মেয়াদ ফুরনোর দু’বছর আগেই বিধানসভা ভোট হতে যাচ্ছে জম্মু-কাশ্মীরে। বুধবার সন্ধ্যায় রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক আচমকা বিধানসভা ভেঙে দেওয়ায় সন্ত্রাসকবলিত রাজ্যটিতে অনিবার্য হয়ে উঠল অন্তর্বর্তী ভোট। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রের খবর, আসন্ন লোকসভা ভোটের সঙ্গেই অন্তর্বর্তী বিধানসভা নির্বাচন হতে পারে জম্মু-কাশ্মীরে।
দুই যুযুধান জোট রাজ্যে সরকার গঠনের দাবি জানানোর কিছু ক্ষণের মধ্যেই গতকাল বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা করেন জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই সমালোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজ্যজুড়ে। রাজ্যপালের ঘোষণাকে আদালতে চ্যালেঞ্জ জানানোর ভাবনাচিন্তাও শুরু হয়েছে। কংগ্রেস ও তাঁর দীর্ঘ দিনের ‘রাজনৈতিক শত্রু’ ন্যাশনাল কনফারেন্সের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বুধবার রাজ্যপাল মালিকের কাছে সরকার গঠনের দাবি জানানোর জন্য তাঁর সময় চান পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি)-র নেত্রী প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। কিন্তু রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি মেহবুবা। অন্য দল ভাঙিয়ে সরকার গড়ার পাল্টা দাবি জানিয়েছিল বিজেপি-ও। মেহবুবার অভিযোগ, তাঁদের সেই প্রয়াস ভেস্তে দিতেই কেন্দ্রের নির্দেশে বিধানসভা ভেঙে দেন জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল।
কেন তড়িঘড়ি জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা করলেন তিনি, তার কারণ জানাতে গিয়ে রাজ্যপাল মালিক বলেছেন, ‘‘দু’টি পরস্পরবিরোধী মতাদর্শের দল জোট বেঁধে সরকার গড়লে তা স্থায়ী হবে না বুঝেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়াও, বিধায়কদের সমর্থন জোগাড় করার জন্য টাকা ছড়িয়ে ঘোড়া কেনাবেচা চলছিল বলেও অভিযোগ আসছিল।’’
আরও পড়ুন- বিজেপিকে ঠেকাতে উপত্যকায় এ বার কংগ্রেস-এনসি-পিডিপি জোট!
আরও পড়ুন- কেউ তো জিতল না এতে, বলছেন অভিমানী শোভন-পুত্র
রাজ্যপালের সচিবালয় সূত্রের খবর, এই সপ্তাহের গোড়ায় দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন মালিক।
৮৭ সদস্যের জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় ৫৬ জন বিধায়কের সমর্থন দেখিয়ে বুধবার রাজ্যপাল মালিকের কাছে সরকার গঠনের দাবি জানান মেহবুবা। পরে রাজ্যপালকে দেওয়া সেই চিঠি টুইটও করেন পিডিপি নেত্রী। তাতে ১২ জন কংগ্রেস ও ন্যাশনাল কনফারেন্সের ১৫ জন বিধায়কের সমর্থন ছিল। যার ফলে, তাঁর জোটের বিধায়ক সংখ্যা ৪৪-এ পৌঁছে যায়। মেহবুবার অভিযোগ, গতকাল রাজ্যপাল তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চাননি। যান্ত্রিক গোলযোগে রাজ্যপালের অফিসে ফ্যাক্সও পাঠাতে পারেননি তিনি। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই লন্ডন থেকে রাজ্যপালকে হোয়াটসঅ্যাপে সরকার গড়ার দাবি জানান পিপলস কনফারেন্স নেতা সাজ্জাদ লোন। তিনি দাবি করেন, দলের দুই বিধায়ক ছাড়াও, তাঁর সঙ্গে রয়েছেন বিজেপির ২৫ জন বিধায়ক। রয়েছেন অন্যান্য দলের আরও ১৮ জনেরও বেশি বিধায়ক।
মেহবুবা বলেছেন, এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই ফ্যাক্স মারফত বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন রাজ্যপাল মালিক। মেহবুবার প্রশ্ন, ‘‘তখন কী ভাবে ঠিক হয়ে গেল ফ্যাক্স মেশিন?’’
পরে অবশ্য টুইট করে ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা বলেন, ‘‘গত পাঁচ মাস ধরেই বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে আমার দল। তাই, মেহবুবার সরকার গড়ার দাবি জানানোর পরেই রাজ্যপাল তড়িঘড়ি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এটা এমন কোনও কাকতালীয় ঘটনা নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy