রাজীব গাঁধীর কায়দাতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খুন করার চক্রান্ত হয়েছিল। আজ এমনটাই দাবি করেছে পুণের পুলিশ। সেখানকার আদালতে তারা জানিয়েছে, মাওবাদী সন্দেহে ধৃত এক ব্যক্তির কাছ থেকে পাওয়া চিঠিতে এই তথ্য জানা গিয়েছে।
আজই আবার মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসকে দু’-দু’টো হুমকি চিঠি পাঠিয়েছে মাওবাদীরা। গত সপ্তাহে চিঠি দু’টি পৌঁছয় মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘সম্প্রতি গড়ছিরৌলিতে অভিযান চালানোয় ৩৯ জন মাওবাদী নিহত হয়। তার পরেই ওই চিঠি।’’ ফডণবীস জানান, ওই চিঠি থেকে আরও বেশ কিছু তথ্য মিলেছে।
বুধবার মাওবাদী যোগসাজশের অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুণে পুলিশ। এঁরা হলেন— দলিত সমাজকর্মী সুধীর ধাওয়ালে, আইনজীবী সুরেন্দ্র গাডলিং, সমাজকর্মী মহেশ রাউত, সোমা সেন ও রনা উইলসন। দায়রা আদালতের কাছে পুলিশ জানিয়েছে, পাঁচ জনই জানুয়ারিতে ভিমা-কোরেগাঁও দলিত বিক্ষোভে যুক্ত ছিলেন। রনা উইলসন রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি সংক্রান্ত একটি কমিটির সদস্য। মোদীকে হত্যার ছক-সহ চিঠিটি পাওয়া গিয়েছে তাঁরই দিল্লির বাড়ি থেকে। সরকারি আইনজীবী উজ্জ্বলা পওয়ার আদালতে জানান, চিঠিটিতে লেখা রয়েছে, এম-৪ রাইফেল ও চার লক্ষ গুলি জোগাড় করতে ৮ কোটি টাকার প্রয়োজন। রাজীব হত্যাকাণ্ডের মতো আর একটি হত্যা করতে হবে, সে কথার উল্লেখ রয়েছে চিঠিতে। চিঠির একটি অংশে লেখা হয়েছে— ‘‘বিহার ও পশ্চিমবঙ্গে হার হলেও ১৫টিরও বেশি রাজ্য বিজেপির দখলে। এই গতিতে যদি চলতে থাকে, দলের সব শাখাকেই প্রবল সমস্যায় পড়তে হবে...। মোদী যুগ শেষ করতে কয়েক জন প্রবীণ নেতা এই প্রস্তাব এনেছেন।’’
অভিযুক্তদের আইনজীবীর দাবি, পুলিশ যে চিঠি দেখাচ্ছে, সেটি ভুয়ো। ধৃত পাঁচ জনকে ফাঁসানো হচ্ছে। সরাসরি সে কথা না বললেও, একই সুর গুজরাতের বিধায়ক জিগ্নেশ মেবানীর গলায়। ভিমা-কোরেগাঁও সংঘর্ষে মূল অভিযুক্ত দুই হিন্দুত্ববাদী নেতা মিলিন্দ একবোটে ও সম্বাজি ভিড়ে এখনও অধরাই। টুইটারে আজ সেই খোঁচাই দিয়েছেন জিগ্নেশ। লিখেছেন, ‘‘এ সব দলিত আন্দোলনের উপর আক্রমণ।’’
এই বিষয় নিয়ে মহারাষ্ট্রের দলিত নেতা ও মোদীর মন্ত্রী রামদাস আটওয়ালের মন্তব্যও কংগ্রেসের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে। তিনি আজ মন্তব্য করেন, ‘‘অম্বেডকরের অনুগামীরা মাওবাদী হতে পারেন না। ভিমা-কোরেগাঁও দলিত বিক্ষোভে কোনও মাওবাদী যুক্ত ছিল না। তবে দেশ বিরোধীরাই মোদীকে হত্যার চক্রান্ত করতে পারে।’’ এর পরেই কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘মোদীর মন্ত্রী নাকি তদন্তকারীরা ঠিক কথা বলছেন, তা বোঝা যাচ্ছে না।’’ আর কংগ্রেসের সঞ্জয় নিরুপমের দাবি, ‘‘যখনই মোদীর জনপ্রিয়তা কমে যায়, তখনই হত্যার ছকের কথা বলা হয়। চিঠিকে মিথ্যে বলছি না। তবে এই বিষয়টাও দেখা দরকার।’’
হত্যার চিঠির কথা প্রকাশ পেতেই অরুণ জেটলি ব্লগে লিখেছেন, ‘‘মাওবাদী কার্যকলাপ বাড়ছে। সব দলেরই উচিত বিষয়টাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা।’’ নামেন রামদেব, শ্রী শ্রী রবিশঙ্করও। টুইট করে উচ্চ স্তরের তদন্তের দাবি করেন রামদেব। মোদীকে খুনের ছক নিয়ে রাজনীতির উপরে উঠে সব দলকে সহযোগিতার আর্জি জানান তাঁরা। তবে সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘‘নিরাপত্তা সংস্থা তাদের কাজ করবে। আদালতকেই সিদ্ধান্ত নিতে দেওয়া হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy