রবিবার চেন্নাইয়ে কমল হাসান। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
প্রশ্নোত্তর চলছিল পুলওয়ামার জঙ্গি হামলা নিয়ে। সেখানে কাশ্মীরের রাজনৈতিক সমস্যা টেনে আনলেন অভিনেতা কমল হাসন। গণভোটে সরকারি আপত্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তার জেরে এ বার নেটিজেনদের রোষে পড়লেন কমল হাসন।
গতবছর রাজনীতিতে পা রেখেছেন দক্ষিণি ছবির এই অভিনেতা। মক্কল নিধি মাইয়ম (এমএনএম) নামে নিজের দল গঠন করেছেন। সমালোচনার মুখে পড়ে দলের নেতার হয়ে সাফাই দিতে এগিয়ে এসেছে তারা। কমল হাসন নিজেও সাফাই দিয়েছেন। তাঁর মন্তব্য বিকৃত করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন। তাতেও বন্ধ হয়নি সমালোচনা। বরং তাঁর মতো মানুষের অবিলম্বে রাজনীতি থেকে সরে যাওয়া উচিত বলে দাবি তুলেছেন নেটিজেনরা।
বিতর্কের সূত্রপাত রবিবার। চেন্নাইয়ে পড়ুয়াদের নিয়ে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন কমল হাসন। সেখানে পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলা নিয়ে মতামত চাওয়া হলে ‘মইয়ম’ নামের একটি পত্রিকায় লেখালেখির অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন তিনি। কমল হাসন জানান, ‘‘ওই পত্রিকায় কাজ করার সময় কাশ্মীর নিয়ে বিস্তর লেখালেখি করেছিলাম। এরকম পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে বলে তখনই আগাম জানিয়েছিলাম। আজ পর্যন্ত কাশ্মীরে গণভোট করা যায়নি কেন, প্রশ্ন তুলেছিলাম। জানতে চেয়েছিলাম, মানুষের মতামতে সরকারের এত ভয় কেন? কিন্তু লাভ হয়নি। এখন তো আর কিছু করার নেই। দেশভাগ হয়েই গিয়েছে। তা সত্ত্বেও গণভোট নিয়ে প্রশ্ন করে দেখতে পারেন। কেউ সায় দেবে না।’’
এমএনএম-এর বিবৃতি। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
আরও পড়ুন: দাদা মাসুদ আজহারের ছায়ায় পাকিস্তানে বসে জইশের ফিদায়েঁ অপারেশন চালাচ্ছে আসগর
আরও পড়ুন: বিজেপি, আরএসএস এই সুযোগে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করলে দেশ ক্ষমা করবে না: মমতা
তবে শুধু কাশ্মীর নয়, নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের পরিস্থিতিও যে হুবহু এক তাও তুলে ধরেন বর্ষীয়ান এই অভিনেতা। পাক কাশ্মীরকে আজাদ কাশ্মীর হিসাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘আজাদ কাশ্মীরে ট্রেনে জিহাদির ছবি আটকে তাদের হিরো হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে। আমাদের সে রাস্তায় না যাওয়াই ভাল।’’ দুই দেশের রাজনীতিকরা ঠিক থাকলে নিয়ন্ত্রণরেখায় ‘উত্পাত’ এড়ানো যাবে বলেও দাবি করেন তিনি। তাঁর যুক্তি, ‘‘কেন মারা যান সৈনিকরা? দেশরক্ষার ভার যাঁদের হাতে, এ ভাবে কেন প্রাণ হারাতে হবে তাঁদের? দুই দেশের নেতারা ঠিক থাকলেই, কাউকে মরতে হয় না। নিয়ন্ত্রণ রেখাতেও উত্পাত রোখা যাবে।’’
তাঁর মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধতে সময় লাগেনি। ‘নিজের বাড়িতে গণভোট করে দেখুন না, আপনাকেই বার করে দেবে’, এমন মন্তব্যও উড়ে আসে নেটিজেনদের কাছ থেকে। এমনকি ‘কমল হাসন দ্বিতীয় রাহুল গাঁধী। এই মুহূর্তে রাজনীতি থেকে সরে যাওয়া উচিত’ বলেও দাবি ওঠে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তামিলনাড়ুর ৪০টি আসনে প্রার্থী দাঁড় করাতে চলেছে কমল হাসনের দল মক্কল নিধি মাইয়ম। তার আগে দলনেতার মন্তব্যে পরিস্থিতি তেতে উঠতে দেখে তড়িঘড়ি সাফাই দিতে এগিয়ে আসে তারা। বলা হয়, এক দশক আগে মইয়ম পত্রিকায় লেখালেখি করতেন। সেই সময়ের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন তিনি। নতুন করে উপত্যকায় গণভোটের দাবি তোলেননি তিনি। একটি বিবৃতি প্রকাশ করে দলের তরফে বলা হয়, ‘কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যাঁরা দেশ রক্ষা করছেন, সেই সেনা, আধাসামরিক এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশে আছি আমরা।’ তাঁর মন্তব্য বিকৃত করা হয়েছে বলে দাবি করেন কমল হাসান নিজেও।
(কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy