বিধি-বহাল: শবরীমালা মন্দিরে ঢুকতে গিয়ে হেনস্থা হওয়ার পরে মাধবী ও তাঁর পরিবারকে পুলিশ প্রহরা। বুধবার। ছবি: পিটিআই।
সুপ্রিম কোর্ট সব বয়সের মহিলাদের প্রবেশাধিকারের রায় দেওয়ার পরে বুধবার খুলল শবরীমালা মন্দির। কিন্তু রায়-বিরোধী বিক্ষোভকারীদের তাণ্ডবে প্রথম দিনে কোনও মহিলা মন্দিরে ঢুকতে পারলেন না।
প্রথা মেনে পাঁচ দিন ধরে পুজোর জন্য বুধবারই খুলেছে শবরীমালা মন্দির। ১০ থেকে ৫০ বছরের কোনও মেয়ের প্রবেশাধিকার এত দিন ছিল না এই মন্দিরে। এ নিয়ে বহু আন্দোলনের পরে সুপ্রিম কোর্ট রায়ে জানায়, মন্দিরের এই প্রবেশ বিধি মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল। উপাসনালয়ে সব মানুষের ঢোকার অধিকার থাকা উচিত। সেই রায়ের পরে এ দিন লিবি সিএস নামে এক সাংবাদিক ও মাধবী নামে অন্ধ্রের বছর ৪০-এর এক মহিলা মন্দিরের উদ্দেশে পায়ে হেঁটে রওনা হলেও বিক্ষোভকারীরা তাঁদের ঘিরে ধরে হেনস্থা করে। পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করার পরে দুই মহিলা ফিরে আসেন।
‘শবরীমালা বাঁচাও কমিটি’ নামে একটি সংগঠন এ দিন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল। মহিলা যাত্রীদের বাধা দেওয়ার হুমকিও তারা দেয়। সন্ধ্যা ৫টার সময়ে মন্দির খোলার কথা থাকলেও ভক্তরা সকালেই পাহাড়ের নীচে থেকে যাত্রা শুরু করেন। বিক্ষোভকারীরাও বাসে করে এসে জড়ো হন। তাদের মোকাবিলায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন হয়। কয়েক জন বন্ধুকে নিয়ে সাংবাদিক লিবি এবং ছেলে ও বাবা-মায়ের হাত ধরে মাধবী মন্দিরের দিকে এগিয়ে চলেন। কিন্তু মন্দির পর্যন্ত পৌঁছনোর আগেই ‘স্বামীয়ে শরণম আইয়াপ্পা’ স্লোগান দিতে দিতে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তৈরি করেন। দুই মহিলাকেও ঘিরে ধরেন। তাঁদের টানা-হেঁচড়াও করা হয়। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে লিবি ও মাধবীকে উদ্ধার করলেও, দুই মহিলার অভিযোগ— প্রশাসনের কর্তারা তাঁদের মন্দিরে না-যাওয়ার পরামর্শ দেন। এই কারণেই তাঁরা ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন।
তবে বিক্ষোভকারীদের হটাতে পুলিশ এ দিন দফায় দফায় লাঠি চালায়। বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতারও করে। বিক্ষোভকারীরাও পাল্টা ইট ছোড়ে পুলিশের গাড়িতে। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকরাও হামলার মুখে পড়েন।
কেরলের বাম সরকার সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানালেও বিরোধী কংগ্রেস ও বিজেপি সরকারের পাশে দাঁড়ায়নি। জাতীয় মহিলা কমিশন এ দিন সরকারকে চিঠি লিখে পরামর্শ দিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে সব বয়সের মহিলা যাতে শবরীমালা মন্দিরে বিনা বাধায় ঢুকতে পারে পুলিশ তার ব্যবস্থা করুক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy