ভারত-পাকিস্তান চিরাচরিত সংঘাতের বাতাবরণ ফের সামনে চলে এল। ছবি: সংগৃহীত।
গত কালই কর্তারপুর করিডরের ঘোষণায় তৈরি হয়েছিল সৌহার্দ্যের ছবি। আজ তা মুছে গিয়ে ভারত-পাকিস্তান চিরাচরিত সংঘাতের বাতাবরণই সামনে চলে এল।
গুরু নানকের জন্মোৎসবে ভারতীয় পুণ্যার্থীদের ঢালাও ভিসা দিয়েছিল পাক সরকার। কিন্তু গত দু’দিন পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনের অফিসারদের গুরুদ্বার নানকানা সাহিবে যেতে বাধা দেওয়া এবং তাদের হেনস্থা করার অভিযোগে উত্তাল হয়ে উঠেছে সাউথ ব্লক। এর কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে আজ। অভিযোগ, হাই কমিশনের কর্মীদের মাঝপথ থেকে ইসলামাবাদে ফিরে আসতে হয়।
ভারতের অভিযোগ শুধু বাধাদানই নয়, খলিস্তান নিয়ে শিখদের উস্কানি দেওয়ার কাজটিও করছে পাকিস্তান। বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হচ্ছে, ‘শিখ পুণ্যার্থীদের সফর চলাকালীন সাম্প্রদায়িকতা, অসহিষ্ণুতা এবং বিচ্ছিন্নতাবাদের প্রচার করছে পাকিস্তান— এ রকম কিছু রিপোর্ট আসায় ভারত উদ্বিগ্ন। পাকিস্তানের উদ্দেশ্য, ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে খর্ব করা। ইসলামাবাদকে জানানো হচ্ছে, সে দেশের মাটিকে কোনও ভাবেই ভারত-বিরোধী বিদ্বেষের প্রচারমঞ্চ যেন না করে তোলা হয়। এ কথাও আমরা মনে করিয়ে দিতে চাই যে গুরু নানকের ৫৫০ তম জন্মোৎসব পালনের জন্য ভারতীয় পুণ্যার্থীরা পাকিস্তানে গিয়েছেন। ইসলামাবাদ যে ঘোষিত উদ্দেশ্য নিয়ে ভিসা দিয়েছিল, তার সঙ্গে এই আচরণ মিলছে না।’
সাউথ ব্লকের বক্তব্য, ১৯৬১ সালের ভিয়েনা কনভেনশন এবং ১৯৭৪ সালের দ্বিপাক্ষিক প্রোটোকল অনুযায়ী দূতাবাসের কর্তারা স্বদেশের নাগরিক অথবা পুণ্যার্থীদের সঙ্গে সব সময়েই দেখা করতে পারেন, অথবা ধর্মস্থানে যেতে পারেন। পরবর্তী সময়ে ১৯৯২ সালে ভারত এবং পাকিস্তানে নিযুক্ত দূতাবাস কর্মীদের জন্য একটি আচরণবিধিও তৈরি হয়েছিল। পাকিস্তান গত দু’দিন সেই আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে।
সম্প্রতি এত কড়া পাকিস্তান-বিরোধী বিবৃতি ভারত থেকে দেয়নি। নতুন করে খলিস্তানিপন্থীদের যে নড়াচড়া শুরু হয়েছে তা নিয়ে নয়াদিল্লি যথেষ্ট চাপে। কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, ৩৮০০ শিখকে পাকিস্তানে নিয়ে গিয়ে তাদের সকলকে উগ্রপন্থায় দীক্ষিত করা সম্ভব নয়। তেমনটা হচ্ছেও না। কিন্তু বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, এই পুণ্যার্থীদের ১০ শতাংশকেও যদি পাকিস্তান মৌলবাদের দীক্ষা দিতে পারে, সেটাও যথেষ্ট ত্রাসের কারণ। কূটনীতিকদের কথায়, দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে ভারতকে চাপে রাখতে যে কোনও পথেই আইএসআই তথা পাক নেতৃত্ব হাঁটতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy