রামপুরের সভায় কেঁদে ফেললেন জয়াপ্রদা। ছবি: টুইটারের ভিডিয়ো থেকে নেওয়া
এক সময় সমাজবাদী পার্টিতে তাঁরা সহকর্মী ছিলেন। অথচ সেই দলেরই নেতা আজম খানের জন্যই নাকি রামপুর ছাড়তে হয়েছিল জয়াপ্রদাকে। সে কথা স্মরণ করতে গিয়ে প্রকাশ্য জনসভায় কেঁদে ফেললেন অভিনেত্রী। প্রাক্তন সমাজবাদী পার্টি সাংসদ জয়াপ্রদার অভিযোগ, এক সময় তাঁর উপর অ্যাসিড হামলার চেষ্টা করেছিলেন আজম খান। সেই কারণেই তিনি রামপুর ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন, দাবি এ বারের লোকসভা ভোটে রামপুরের বিজেপি ্প্রার্থীর।
২০০৪ সালে সমাজবাদী পার্টির টিকিটে উত্তরপ্রদেশের রামপুর কেন্দ্র থেকে প্রথম সাংসদ হন জয়াপ্রদা। পরের বার ২০০৯ সালেও মুলায়মের দলের হয়েই রামপুর কেন্দ্র থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। কিন্তু পরের বছর ২০১০ সালে দলবিরোধী কাজের অভিযোগ তুলে তাঁকে বহিষ্কার করে এসপি। জয়াপ্রদা ছিলেন অমর সিংহ ঘনিষ্ঠ। অমর সিংহ ধীরে ধীরে দলে কোণঠাসা হয়ে পড়তেই অভিনেত্রী সাংসদকে বরখাস্ত করে দল। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, এই বহিষ্কারের ক্ষেত্রেও আজম খান গোষ্ঠী ছিল অন্যতম।
মাঝে ২০১৪ সালে অজিত সিংহর রাষ্ট্রীয় লোক দল (আরএলডি)-র টিকিটে বিজনৌর কেন্দ্র থেকে দাঁড়ালেও হেরে যান জয়াপ্রদা। এর পর সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দিয়ে এ বার লোকসভা ভোটে ফের রামপুরেই প্রার্থী হয়েছেন জয়াপ্রদা। বুধবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর জোর কদমে নেমে পড়েছেন প্রচারেও। বুধবারই ছিল রামপুরে একটি নির্বাচনী প্রচার সভা।
#WATCH: BJP candidate for #LokSabhaElections2019 from Rampur, Jaya Prada, breaks down while addressing a public rally; says, "Mai Rampur nahi chhodna chahti thi...Mai Rampur isliye chhod gayi, kyonki mujhe us din tezab se attack karne ke liye socha tha, mere upar hamla kiya tha" pic.twitter.com/HaWRRlHjq1
— ANI UP (@ANINewsUP) April 3, 2019
সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে পুরনো দিনের কথা স্মরণ করছিলেন জয়াপ্রদা। বলছিলেন, ‘‘আমি রামপুর ছাড়তে চাইনি। কিন্তু সেই সময় এমন পরিস্থিতি ছিল যে, কাউকে কাজই করতে দিত না। কেউ ওদের (আজম খান গোষ্ঠী) বিরুদ্ধে কথা বললেই জেলে পুরে দিত। আমি রামপুর ছেড়েছি, কারণ ওই দিন আমার উপর অ্যাসিড আক্রমণের পরিকল্পনা করেছিল। আমার উপর হামলা হয়েছিল।’’ তবে ওই দিন বলতে ঠিক কবেকার কথা বলতে চেয়েছেন জয়াপ্রদা, তা স্পষ্ট নয়। রাজনৈতিক শিবিরের ব্যাখ্যা, সম্ভবত দল থেকে বহিষ্কারের সময়ের কথাই বলতে চেয়েছেন বলিউড তারকা।
আরও পডু়ন: মাঠ দেখে খুশি মোদী, উপচে গেল মমতার সভা
আরও পডু়ন: বীরভূমে চাই ১২ লক্ষ ভোট! অনুব্রতের দাবিতে চোখ কপালে নেতা-কর্মীদের
কিন্তু ওই কথা বলার পরই আর আবেগ ধরে রাখতে পারেননি জয়া। বক্তৃতা থামিয়ে দিয়ে মাথা নিচু করে বেশ কিছুক্ষণ নীরব ছিলেন তিনি। এক জন জলের বোতলও এগিয়ে দেন। খানিকক্ষণ পর কিছুটা সামলে নিয়ে ফের বক্তৃতা শুরু করেন রামপুরের প্রাক্তন সাংসদ। আজম খানের নাম না করলেও তাঁর নিশানায় যে আজম খানই ছিলেন, তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।
কে এই আজম খান? উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে অত্যন্ত প্রভাবশালী এসপি-র এই বিধায়ক। রামপুর কেন্দ্র থেকেই বিধায়ক হয়েছেন ৯ বার। সমাজবাদী পার্টি ক্ষমতায় থাকার সময় উত্তরপ্রদেশ মন্ত্রিসভায় তিনি ছিলেন সবচেয়ে বর্ষীয়ান মন্ত্রী। জয়াপ্রদা এসপি থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর থেকেই তাঁর সঙ্গে আজম খানের কার্যত আদায় কাঁচকলায় সম্পর্ক। দু’জনের মধ্যে বিতর্কিত বাগযুদ্ধ উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে পরিচিত দৃশ্য।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কখনও আজম খানকে ‘আলাউদ্দিন খিলজি’র সঙ্গে তুলনা করেছেনজয়াপ্রদা। পাল্টা আজম আবার জয়াপ্রদাকে ‘নাচনেওয়ালি’ বলে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন। জয়াপ্রদার এমন অভিযোগও রয়েছে যে, তাঁর ছবি এডিট করে সিডি বানিয়ে সেই ছবি ছড়িয়েছিলেন আজম খান। আবার রামপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী হিসেবে জয়াপ্রদার নাম ঘোষণা হওয়ার পর আজম খানের ঘনিষ্ঠ এসপি নেতা ফিরোজ খান বলেছিলেন, এবার ‘ঘুংরু’ এবং ‘ঠুমকা’ দিয়ে রামপুরের মানুষকে আনন্দ দেবেন জয়াপ্রদা। তার জেরে নির্বাচন কমিশন ফিরোজ খানকে নোটিসও ধরিয়েছে। দায়ের হয়েছে মামলাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy