নরেন্দ্র মোদী ও স্যাম পিত্রোদা। ফাইল চিত্র।
নির্বাচনের ঠিক আগে দলের বিদেশ শাখার প্রধান স্যাম পিত্রোদার পাকিস্তান নিয়ে মন্তব্যে নতুন করে বিতর্কে জড়াল কংগ্রেস। একটি সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আজ পিত্রোদা জানতে চান, ‘‘বালাকোটে বিমান হামলায় সত্যিই কি ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে?’’ পাশাপাশি পুলওয়ামা কাণ্ডের জন্য গোটা পাকিস্তানকে দায়ী না করে ইসলামাবাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। এর পরেই আক্রমণে নেমে পড়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কংগ্রেস ও গাঁধী পরিবারকে কটাক্ষ করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘পাকিস্তানের জাতীয় দিবস উদযাপনে নেমে পড়েছেন কংগ্রেস সভাপতির সব থেকে ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং উপদেষ্টা। আর তা শুরু হল দেশের সেনাবাহিনীকে অপমানের মধ্যে দিয়েই।’’
সংবাদসংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেন কংগ্রেস ও গাঁধী পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং দেশের টেলিকম বিপ্লবের অন্যতম রূপকার স্যাম পিত্রোদা। তাঁর প্রশ্ন ছিল, ‘‘২৬/১১-র সময়েও আট জন জঙ্গি পাকিস্তান থেকে এসে হামলা চালিয়েছে বলে আমরা সেই দেশের প্রত্যেক নাগরিককে এর জন্য দায়ী করতে পারতাম। সেই দেশে যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে প্রতিক্রিয়াও জানাতে পারতাম। কিন্তু এই মতে আমি বিশ্বাসী নই।’’ একই সঙ্গে বালাকোট বিমান হামলায় আদৌ কতজনের মৃত্যু হয়েছে, তাও জানতে চান পিত্রোদা। তাঁর প্রশ্ন ছিল, ‘‘সত্যিই কি ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমস-সহ সারা পৃথিবীর সংবাদমাধ্যম কিন্তু বলছে কেউ মারা যায়নি।’’ পাশাপাশি পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে আলাপ-আলোচনা শুরু করার পক্ষেও সওয়াল করেন স্যাম পিত্রোদা। একই সাক্ষাৎকারে নাম না করে নরেন্দ্র মোদীকে হিটলারের সঙ্গেও তুলনা করেন তিনি।
গাঁধী পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ স্যাম পিত্রোদার এই মন্তব্যের পরই আসরে নেমে পড়তে দেরি করেনি বিজেপি শিবির। সেই আক্রমণে নেতৃত্ব দিচ্ছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই। আগামী ২৩ মার্চ পাকিস্তানের জাতীয় দিবস। সেই প্রসঙ্গ এনে পিত্রোদাকে উদ্দেশ্য করে মোদী টুইট করেন যে, আসলে পাকিস্তানের জাতীয় দিবস উদযাপনের প্রস্তুতি শুরু করছে কংগ্রেস। একই সঙ্গে দেশের বিমানবাহিনীর দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার বিষয়টিও লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি। গাঁধী পরিবারকে তাক করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘কংগ্রেসের রাজ পরিবারের সব থেকে বিশ্বস্ত সভাসদ যা বলতে চেয়েছেন তা গোটা দেশ জানে। কংগ্রেস সত্যিই সন্ত্রাসের মোকাবিলা করতে চায় না। কিন্তু এটা নতুন ভারত। আমরা সন্ত্রাসবাদীদের তাদের ভাষাতেই মোকাবিলা করি।’’
Loyal courtier of Congress’ royal dynasty admits what the nation already knew- Congress was unwilling to respond to forces of terror.
— Narendra Modi (@narendramodi) March 22, 2019
This is a New India- we will answer terrorists in a language they understand and with interest! https://t.co/Mul4LIbKb5
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
শুধু নরেন্দ্র মোদী নন, স্যাম পিত্রোদার এই মন্তব্যকে নির্বাচনী লড়াই-এর অন্যতম অস্ত্র হিসেবে তুলে ধরতে আসরে নেমে পড়েছেন ছোট-বড় প্রায় সমস্ত বিজেপি নেতাই। বিজেপি নেতা অরুণ জেটলির মন্তব্য, ‘‘স্যাম পিত্রোদা বিশ্বাস করেন, আমরা ভুল করেছি। পৃথিবীর আর কোনও দেশ এই কথা বিশ্বাস করে না। এমনকি ইসলামিক দেশগুলির সংগঠনও আমাদের পাশে আছে। আমাদের দুর্ভাগ্য যে দেশের একটি রাজনৈতিক দলের তাত্ত্বিক নেতা হন এই ধরনের ব্যক্তি।’’
আরও পড়ুন: গাঁধীনগর থেকে আডবাণীকে সরিয়ে প্রার্থী অমিত, ‘মার্গদর্শক’ বিদায়ে কটাক্ষ কংগ্রেসের
কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়ছে বিতর্ক তৈরির পর স্যাম পিত্রোদা নিজের মন্তব্যে অনড় থাকায়। সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি ফের জানান, দেশের এক জন সাধারণ নাগরিক হিসেবে তিনি এই প্রশ্ন করেছেন। এই সাধারণ প্রশ্নকে অযথা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে জটিল করে তোলা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy