সুবিধাজনক: সেই গুহার অন্দর। ছবি: জিএমভিএনের ওয়েবসাইট থেকে
রাজার ঘরে যে ‘ধ্যান’ রয়েছে, প্রজার ঘরেও সে ‘ধ্যান’ রয়েছে!
বাস্তবিকই তাই।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শেষ পর্বের ভোটের আগে কেদারনাথের গুহায় এক রাত্রি ধ্যান করেছেন। ইচ্ছে হলে আপনিও কেদারনাথের সেই গুহায় রাত কাটাতে পারেন। সেখানে ধ্যান করতে পারেন বা না-ও পারেন। গুহা-বাসের জন্য মাত্র ৯৯০ টাকা ভাড়া গুনতে হবে।
ভয় পাবেন না। প্রাকৃতিক গুহা হলেও, পাথর দিয়ে তৈরি বাইরের দেওয়ালে শক্তপোক্ত কাঠের দরজা রয়েছে। বিদ্যুৎ রয়েছে। সুইচ টিপলেই আলো। জল গরমের জন্য মিলবে গিজার, আছে রুম হিটার। সকাল-সন্ধ্যায় চা। প্রাতঃরাশ, মধ্যাহ্নভোজন, নৈশভোজ-ও। এর পরেও কিছু দরকার পড়লে গুহায় বসে ঘন্টি বাজালেই হাজির হবেন বেয়ারা। ভাববেন না, প্রাতঃকৃত্য করতে বা স্নানের জন্য বরফ ঠান্ডা মন্দাকিনীর জলে নামতে হবে। গুহার সঙ্গেই রয়েছে শৌচালয়, স্নানের জায়গাও। এ ছাড়াও জরুরি প্রয়োজনে পর্যটকেরা টেলিফোন ব্যবহারের সুবিধা পাবেন।
মোদী যে গুহায় ধ্যান করেছেন, সেই গুহাতেই এই সব রকম সুবিধা ছিল। চাইলে যে কেউ গঢ়বাল মণ্ডল বিকাশ নিগম (জিএমবিএন)-এর তৈরি এই গুহা ভাড়া নিতে পারেন। বস্তুত, গত সেপ্টেম্বর থেকে ওই গুহা পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। বরফ পড়ার আগে, ঠান্ডা পড়তে শুরু করায় দু’টি মাত্র বুকিং হয়েছিল। এ বার মোদীর আগে মহারাষ্ট্রের বোরিভলির জয় শাহ নামে এক যুবক গুহায় রাত কাটিয়ে গিয়েছেন। তিনি অবশ্য বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের পুত্র জয় শাহ নন।
নিগমের কর্তাদের বক্তব্য, গত মরসুমে ভাড়াটাও অনেক বেশি ছিল। মাথা পিছু তিন হাজার টাকা। নিয়ম ছিল, অন্তত তিন দিনের জন্য বুকিং করতে হবে। এ বার ভাড়াও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিন দিনের শর্তও তুলেও দেওয়া হয়েছে। গঢ়বাল মণ্ডল বিকাশ নিগমের জেনারেল ম্যানেজার বি এল রানা বলেন, ‘‘গত বছরে ওই গুহায় রাত্রি বাস চালু হওয়ার পর থেকে পর্যটকদের তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। মূলত, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং বেশি ভাড়ার জন্যই সম্ভবত পর্যটকদের তেমন ভাবে আকৃষ্ট করা যায়নি।’’
নিগম কর্তাদের দাবি, এইরকম একটি গুহা তৈরির ভাবনা নরেন্দ্র মোদীরই মস্তিষ্কপ্রসূত। মূলত ধ্যানের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে এমন পরিকল্পনা।
প্রধানমন্ত্রী যে গুহায় ধ্যান-মগ্ন হয়েছিলেন, সেটি কেদারনাথ মন্দির থেকে এক কিলোমিটার উপরে বাঁ দিকের একটি পাহাড়ের উপর অবস্থিত। ওই গুহাটির বিপরীতে রয়েছে কেদারনাথ মন্দির এবং ভৈরবনাথ মন্দির। বুকিংয়ের তারিখের দু’দিন আগে সংশ্লিষ্ট পর্যটককে গঢ়বাল মণ্ডল বিকাশ নিগমের গুপ্তকাশি দফতরে যোগযোগ করতে হবে। ওই গুহায় এক জনই থাকতে পারবেন। নিগমের গুপ্তকাশী এবং কেদারনাথ অফিসে পর্যটকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে। চিকিৎসকেরা অনুমতি দিলে তবেই ওই ব্যক্তি গুহায় থাকার অনুমতি পাবেন।
নিগমের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গুহায় থাকার জন্য বুকিং করা হয়। সেখানে নিগমের একটি ‘নো অবজেকশন’ ফর্মপূরণ করতে হয়। বুকিং করার পর কেউ তা বাতিল করলে টাকা ফেরতযোগ্য নয়।
ধ্যান-গুহার পরিষেবা যেন কোনও ভাবে বিঘ্নিত না হয়, তা নিশ্চিত করতে সব সময় তৎপর নিগম কর্তৃপক্ষ। চলতি সপ্তাহেও নিগমের একটি দল ওই গুহা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেছে। রানা বলেন, ‘‘আবহাওয়ার কারণে পরিষেবায় যেন বিঘ্ন না ঘটে সে জন্যই পরীক্ষা করে দেখা হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy