নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে ফের প্রকাশ্যে সরব হলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী।
নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে ফের প্রকাশ্যে সরব হলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী।
যা দেখে বিজেপির একাংশ এখন ঘরোয়া মহলে বলছেন, শুধু গডকড়ীর উচ্চাশা নয়, এটা আসলে মোদী-শাহের বিরুদ্ধে বিজেপিতে দীর্ঘদিন ধরে জমতে থাকা ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ। তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ, আরএসএসের ‘অভয়’ না থাকলে এ ভাবে ধারাবাহিক আক্রমণ করতে পারেন না গডকড়ীর মতো নেতা। রাজনাথ সিংহের মতো নেতারা বাইরে নীরব থেকে বিজেপির বিক্ষুব্ধ অংশ, অসন্তুষ্ট শরিক এমনকি বিরোধীদের কাছেও গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন। কিন্তু গডকড়ী প্রকাশ্যেই সমালোচনাটা করছেন। যা থেকে স্পষ্ট, বিজেপিতে মোদী-শাহের নেতৃত্ব আর চ্যালেঞ্জের ঊর্ধ্বে নয়। একদা মোদীর ঘোর সমর্থক, যোগগুরু রামদেবও আজ বলেন, ‘‘রাজনৈতিক পরিস্থিতি কঠিন। বলতে পারব না, পরের প্রধানমন্ত্রী কে।
আমি কাউকে সমর্থন বা বিরোধ করছি না। কোনও সাম্প্রদায়িক বা হিন্দু ভারত নয়, আধ্যাত্মিক দেশ ও বিশ্ব গড়তে চাই।’’
পাঁচ রাজ্যে হারের পরে পক্ষকালও অতিবাহিত হয়নি, গডকড়ী অন্তত তিন বার প্রকাশ্যে মোদী-শাহকে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন। প্রথম কয়েক বারে গডকড়ী যুক্তি দিয়েছিলেন, সংবাদমাধ্যম তাঁর মন্তব্য বিকৃত করছে। বিরোধীরাও ষড়যন্ত্র করছে দলের নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর বিবাদ বাধানোর। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বাসনা তাঁর নেই। কিন্তু একই কথা বারবার বলে ফের একই যুক্তি যে বারবার খাটে না, সেটি এখন বিজেপি নেতারাই কবুল করছেন।
এ বারে কী বলেছেন গডকড়ী?
গতকাল দিল্লিতে এক সরকারি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘আমি যদি দলের সভাপতি হতাম, তা হলে দলের কোনও সাংসদ বা বিধায়কের ব্যর্থতায় দায় নিতাম।’’ পাঁচ রাজ্যের হারের পর অমিত শাহ এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে দায় নেননি। এ খোঁচা যে সরাসরি অমিত শাহকেই, কারও বুঝতে অসুবিধা নেই। কিন্তু এখানেই থামেননি গডকড়ী। যে নেহরুকে মোদী রোজ কাঠগড়ায় দাঁড় করান, তাঁরই প্রশস্তি করেন বিজেপির এই প্রাক্তন সভাপতি। টেনে আনেন সহিষ্ণুতার প্রসঙ্গ। আরও এক ধাপ এগিয়ে মোদীকে বিদ্রুপ করে বলেন, ‘‘শুধু ভাল বক্তা হলেই ভোটে জেতা যায় না। বিদ্বান হলেই মানুষ ভোট দেয় না। যিনি ভাবেন সব জানেন, তিনি ভুল। মেকি বিপণন থেকে মানুষের দূরে থাকা উচিত।’’
বিজেপির একটি অংশ অবশ্য বোঝানোর চেষ্টা করছে, গডকড়ী বরাবরই সোজাসাপ্টা কথা বলেন। তাঁর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে। কিন্তু দলের ভিতরে মোদী-শাহের দাপটে যাঁরা অস্বস্তিতে, তাঁরাও এখন প্রশ্ন তুলছেন। কিন্তু একই সঙ্গে বলছেন, এর মানে এই নয়, লোকসভার আগে মোদী-শাহের নেতৃত্ব বদল হচ্ছে। কিন্তু গডকড়ী, রাজনাথ কিংবা শিবরাজ সিংহ চৌহানের মতো নেতারা নিজস্ব ভঙ্গিতে মোদী-শাহের থেকে দূরত্ব তৈরি করে একটি গ্রহণযোগ্য মুখ হয়ে উঠতে চাইছেন। ভোটের পর সংখ্যা মোদীর প্রতিকূল হলে, শরিক নির্ভরতা বাড়লে, এই নেতাদেরই কেউ বাজি মারতে পারেন।
গডকড়ীর ‘বিদ্রোহ’ দেখে কংগ্রেসের কপিল সিব্বল বলেন, ‘‘গডকড়ী সহিষ্ণুতা, ঐক্যের কথা বলছেন। যিনি নিজেকে সবজান্তা ভাবেন, তাঁকে ভুল বলছেন। মোদীর তো গডকড়ীর কথাই শোনা উচিত।’’ দিনভর এ নিয়ে তোলপা়ড় হলেও রাত পর্যন্ত গডকড়ীর নিজের এ ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy