রাহুল গাঁধী। —ফাইল চিত্র।
নরেন্দ্র মোদী নিজেকেই নিজে দেশের ‘চৌকিদার’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। সেই মোদীর জমানাতেই ব্যাঙ্কের প্রতারণা চার বছরে বেড়েছে চার গুণ! আর তা নিয়েই আজ রাহুল গাঁধী কটাক্ষ করে বললেন, ‘এ তো চৌকিদারের বেশে চোরেদের কাজ’!
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য বলছে, প্রতারকদের হাতে ২০১৭—’১৮-য় ৪১,১৬৭ কোটি টাকা খুইয়েছে ব্যাঙ্কগুলি। মোদী প্রধানমন্ত্রীর গদিতে বসার ঠিক আগের বছরে, অর্থাৎ ২০১৩-’১৪-য় ব্যাঙ্কগুলি প্রতারকদের হাতে খুইয়েছিল ১০,১৭০ কোটি টাকা। নীরব মোদী-মেহুল চোক্সীদের জালিয়াতির সুবাদে গত চার বছরে সেই ব্যাঙ্ক প্রতারণার অঙ্কটা বেড়েছে চার গুণ।
নীরব-মেহুল দু’জনেই প্রধানমন্ত্রীর পরিচিত বলে কংগ্রেস আগেই অভিযোগ তুলেছিল। আজ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই তথ্য তুলে ধরে মোদীকে নিশানা করে কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘‘উনি ব্যাঙ্কের ৪১,১৬৭ কোটি টাকা নিজের প্রিয় বন্ধুদের নামে সঁপে দিয়েছেন!’’
ব্যাঙ্ক প্রতারণার এই অঙ্কটা যে নেহাত কম নয়, তা বোঝাতে রাহুলের যুক্তি, এই ৪১,১৬৭ কোটি টাকায় পুরো এক বছরের একশো দিনের কাজ বা এমএনআরইজিএ-র খরচ চলে যেত। তিনটি রাজ্যে কৃষকদের ঋণ মকুব করে দেওয়া যেত। ৪০টি এইমস খুলে ফেলা যেত।
অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের যুক্তি, ২০১৭-’১৮-য় মূলত নীরব মোদী-মেহুল চোক্সীদের পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের প্রতারণা প্রকাশ্যে আসাতেই ব্যাঙ্ক প্রতারণার অঙ্ক এক লাফে অনেকখানি বেড়েছে। তার আগের বছরই, ২০১৬-’১৭-য় প্রতারণার অঙ্ক ছিল ২৩,৯৩৩ কোটি টাকা। যার অর্থ এক বছরে প্রতারণার ঠেলায় ব্যাঙ্কের লোকসান এক ধাক্কায় ৭২ শতাংশ বেড়েছে। তথ্য বলছে, প্রতারণার সংখ্যাও বেড়েছে এই এক বছরে। ২০১৬-’১৭-য় প্রতারণার ৫,০৭৬টি মামলা হয়েছিল। এক বছরে তা বেড়ে হয়েছে ৫,৯১৭।
শুধু রাহুল নন। এ নিয়ে মোদী সরকারকে এক হাত নিয়েছেন অন্য বিরোধী দলের নেতারাও। সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘‘মোদী সরকার জুমলা-তামাশা নিয়ে ব্যস্ত। সেই সুযোগে প্রতারক-জালিয়াতরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। প্রতারকরা লুট করে পালালেও তাদের দয়া করা হচ্ছে। তার ফলেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে প্রতারণার অঙ্ক।’’ তৃণমূলের সৌগত রায়ের কটাক্ষ, ‘‘ললিত মোদী, নীরব মোদী আগেই পালিয়েছেন। এ বার তৃতীয় মোদী কবে উড়ে পালাবেন, সেটাই দেখার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy