প্র: শীত তেমন এল না। কিন্তু পরপর বিয়েবাড়ি আর নৈশপার্টির ডাক। শরীর সইবে কী করে?
উ: পার্টিতে যান, অসুবিধে কী। তবে সব জায়গায় খাবেন না। আগেই ঠিক করে নিন কোথায় খাবেন।
প্র: পার্টিতে যাব আর খাব না?
উ: ঘন ঘন ডাক পেলে শরীরের কথাটাও তো ভাবতে হবে। রোজই গলা অবধি খেলে পেটের বারোটা বাজবে। তৈলাক্ত, ভাজাভুজি, ডেজার্ট-এর মতো ফ্যাট জাতীয় খাবারগুলো এড়িয়ে চলুন। সবই খান কিন্তু অল্প।
প্র: তাতে তো পেটও ভরবে না?
উ: পেট ভরে খাওয়ার কথা মাথায়ই আনবেন না। শরীরই ভুগবে। পকোড়াটা ভাল হয়েছে বলে দুটো খেয়ে নিলে বিরিয়ানি দু’-চামচেই আটকে দিন। আর স্যালাডটা বুঝেশুনে খাবেন।
প্র: অনুষ্ঠান বা পার্টিতে তো ঢালাও স্যালাড। আপনি বলছেন খাব না?
উ: স্যালাড টাটকা কি না বা সেগুলো গরম জলে ধোয়া কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত না হলে খাবেন না। বিয়েবাড়ি বা পার্টিতে এটা জানার উপায় নেই। তাই খাবেন না। বাইরে খাওয়ার সময় এই টুকিটাকি ব্যাপারগুলো মাথায় রাখলে পেটের সমস্যা কিন্তু অনেকটাই এড়াতে পারেন।
প্র: বাড়িতেও একটু বেশি খাওয়া হলেই গলা-বুক জ্বলতে থাকে।
উ: শীতের সব্জি অনেকে হজম করতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে রাতের খাবার ন’টার মধ্যে সেরে ফেলুন। পেটের গোলমাল কম হবে।
প্র: অত ঘড়ি দেখে ডিনার সম্ভব নাকি?
উ: পেটের সমস্যা এড়াতে রাত বারোটায় খাওয়ার অভ্যাসটা কিন্তু ছাড়তেই হবে। আসলে ভরপেট খাওয়ার পর শুয়ে পড়লে অনেক সময় খাবার ও অ্যাসিড ওপরে উঠে আসে। সমস্যা হয়। খাওয়া আর শোওয়ার মাঝে দেড় থেকে দুই ঘণ্টার তফাত রাখুন।
প্র: কী পার্টি বা বাড়ি যেখানেই খাই না কেন, অ্যাসিড হবে না, এমন কিছু বলুন।
উ: নিয়মিত এক্সারসাইজ করবেন। তাতে খাবার হজমে সুবিধে হবে। জল বেশি করে খাবেন। ধূমপান, অ্যালকোহল আর ঘন ঘন চা-কফি চলবে না। দেখবেন অ্যাসিডিটির সমস্যা অনেকটাই কমেছে। তাই বলে যত ইচ্ছে তত খাবেন না। বিশেষ করে শীতের মিষ্টি। তাতে ওজন বাড়ে। পেটে মেদ জমলে হার্টের সমস্যা কিন্তু বাড়বে।
প্র: তা আর কতটুকু বাড়বে?
উ: এমনিতেই যাঁদের হার্টের সমস্যা আছে, বিশেষ করে বয়স্কদের, তাঁদের এই ওজন থেকেই কিন্তু হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আর কোনও ভাবেই ব্রেকফাস্ট যেন বাদ না পড়ে। তাতেও ওজন বাড়ে।
প্র: অ্যাসিডিটি হলে কী করব?
উ: গলা জ্বালা করলে লিক্যুইড অ্যান্টাসিড খাবেন। যাতে লোকাল অ্যানেস্থেটিক মেশানো থাকে। তাতে জ্বালা কমবে। তবে পাউডারের মতো যে সব অ্যান্টাসিড জলে গুলে খেতে হয়, যেগুলি জলে দিলে বুদ বুদ ওঠে, হার্ট বা ব্লাড প্রেসারের সমস্যা থাকলে এ ধরনের অ্যান্টাসিড এড়িয়ে চলবেন।
প্র: জল খেলেও তো অ্যাসিডিটি কমে?
উ: না। জল খেয়ে অ্যাসিড কমানোর চেষ্টা করবেন না। তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। লিক্যুইড অ্যান্টাসিড-ই খাবেন।
প্র: সব সময় অ্যান্টাসিড সঙ্গে রাখতে হবে?
উ: তাই বলে অ্যান্টাসিড মুড়িমুড়কির মতো খাবেন না। একটানা কয়েক দিন গলা-বুক সাময়িক জ্বালা করলে বা ওপর পেটে ব্যথা হলে প্যান্টোপ্রাজল, বা র্যানিটিডিন গ্রুপের অ্যান্টাসিড সাত দিন খেয়ে বন্ধ করে দেবেন। যদি দেখেন তা-ও কমছে না, লাগাতার অ্যাসিডিটি হচ্ছে, সঙ্গে ওপর পেটে ব্যথা, অবশ্যই ডাক্তারকে জানাবেন।
প্র: ওষুধ খেলে তো নিজে থেকেই কম থাকে?
উ: না। একটানা অ্যাসিডিটি হতে থাকলে ডাক্তার দেখাবেন। যদি দেখেন চলাফেরা করার সময়ও বুক বা ওপরের পেট জ্বলছে বা সঙ্গে নিঃশ্বাসের কষ্ট থাকছে, তবে হার্টের কথা মাথায় রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে একটা ইসিজি করে ডাক্তার দেখানো জরুরি। অনেকেই অ্যাসিডিটির সঙ্গে ব্যাপারটা গুলিয়ে ফেলেন। শুধু পেট নয়, শীতে হার্টের ব্যাপারটাও মাথায় রাখবেন।
যোগাযোগ-৬৫২১৫৬৩৬
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy