবশ্য ইকুইটি ফান্ড কিনবেন না। মাথায় রাখবেন সঞ্চয়ের উদ্দেশ্য।
বাছুন মাঝারি বহরের ফান্ড
স্কিম অ্যাসেট সাইজ। এই সূচকটি অবশ্য ডেট বা ইক্যুইটি ফান্ডের ক্ষেত্রে আলাদা। ইক্যুইটি-র জন্য উপযুক্ত সম্পদের পরিমাণ বা বহর হতে হয় কয়েকশো কোটি টাকার। ডেট ফান্ডের ক্ষেত্রে তার পরিমাণ হতে হবে কয়েক হাজার কোটি টাকা। এর কারণ হল লগ্নিকারী পিছু বিনিয়োগের পরিমাণ ডেট ফান্ডের ক্ষেত্রে বেশি। মিউচুয়াল ফান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালনাধীন সম্পদের ৯০ শতাংশই লগ্নি করা হয় ডেট ফান্ডে। অতএব আপনার বাছাই করা স্কিমের সম্পদের এইউএম বড়সড় অঙ্কের হওয়া জরুরি।
কম এইউএম-এর যে কোনও স্কিমেই ঝুঁকির পরিমাণ অনেক বেশি। কারণ, বিনিয়োগকারী কারা এবং তাঁরা এই স্কিমে কত টাকা লগ্নি করেছেন, তা আপনার জানা থাকে না। এবার দেখা গেল কম বহরের একটা স্কিমে একটা বড় অংশের লগ্নি করেছেন একজন বিনিয়োগকারী। বাকি একটা ছোট অংশে কম টাকার লগ্নি করেছেন অনেকেই। এ বার সেই বড় বিনিয়োগকারী তাঁর টাকা তুলে নিলেন। ব্যস! তহবিল গোঁত্তা খেয়ে পড়ল। কারণ ম্যানেজার যতই দক্ষ হোন না কেন, এখন তাঁর হাতে যে তবহিল আছে তা তিনি ঝুঁকির ভিত্তিতে বাজারে আর ছড়িয়ে বিনিয়োগ করে আপনার বিনিয়োগের ঝুঁকি কমাতে পারবেন না।
আবার ফান্ড যদি খুব বড় হয় তাহলেও বিপদ। কারণ, সেই ফান্ড বাজারে এতটাই ছড়িয়ে থাকে যে, বাজারের ওঠা-পড়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কেনা-বেচা করতে পারে না। উদাহরণ হিসেবে ভাবুন একটা খুব বড় ফান্ড, তার কিছু টাকা ‘ক’ শেয়ারে লাগানো আছে। কিন্তু ‘ক’ খুব ভাল চলছে না।এ বার যদি এই ফান্ডটি সেখান থেকে টাকা তোলে তাহলে শুধু ‘ক’ আরও মুখ থুবড়ে পড়বে না, অন্য শেয়ারেও তার প্রভাব পড়তে পারে। আর তাতে সূচকও টলে যেতে পারে। এটা বোঝার জন্য বলা। মূল খেলাটা আরও জটিল। কিন্তু মোদ্দা কথাটা এটাই। তাই বিনিয়োগ করুন মাঝারি বহরের ফান্ডে।
এতক্ষণে হয়তো খেয়াল করেছেন, নির্ধারকগুলি নানা ভাবে একে অন্যের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। এক জন ভাল ফান্ড ম্যানেজার তাই আপনা থেকেই ভাল পারফর্ম করতে সক্ষম হবেন। এর ফলে কোয়ার্টাইল রাঙ্কিং বাড়ার পাশাপাশি ‘আলফা’র পরিমাণও বাড়বে।
বেশি অঙ্কের সম্পদ স্কিমের টোটাল এক্সপেন্স রেশিও কমায়। তবু কথায় বলে, কালকের সেরা পুঁজি আজ বেছে নেওয়ার কোনও বৈজ্ঞানিক উপায় নেই। তাই আজকের বাছাই করা ফান্ড প্রতি কোয়ার্টারে কিংবা ছ’মাস অন্তর নতুন করে মূল্যায়ন করা বাঞ্ছনীয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy