কবিতা-ঘন্টিকী-র কয়েকজন
ঘণ্টায় চার আনা৷ চব্বিশ ঘণ্টায় ছ’টাকা৷ তিনশো পঁয়ষট্টি দিনে দু’হাজার একশ নব্বই টাকা৷ একশো নব্বই টাকা ছাড়, একুনে বছরে দু’হাজার টাকা৷ না, কাক্বেশ্বর কুচকুচের হিসেব নয়৷ একটি কবিতা-পত্রিকার গ্রাহক চাঁদার হিসেব৷
পঞ্চাশ বছর আগে এই হিসেব কষেই প্রকাশিত হয়েছিল ‘কবিতা-ঘন্টিকী’, প্রতি ঘণ্টার কবিতা-পত্রিকা৷ বাংলা কবিতায় তো বটেই, ভূ-ভারতেই এমন উদ্যোগ সেই প্রথম৷ ২৩ বৈশাখ ১৩৭৩, ৭ মে ১৯৬৬ সকাল দশটায় প্রকাশিত হল ‘কবিতা-ঘন্টিকী’, প্রতি ঘণ্টার কাব্যপত্র৷
প্রথম সংখ্যাতেই ছিল সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতা, ‘অধৈর্য’৷ সুনীল তখন বেশ রাগী সুনীল, সেই কবিতায় লিখেছেন, ‘আমি সেই ফুল নাম্নী মেয়েদের পাতা ছিঁড়ি দাঁতে৷/ এবার তোমার মুখ আনো, আমি ঘ্রাণ নেবো একান্ত বিরলে৷’
কবিতা ছিল, কবি ছিলেন না৷ সম্পাদকমণ্ডলীতে নাম ছিল না সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের৷
প্রথম সংখ্যায় ছিল চারটি কবিতা৷ দুটি রবীন্দ্রনাথ ও ভারতচন্দ্র রায়ের৷ বাকি দুটি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ও সমরেন্দ্র সেনগুপ্তের৷
সুনীল ছিলেন, কিন্তু আত্মপ্রকাশ করেননি৷ ‘সেই মাতামাতির দিনগুলি’ নামে একটি লেখায় স্বীকার করে গিয়েছেন গোপনে থাকার কথা, ‘‘বিমলের (রায়চৌধুরী) দৈনিক কবিতার কার্যালয় ছিল একটি প্রেসে, আর কবিতা-ঘন্টিকী-র কার্যালয় সুশীল রায়ের কাঁকুলিয়ার বাড়িতে৷ কবিদের মধ্যে প্রায় দুটি দল ভাগ হয়ে গিয়েছিল৷ দৈনিক কবিতা-র হয়ে খাটাখাটনি করেছে শক্তি চট্টোপাধ্যায় এবং তারাপদ রায় প্রমুখ৷ আর কবিতা-ঘন্টিকীর সম্পাদকমণ্ডলীতে ছিলেন সুশীল রায় ছাড়াও সমরেন্দ্র সেনগুপ্ত, শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়, আনন্দ বাগচী, প্রণবকুমার মুখোপাধ্যায় ও শান্তনু দাস৷ আমি দু-দলেই ছিলাম, কিন্তু কোনও দলেই সম্পাদকমণ্ডলীতে নাম দিতে রাজি হইনি৷ কারণ, আমি তখন কৃত্তিবাস পত্রিকার সম্পাদক, আমার পক্ষে আর অন্য কোনও কবিতা পত্রিকার সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত থাকা শোভনীয় নয়৷’’
সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য খাতায়-কলমে পাঁচ জন, আনন্দ বাগচী, প্রণবকুমার মুখোপাধ্যায়, শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়, সমরেন্দ্র সেনগুপ্ত, শান্তনু দাস ও সুশীল রায়৷
শেষের জনের মাথাতেই পোকাটা প্রথম নড়েছিল৷ সম্পাদকদের এক জন, প্রণবকুমার মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘মুনিদের মতিভ্রম তো ঋষিবাক্য৷ ... ঘরোয়া আড্ডা, বাইরে সফর— সর্বত্র৷ অদ্ভুত সব পরিকল্পনাও খেলত সুশীলদার মগজে৷ যেমন, একটা সময় প্রতি পূর্ণিমাতে আমাদের কবিতাপাঠের আসর বসত পূর্ণচাঁদের মায়ায় আচ্ছন্ন লেক-প্রাঙ্গণে৷ তেমনই এক আড্ডায় সুশীলদা আমাদের সামনে ছুড়ে দিলেন বিচিত্র এক পরিকল্পনা, কবিতা-ঘন্টিকী প্রকাশের প্রস্তাব৷ সে-আড্ডা কলকাতায় না শান্তিনিকেতনে ভুবনডাঙার মাঠে, তা অবশ্য আমার মনে পড়ছে না৷’’
মনে অবশ্য পড়েছিল আর এক সম্পাদক কবি সমরেন্দ্র সেনগুপ্তের৷ মৃত্যুর কিছু কাল আগে একটি লেখায় স্মৃতিচারণ করে গিয়েছিলেন তিনি, ‘‘একদিন দোলপূর্ণিমার রাত্রে শান্তিনিকেতনে ভুবনডাঙার মাঠে সুশীলদা আমাদের বললেন আগামী কবিপক্ষে একটা মজার কবিতার কাগজ বের করলে কেমন হয়! সুশীলদার পরিকল্পনা শুনে মনে হল মজার না বলে চাঞ্চল্যকর কবিতার কাগজ বলাই সঙ্গত৷’’
আর ঘন্টিকীরই একটি সংখ্যায় পাগলামির ইতিহাসটা খোলসা করেছিলেন আনন্দ বাগচী, ‘‘ভুবনডাঙার মাঠে চাঁদের আলোয় বসে আমরা কয়েকজন হুল্লোড় করছি— দোলের দিন—এমন সময়ে প্রায় অপ্রাসঙ্গিক ভাবে সুশীল রায় প্রস্তাব করলেন, ঘণ্টায় ঘণ্টায় কবিতার কাগজ বের করলে কেমন হয়? বেশ মজা হয়, আমরা ভাবলাম, কিন্তু তার বেশি গুরুত্ব দেওয়া হল না তখন৷ আসলে, ভাবনাটা এতই উদ্ভট যে এ নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামানো সম্ভব ছিল না৷’’
কিন্তু সুশীল রায় নাছোড়বান্দা৷ নিজে একটা কবিতার পত্রিকা চালাতেন৷ নাম ধ্রুপদী৷ তারই এক সম্পাদকীয় পৃষ্ঠায় পরিকল্পিত পত্রিকাটার নামও দিয়ে দিলেন, ‘কবিতা-ঘন্টিকী’৷ ব্যাপারটা খানিক জেগে উঠল আবার৷
তার পরে এক দিন, আনন্দ বাগচী লিখেছেন, ‘‘আড্ডা বসেছে কাঁকুলিয়া রোডে সুশীল রায়ের বাসায়, কয়েকজন একদা-তরুণ এবং নিত্য-দায়িত্ববোধহীন কবি উপস্থিত, প্রচুর জলযোগ ধ্বংস করা হয়েছে ইতিমধ্যে; সুশীলবাবু বললেন, যদি তোমাদের ঘন্টিকী প্রকাশ করতেই হয়, তা হলে কবিপক্ষই প্রকৃষ্ট সময়, আর মাসখানেক আছে বড়জোর৷ তাই তো, সকলে সচকিত হয়ে উঠল, একটু ভেবে বা না-ভেবে বলল, যা আছে কপালে— কাজ শুরু করে দেওয়া যাক; পরের রবিবার, ১৭ই এপ্রিল, সকাল থেকে ওঁর বাসায় কাজ হবে স্থির হল৷’’
সে কাজ রীতিমতো চাঞ্চল্যকর৷ রবিবারের আড্ডা তখন নিছক আড্ডা নয়, রীতিমতো কবিতার আঁতুড়ঘর৷ ঘণ্টিকীর অন্তত কয়েক সংখ্যার লেখা তৈরি করে ফেলতে হবে৷
সে বড় সুখের সময় নয়৷ আনন্দ বাগচী লিখেছেন, ‘‘কেউ উশখুশ করছে, কেউ যেন স্বস্তি পাচ্ছে না৷ সুনীল (গঙ্গোপাধ্যায়) একটা বালিশ বুকে চেপে খাটের উপর মুখ গুঁজে শুলো; সমরেন্দ্র সুশীল রায়ের লেখার টেবিলটি দখল করে বসল ঘাড় কাৎ করে; শরৎ এঘর-ওঘর করতে লাগল হাতে কাগজ-কলম নিয়ে; শংকর বাড়ি থেকে টেলিফোনে আগের রাত্রে লেখা দু-লাইন আনিয়ে নিয়েও চেয়ে রইল দেয়ালের দিকে; প্রণব কলম কামড়াতে কামড়াতে মুখ দিয়ে অদ্ভুত একরকম শব্দ করতে লাগল; এমনকী সুশীলবাবু পর্যন্ত দূরে বারান্দার এক কোণে প্যাড হাতে চুপ করে একটি মোড়ায় বসে পড়লেন৷ প্রায় আধঘণ্টাব্যাপী এক অস্বস্তিকর স্তব্ধতা...৷ কবিতা নাচাতে নাচাতে প্রথম সমরেন্দ্র চিৎকার করে উঠল— হয়েছে একটা! যেন পুত্রসন্তান জন্মেছে ওর!’’
আর, কী আশ্চর্য, অ-কবিদেরও কবিতা লিখিয়েছে ঘণ্টিকীর এই অভিনব তাগিদ৷ কবিতা পাঠিয়েছিলেন সাগরময় ঘোষও, ‘কবিতা-বনিতা-লতা নয় অসহায়!/ঘন্টিকী হয়ে সে আজ রাস্তায় বিকায়৷’
আনন্দ বাগচী লিখেছেন সেই ম্যাজিকের কথা, ‘‘অতঃপর ঘণ্টিকীর কাজ এত দ্রুত এগোতে লাগল বিশ্বাস করা যায় না৷ বাইরে থেকে কয়েকটি লেখা এসে পড়েছে ইতিমধ্যে...সাগরময় ঘোষ কবিতা দিয়েছেন শোনা গেল...নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীও নাকি টেবিলে বসে কবিতা লিখে দিলেন শেষ মুহূর্তে৷ প্রেস, প্রুফ দেখা, মেক-আপ করা, ছাপানো, এমনকি ঘণ্টায়-ঘণ্টায় নিয়মিত প্রকাশ করা— সব যেন ম্যাজিকের মতো হয়ে গেল, — আমরা এতখানি সাফল্যের জন্যে প্রস্তুত ছিলাম না৷’’
আয়ু অবশ্য একটি দিন৷ এ নিয়ে শরৎকুমার মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, প্রথম থেকেই পরিকল্পনা ছিল ঘন্টিকী বেরোবে এক দিনই৷ সকাল দশটা থেকে বিকেল পাঁচটা প্রতি ঘণ্টায় একটি করে মোট আটটি৷ সংখ্যাগুলো আগেই ছাপা হয়ে থাকবে৷ তার পরে উত্তর কলকাতা, মধ্য কলকাতা আর দক্ষিণ কলকাতার তিনটি ঘাঁটিতে সেট বেঁধে রাখা থাকবে৷ ঘণ্টায় ঘণ্টায় হকারদের কাছে বিতরণ করা হবে৷
উত্তর কলকাতার ভার নিয়েছিলেন শরৎকুমার৷ ৭ মে ১৯৬৬ ছিল শনিবার৷ অফিস থেকে হাফ ডে নিয়ে শরৎকুমার ছুটে বেড়ালেন পাঁচ-মাথার মোড়, বিডন স্ট্রিট আর পাতিরাম৷ বলছেন, ‘‘‘মধ্য কলকাতায় মাকুরাম, আনন্দবাজার আপিস আর স্টেটসম্যান পত্রিকায় বিশেষ বিশেষ ব্যক্তির হাতে ঘণ্টায় ঘণ্টায় পত্রিকা পৌঁছতে শুরু হওয়ায় ব্যাপারটা খবরের মাত্রা পেয়ে যায়৷’’ দক্ষিণ কলকাতায় হাজরা মোড়, রাসবিহারী, গড়িয়াহাটে ঘন্টিকী পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল শংকর চট্টোপাধ্যায়ের উপর৷
বেশ আটঘাট বেঁধে নামলেও ব্যাপারটা যে ছিল কেবল একদিনের আয়ুতে বেশ একটা সাড়া ফেলে দেওয়া মজা করবার জন্য সেটা বোঝা যায় ঘন্টিকীর সংখ্যাগুলি পড়লে৷ সৌম্যেন পালের সংগ্রহ থেকে সম্প্রতি সংখ্যা-আটটি পুনঃপ্রকাশ করেছেন ‘বিভাব’ পত্রিকার সম্পাদক, সমরেন্দ্র সেনগুপ্তের পুত্র রাহুল সেন৷ বেলা ৪টেয় প্রকাশিত সপ্তম সংখ্যায় কয়েকটা কবিতার সঙ্গে ছোট্ট করে কবিদের লেখার অভ্যেসটা নিয়েও মজা, ‘‘শরৎকুমার মুখোপাধ্যায় নিজের ঘরের নিজের চেয়ারটিতে না বসে কিছুই লিখতে পারেন না৷ শংকর চট্টোপাধ্যায় বুকের নীচে বালিশ না পেলে লেখার কথা ভাবতেই পারেন না৷ প্রণবকুমার মুখোপাধ্যায়ের চাই দামি সিগারেট৷ সমরেন্দ্র সেনগুপ্ত লেখেন শুধু ভোরবেলা এবং নিজের বিছানায়৷ জাঁ জ্যাক রুশো পায়ে রোদ না পড়লে লিখতে পারতেন না৷ সুশীল রায় বললেন, একটা কলম না পেলে তাঁর পক্ষে কিছুতেই লেখা সম্ভব হয় না৷’’
বেলা ১১টায় দ্বিতীয় সংখ্যার সম্পাদকীয় থেকেই একেবারে পরিকল্পিত ভাবে হাইপ তোলার চেষ্টা হল৷ লেখা হল, ‘‘আমাদের দিকের ত্রুটি যেটা তা আমরা অকপটে স্বীকার করব৷ মুদ্রণসংখ্যা নির্ধারণ করার আগে পরিসংখ্যান গ্রহণ করা আমাদের উচিত ছিল৷ কত জন কবি এবং তার কত অংশ পাঠক— তার হিসাব আমরা আগে করে নিই নি বলেই অনেকের হতাশার হেতু আমাদের হতে হল৷ কিন্তু তাঁদের জন্যে আশ্বাসের কথা আমাদের আছে— আমরা পরের সংখ্যা থেকে মুদ্রণসংখ্যা দ্বিগুণ করে দিলাম৷’’
দ্বিগুণ মানে কত সে কথা অবশ্য ভাঙেননি সম্পাদকেরা৷ বরং বেলা বারোটার সংখ্যায় সগর্বে ঘোষণা করছেন, ‘‘আমাদের সাফল্যে আমরা আত্মহারা হয়েছি৷ নিজেরাই অনবরত নিজেদের তারিফ করছি৷ নিজের পিঠেই নিজেরা খুশি হয়ে চাপড় দিচ্ছি৷...আমাদের মধ্যে এত শক্তি যে লুকানো ছিল, এ কথা আগে আমাদের কেউ বলেনি কেন, তার জন্যে বিস্মিত হচ্ছি৷ নিজেদের শক্তি দেখে নিজেরাই চমকিত হচ্ছি৷’’
আর তার পরেই বেলা একটার চার নম্বর সংখ্যায়, ‘‘একটু আগে বারোটা বেজে গেল৷ কবিতার নয়, ঘন্টিকীর নয়— আমাদের ঘরের দেয়ালঘড়ির৷ বেশ ঘটা করেই বারোটা শব্দ করল ঘড়িটা৷ এটা অমঙ্গলধ্বনি বলে প্রথম মনে হয়েছিল৷ কিন্তু আমাদের সহকর্মীরা জানালেন, ওটা নাকি মঙ্গলনিনাদ৷ এইমাত্র তাঁরা নাকি খবর পেয়েছেন যে, প্রথম সংখ্যা নিঃশেষ হওয়ায়, এবং পরবর্তী সংখ্যাগুলি প্রায় ফুরিয়ে যাওয়ায় ঘন্টিকীর নাকি জয়ধ্বনি উঠেছে চতুর্দিকে৷’’
সাড়া পড়ুক আর জয়ধ্বনি উঠুক, এমন দুঃসাধ্য এক সিদ্ধান্ত মাসভর কিংবা বছরভর টেনে নিয়ে যেতে চাননি ঘন্টিকী-কবিরা৷ চাননি বলেই ঠিক মাঝখানে, বেলা একটার চতুর্থ সংখ্যায় হাইপের ক্লাইম্যাক্সে পৌঁছে পরের সংখ্যা থেকেই ঘন্টিকীর বিদায়-নির্ঘণ্টটিও যেন প্রস্তুত করে রাখলেন৷
বেলা দুটোর সংখ্যায় সম্পাদকীয় লিখছে, ‘‘পরশ্রীকাতর লোক পৃথিবীতে অনেক আছে, বিশ্বনিন্দুকের সংখ্যাও কম নয়৷ মাত্র চারটি সংখ্যা ঘন্টিকী বের হয়েছে৷ ইতিমধ্যেই আমাদের বিরুদ্ধে নানাপ্রকার কুৎসা রটনা আরম্ভ হয়ে গিয়েছে৷ ...আমরা নাকি কবিতাকে বাজারের সামগ্রী করে তোলার জন্যই এই ঘন্টিকী প্রকাশ করছি৷’’
পরের ঘণ্টায়, ‘‘ঘন্টিকী বের হয়েছে৷ এর পরের ধাপ হচ্ছে— কবিতায় স্বপ্নদেখা৷’’ বিকেল চারটেয়, ‘‘গত সংখ্যায় আমরা কবিতায় স্বপ্ন দেখার সম্ভাবনার বিষয়ে উল্লেখ করেছিলাম৷ কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই— স্বপ্ন দানা বাঁধার আগেই আমাদের স্বপ্নভঙ্গ হল৷’’
এর পরের সংখ্যাই ঘন্টিকীর শেষ সংখ্যা৷ বেরোল ঠিক বিকেল পাঁচটায়৷ ‘অতি দুঃখের সঙ্গে’ সম্পাদকীয় জানাল, ‘‘আমরা এর প্রকাশ আপাতত বন্ধ রাখছি! ...যদি যথেষ্ট শিক্ষা আমাদের হয় তাহলেই নূতন করে আমরা ঘন্টিকী নিয়ে আবির্ভূত হব৷’’ সে ঘণ্টা আর কোনও দিন আসেনি৷ মুহূর্তের সেই কবিতা অথবা কবিতার তেমন মুহূর্ত আর আসেনি এই পঞ্চাশ বছরে৷ কিন্তু মজার এই খেলায় নড়েচড়ে বসেছিল কলকাতা৷
সাধে কি আর শরৎকুমার মুখোপাধ্যায় লিখেছিলেন, ‘‘একটি পাগল লেখে এবং আর-এক পাগল ছাপায়/ দুজন মিলে রহস্যময় কলকাতাকে কাঁপায়!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy