ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল
পত্রিকা: সুজয় ঘোষের ছবিকেও না বলে দিয়েছেন। এত ব্যস্ত!
পরাণ (হাসি): সুজয়কে খুব ভালবাসি আমি। ওর ছবিতে কাজ করাটা প্লেজার। কিন্তু এমন ভাবে অকুপাইড হয়ে গেলাম যে ও যখন আগের ডেটটা বদল করল, আমি আর সময় বের করতে পারলাম না।
পত্রিকা: আরও অফার ফেরালেন নাকি?
পরাণ: ব্যস্ততার জন্য ছবি ফিরিয়ে দিয়েছি এমনটা সচরাচর হয় না। তবে চিত্রনাট্য পছন্দ না হওয়ায় গত চার পাঁচ মাসে পাঁচ-ছ’টা অফার ফিরিয়ে দিয়েছি।
পত্রিকা: আপনি তো প্রায় জীবনের স্লগ ওভারে এসে বিখ্যাত হলেন!
পরাণ(কিছুটা ভেবে): তাই তো দেখলাম। সাফল্য কখন আসবে কেউ বলতে পারে না। কোনও ফরমুলা নেই যে এই বয়সে সাফল্য আসবে, ওই বয়সে আসবে না।
পত্রিকা: ‘সিনেমাওয়ালা’ ছবিতে নায়ক। চারিদিকে প্রশংসা হি প্রশংসা়!
পরাণ: এই প্রশংসাগুলো আমার কাছে এখনও প্রেরণার। সব সময় ভাবি, পরের কাজটা যেন আরও ভাল হয়। প্রশংসা দায়িত্ব বাড়িয়ে দেয়।
পত্রিকা: দ্বিতীয়বার পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করলেন। অন্য পরিচালকের সঙ্গে ওঁর কোনও তফাত...
পরাণ: তফাত মানে... দেখুন... কৌশিক নিজে খুব ভাল অভিনেতা। ওর চিত্রনাট্যের সংলাপে একটা দারুণ বাঁধুনি থাকে। চরিত্র বোঝাতে ওই সংলাপগুলো খুব স্পেসিফিক। তাছাড়া সিনেমা তৈরির ক্ষেত্রে ওর ভাবনার মধ্যে একটা গভীরতা আছে। ইউনিকনেস আছে।
পত্রিকা: এককালে ভারতীয় গণনাট্য সঙ্ঘের সদস্য। তার পরে গ্রুপ থিয়েটারে অভিনয়। সেখান থেকে আজ...
পরাণ (হাল্কা দীর্ঘশ্বাস ফেলে): প্রচণ্ড স্ট্রাগলিং পিরিয়ডের মধ্যে দিয়ে গেছি! কিন্তু স্ট্রাগলের গল্প করতে আমার ভাল লাগে না। আদিখ্যেতা মনে হয়। পৃথিবীতে আর যেন কেউ স্ট্রাগল করেনি... বারো-চোদ্দো বছর বয়স থেকে থিয়েটার করে আসছি। থিয়েটারই আমার প্রাণ। এই থিয়েটারের কাজ বজায় রাখতে গিয়েই অনেক স্ট্রাগল এসেছে।
পত্রিকা: যেমন?
পরাণ (অল্প একটু থেমে): জেলায় জেলায় ঘুরে আইপিটিএ-র থিয়েটার করতাম। অফিসের ছুটি ফুরিয়ে যেত। মাসে সতেরো আঠেরো দিনের মাইনে পেতাম। আমার সঙ্গে আমার স্ত্রীর ভাব-ভালবাসা করে বিয়ে। ফলে সেই যুগে... অনেকেরই যা হয়েছে আরকী... পরিবারের থেকে প্রথমেই আলাদা। আমার মিসেস জুনিয়র স্কুলের শিক্ষকতা করতেন। মাস তিন-চারেক বাদে বাদে সামান্য মাইনে। সংসারে টানাপড়েন লেগেই থাকত। কারও কাছে হাত পাতার অভ্যেস ছিল না। সংসার চালাতে বউয়ের গয়নাও বন্ধক দিতে হয়েছে।
পত্রিকা: আফসোস হয় না?
পরাণ: না, না, আফসোস হবে কেন! আইপিটিএ-তে অভিনয় না করলে নাটক সম্পর্কে, সংস্কৃতি সম্পর্কে কোনও ধারণাই তৈরি হত না। অভিনয়ের সঙ্গে সমাজজীবন কী গভীর ভাবে জড়িয়ে, সেই বোঝাপড়াটা জন্মায় আইপিটিএ-তে গিয়েই।
পত্রিকা: ২০০০-এ চাকরিতে অবসর। তার পর নিয়মিত বড় পরদায়। কখনও মনে হয় আরও আগে থেকে কাজ করলে...
পরাণ: কী হলে কী হত, ভেবে কষ্ট পাওয়াটা আমার নেই ভাই।
পত্রিকা: কিন্তু এত দেরিতে সিনেমায় এলে তো উৎপটাং কিছু ধাক্কাধাক্কি চলে আসে?
পরাণ: আমার আসেনি। আর ‘আমাকে পার্ট দাও, আমাকে পার্ট দাও’—বলার লোক আমি নই। তাই কম্পিটিশনের ধাক্কাধাক্কিতে পড়ার বালাই আমার ছিল না।
পত্রিকা: এখন তো স্ট্যান্ড আপ কমেডির যথেষ্ট গুরুত্ব। এই রকম একটা ক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে... যেমন ধরুন ‘মীরাক্কেল’। কেমন লাগে ওখানকার পার্টিসিপেন্টদের?
পরাণ: সবাই দুর্দান্ত না হলেও কেউ কেউ বেশ ভালই করে খাচ্ছে।
পত্রিকা: ননস্টপ কমেডির আড়ালে লুকিয়ে থাকা সিরিয়াস পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষটা ঠিক কেমন?
পরাণ (অনেক ভেবে): খুব শক্ত ... নিজেকে এক্সপ্লেন করা...। দেখুন, শরীর আর সত্তা— দুই দিয়েই তো অভিনয় করতে হয়। শরীরের যেমন অনুশীলন থাকে, তেমন সত্তারও। আর এই দ্বিতীয় ব্যাপারটাতে মানুষকে অবজার্ভ করতে লাগে। এখানে আমি খুব সিরিয়াস। আমি লজিকাল মানুষ। একটা কী দুটো কথা বলেই বুঝে যাই কার সঙ্গে মিশতে পারব, কার সঙ্গে পারব না। অনর্থক কোনও টপিক নিয়ে গলগল করে কথা বলে যেতে পারি না।
পত্রিকা: শুনেছি, পরিচালক সন্দীপ রায়ের ‘কামু মুখোপাধ্যায়’ নাকি আপনি। আপনাকে ছাড়া ছবিই প্ল্যান করা হয় না রায়বাড়িতে। রহস্যটা কী?
পরাণ (মুচকি হাসি): রহস্য তো কিছু নেই। বাবুর (সন্দীপ রায়) সঙ্গে আমার সম্পর্কটা একেবারেই প্রফেশনাল নয়। বরং পরম আত্মীয়ের মতো। আমাকে কখনও ও কমেডিয়ানের ক্যাটাগরিতেও ফেলে না। কী ‘রয়েল বেঙ্গল রহস্য’ কী ‘বাদশাহী আংটি’ সব জায়গাতেই বাবু আমাকে সিরিয়াস রোলে কাস্ট করেছে। ও জানে যে কোনও রোল দিলেই আমি মুখ রক্ষা করতে পারব। ও আমাকে শর্টফিল্মের ছোট ছোট চরিত্রে নেওয়ার পর বড় ছবিতে প্রথম বার নেয় ‘বোম্বাইয়ের বোম্বেটে’-তে। গল্পে পুলক ঘোষালের চরিত্রটা লালমোহনবাবুর চেয়ে ছোট হলেও, বাবু বলল, ‘‘পরাণদা যখন অভিনয় করছে, পুলক ঘোষালের বয়স ৫০- ৫৫ হতেই পারে। লালমোহনের চেয়ে বড় হতেই পারে।’’
পত্রিকা: এই পুলক ঘোষালের চরিত্রটিও কি কমেডিয়ানের নয় বলবেন?
পরাণ: কমেডি... কিন্তু চরিত্রায়ণটাই ও ভাবে হয়েছে। তাতে যদি হাস্যরস থাকে... লোকে যে ভাবে দেখে... বাবুকে নিয়ে এখানে একটা কথা বলি, আমার কী মনে হয় জানেন...
পত্রিকা: কী?
পরাণ: শুনলে অনেকে ভ্রু তুলবেন হয়তো। কিন্তু আমার মনে হয়, দূরদৃষ্টির গভীরতায় বাবু মানিকদার থেকেও দশ নম্বর বেশি পাবে।
পত্রিকা: কেন?
পরাণ: প্রযুক্তির দিক থেকে বাবু অনেকটা এগিয়ে। তার ভাবনা, চিন্তা, দর্শন ....
পত্রিকা: প্রযুক্তির এই ব্যাপার-স্যাপার সত্যজিৎ রায় তো পাননি।
পরাণ: পাননিই তো। তাই জন্যই এই এগিয়ে-পিছিয়ের গল্পটা বলছি। আজ উনি থাকলে হয়তো এ কথাটা বলতে হত না।
পত্রিকা: কেউ কেউ বলছেন ‘জলসাঘর’-এর ছবি বিশ্বাস, ‘পরশ পাথর’-এর তুলসী চক্রবর্তী আর ‘সিনেমাওয়ালা’র পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি আজ এক সারিতে...
পরাণ (কিছুটা বিরক্ত): কোনও ভাল কাজ হলেই আগের মানুষদের সঙ্গে তুলনা করার একটা চল আছে। তবে এটা তো যাঁরা সমালোচনা করছেন, তাঁদের মত। আজ যদি ছবি বিশ্বাস ‘জলসাঘর’ করতেন, তা হলেও তাঁর অভিনয়ের সঙ্গে পুরনো দিনের অভিনেতাদের কাজের তুলনা আসত। আমার দুর্ভাগ্য যে আমি ছবি বিশ্বাসের পরে জন্মেছি। দেখুন, এই সব তুলনাগুলো একদমই আমার ভাল লাগে না।
পত্রিকা: ‘সিনেমাওয়ালা’-য় প্রণবেন্দু দাস করার আগে কী ভাবে তৈরি হয়েছেন?
পরাণ: শুধু এই চরিত্রটা নয়, যে কোনও সিনেমার স্ক্রিপ্ট পড়ার পরে আমার সামনে চরিত্রের একটা ছবি ভেসে ওঠে। সেই ছবি অনুসারেই আমি প্রস্তুতি নিতে শুরু করি। আমার সারা জীবনের অবজারভেশনের যে ভাঁড়ার ঘর আছে, সেখানে প্রণবেন্দুর মতো অনেক চরিত্র জমা হয়ে আছে যে...
পত্রিকা: একটা কথা বলি?
পরাণ: প্লিজ...
পত্রিকা: প্রৌঢ় ভাল অভিনেতা তো কমতি নেই ইন্ডাস্ট্রিতে। সবাইকে ছেড়ে পরিচালক ‘সিনেমাওয়ালা’য় আপনাকে নিলেন। অবাক হননি?
পরাণ: এই প্রশ্নটা পরিচালককে করুন না। এটুকু বলি, ও আমাকে বলেছিল, ‘একটা রোল আছে, যেটা তুমি ছাড়া হবে না’ ...এর উত্তরে আমি একটি বারের জন্যও জিজ্ঞাসা করিনি কেন হবে না? জিজ্ঞেস করলে হয়তো কৌশিক নানা ধরনের গুণগান করার চেষ্টা করত। এগুলো আমার কাছে অস্বস্তিকর। এমব্যারেসিং লাগে। আমার সেলফ অ্যাসেসমেন্ট আছে। আমি তো জানি আমি কী পারি, কী পারি না। অহেতুক গুণগান আমার পোষায় না।
পত্রিকা: প্রায় সাড়ে চারশো সিঙ্গল স্ক্রিন হল বন্ধ। ছবির বিষয়টার আশিভাগ জুড়ে এটাই। সেখানে আপনি একজন সিঙ্গল স্ক্রিন হলের মালিকের চরিত্রে। কী মনে হয় বন্ধ সিঙ্গল স্ক্রিনগুলো নিয়ে...
পরাণ: এই মুহূর্তে বাংলার সিঙ্গল স্ক্রিন হলের ভবিষ্যৎ কী তা কোনও জ্যোতিষীও বলতে পারবে না। তবে কালের নিয়মে যেটা হবে সেটা তো মেনে নিতে হবে। প্রযুক্তির অগ্রগতিকে তো অস্বীকার করা যাবে না। পরিণাম যাই হোক না কেন। কিন্তু যদি বলেন, যাঁরা মাল্টিপ্লেক্সে সিনেমা দেখার সামর্থ্য রাখেন না, তাঁদের কী হবে? সেখানে সিঙ্গল স্ক্রিনের ব্যাপারটা খুবই প্রাসঙ্গিক। তবে এই হলগুলো চালু যদি রাখতেই হয়, প্রথমেই যেটা দরকার সেটা হল, ছবির পাইরেসি বন্ধ করা...
পত্রিকা: আজকাল তো লোকে ট্যাবেও সিনেমা দেখে...
পরাণ: খুব খারাপ। খুব খারাপ লাগে এটা দেখলে। সিনেমার ইমপ্যাক্ট ওইটুকু পর্দায় পাওয়া অসম্ভব। সিনেমার ক্যানভাস অনেক বড়। নিয়মিত ট্যাবে ছবি দেখলে একটা দায়সারা দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়, সিনেমার প্রতি। রক্তমাংস বাদ দিয়ে শুধু কঙ্কালটা তো আর মানুষ নয়...
পত্রিকা: আইপিটিএ-র কথা বলছিলেন। এখনও তো নাটকের দল আছে আপনার। সেটা কি শখের...
পরাণ: শখ কেন হবে? শখ হলে তো শকড্ হয়ে যেতাম। নাটক ছাড়া বাঁচাটাই মুশকিলের। ওটাকে ছাড়তে পারব না। কিন্তু থিয়েটার করে দেশবরেণ্য হব এমন স্বপ্নও দেখি না। আর কী বলুন তো, আমার শৈশবটা যে ভাবে কেটেছে, যৌবনে যে ভাবে সংগ্রাম এসেছে, তাতে স্বপ্ন দেখার ইচ্ছেগুলোই এখন বিলীন হয়ে গেছে।
পত্রিকা: নতুন নতুন ছেলেমেয়েদের সঙ্গে তো প্রচুর কাজ করছেন। অনেকে বলেন, ইদানীং নতুনদের অভিনয়ের মান পড়ে যাচ্ছে...
পরাণ (ভেবে): যারা জেনে বুঝে, শিখে, ফিল্ডে আসছে তারা খুবই ভাল কাজ করছে। সেটা কী সিনেমার ক্ষেত্রে, কী সিরিয়ালে। আবার উল্টো ছবিটাও আছে। অভিনেতা-অভিনত্রীদের কারও কারও অভিনয়ের চেয়ে বেশি সাজগোজের দিকে ঝোঁক। গণ্ডগোল হচ্ছে তাদেরই। এই ধরুন, এরা অভিনয়ের সময় এমন এক-একটা জায়গায় পজ দিয়ে ফেলে, সংলাপের মানেটাই বদলে যায়। অভিনয় ব্যাপারটা তো ছেলেখেলা নয়। অনুশীলন চাই। ওয়ার্কশপ চাই। গ্রুমিং চাই। শুধু সিরিয়ালের ক্ষেত্রে নয়, সিনেমার ক্ষেত্রেও অভিনয়ে গ্রুমিং দরকার।
পত্রিকা: আপনি তো বরাবরের বামপন্থী। কিন্তু নতুন বাংলায় পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কতটা পরিবর্তিত হলেন?
পরাণ: আমাকে কি বদলাতেই হবে? প্রত্যেক মানুষের মনে একটা ভাবনা থাকে। আদর্শ থাকে। আমারও আছে। যতক্ষণ না কেউ যুক্তি দিয়ে আমার বিশ্বাসকে খণ্ডন করতে পারছেন, ততক্ষণ আমি নিজেকে পাল্টাব না।
পত্রিকা: তা হলে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের চলচ্চিত্র পুরস্কার...তার অর্থগ্রহণ... দ্বিধা হয়নি?
পরাণ: না প্রথমবার আমি পুরস্কার গ্রহণ করিনি কলকাতার বাইরে ছিলাম বলে। দ্বিতীয়বার নিয়েছি। শিল্পী হিসেবে সরকারি পুরস্কার নিতে তো অসুবিধে নেই। সেটা তো আমার কাজের স্বীকৃতি। পুরস্কার না নেওয়ার মধ্যে একটা হঠকারিতা থাকে।
পত্রিকা: জিনস, টি শার্ট, গল্ফক্যাপে পরাণবাবুর যৌবন কতটা সুরক্ষিত?
পরাণ (খুব হেসে): আমার বয়স ছিয়াত্তর। কিন্তু তাই বলে হাঁটাচলায় কথায় যদি বোঝাতে থাকি ‘আমি বৃদ্ধ, আমি বৃদ্ধ’, তা হলে তো দুম করে কবরের কাছাকাছি পৌঁছে যাব। আমি সে বান্দা নই। বরং কবর আমাকে যত টানবে, আমি তত উল্টোদিকে টান মারব। আমি জানি মৃত্যু অবধারিত। এই যুদ্ধে কেউ জেতে না। কিন্তু সে ব্যাটা বুঝবে, কার সঙ্গে পাঞ্জাটা লড়ল।
পত্রিকা: এখনও তা হলে বান্ধবীরা ফোনটোন করেন বলছেন?
পরাণ (দুষ্টুমির হাসি): না, তেমন কেউ ফোনটোন করে না। কী করব! ওয়েভলেংথে না মিললে বান্ধবী হবে কী করে? নাটকের দলে একজন বান্ধবী আছে। তার সঙ্গেও মতে না মিললে মাঝে মাঝে ঝগড়াঝাঁটি হয়।
পত্রিকা: একজনই বান্ধবী তা হলে? স্ত্রীর সঙ্গে....
পরাণ: তার সঙ্গেও মাঝেমধ্যে লেগে যায়। সে তো আবার মাস্টারনি ছিল। তাই সব সময়ই উপদেশ দিয়ে কথা বলে।
পত্রিকা: তা নয়, বলছি, আপনার তো খুব সাহস দেখছি... প্রকাশ্যে বান্ধবীর কথা স্বীকার করছেন। বাড়ির ভয় নেই!
পরাণ (হা হা হা হাসি): আরে বান্ধবী, প্রেমিকা তো নয়। ও আমার পারিবারিক বন্ধুও। আমার বউকে মাসিমা ডাকে। আমার থিয়েটারি ভাবনা-চিন্তা, দর্শনের সঙ্গে ওর খুব যায়...
পত্রিকা: শুনেছি, আপনি ভাল গান করেন। কিন্তু প্রকাশ্যে তেমন করেন না।
পরাণ (হেসে): আমি ছাড়া আমার কোনও শ্রোতা নেই ভাই। গিন্নি তো মোটেই আমার গান শোনেন না। তবে কোথাও গান শিখিনি। বাবার ভাল গানের গলা ছিল। তারই কিছুটা হয়তো পেয়েছি। তবে এটা বুঝি, গানটা আমার হত। কিন্তু থিয়েটারের পেছনে এতটা সময় দিয়ে ফেললাম যে আর গান শেখা হল না। আমার মেয়ে কিন্তু ভাল গান গায়। ক্ল্যাসিকাল।
পত্রিকা: শেষে একটা কথা। আপনার এই এভারগ্রিন থাকার পাসওয়ার্ডটা কী, একটু বলবেন?
পরাণ (হাসতে হাসতে): টপ সিক্রেট! .... শুনুন, দুঃখ, বেদনা, হতাশা এগুলোতে ডুবে থাকতে নেই। আরে ভাই, জীবন থাকলে ও সব থাকবে। তা বলে, তার ভারে ডুবে যাওয়ার বদলে ডুবুরি হয়ে ভাসাটা চাই। আনন্দ খুঁজুন। প্লেজার... প্লেজার! আর সুন্দর জিনিস দেখার, উপভোগ করার মনটা বাঁচিয়ে রাখুন। মানুষের জীবনে ভালবাসার কোনও বিকল্প নেই। সেই ভালবাসাটা পাওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হবে। প্রেম পেলেই ব্যস, দেখবেন চাঙ্গা লাগছে! এভারগ্রিন!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy