অমেঠীর বিজেপি প্রার্থী স্মৃতি ইরানি। —ফাইল চিত্র
স্মৃতি ইরানির ‘ডিগ্রি বিভ্রাট’-এ নতুন সংযোজন। এ বার শুরু হয়ে গেল আইনি লড়াইও। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে লখনউয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন লখনউ শহর কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের চেয়ারম্যান তৌহিদ সিদ্দিকি। শনিবার দায়ের করা ওই অভিযোগে সিদ্দিকির দাবি, মনোনয়নের সঙ্গে দেওয়া হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন স্মৃতি। ‘জালিয়াতি’ এবং ‘প্রতারণা’র অভিয়োগ এনে স্মৃতির বিরুদ্ধে ‘যথাযথ’ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানিয়েছেন সিদ্দিকি। যদিও এ নিয়ে এখনও নির্বাচন কমিশনের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
সিদ্দিকি অভিযোগ পত্রে লিখেছেন, ‘‘২০১৪ সালে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া মনোনয়নে স্মৃতি জানিয়েছিলেন, তিনি ১৯৯৪ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কমার্সে স্নাতক হয়েছিলেন। কিন্তু এ বার লোকসভা ভোটের মনোনয়নে তিনি তথ্য দিয়েছেন, তিনি স্নাতক ডিগ্রি সম্পূর্ণ করেননি।’’ সিদ্দিকি বলেন, নির্বাচন কমিশনে হলফনামা দিয়ে মিথ্যা কথা বলেছেন উনি। এটা নথি জাল করা এবং প্রতারণার সামিল।’’
বিতর্কের সূত্রপাত গত বৃহস্পতিবার। রোড শো করে অমেঠী কেন্দ্রে মনোনয়ন জমা দেন স্মৃতি। প্রার্থীদের মনোনয়নের সঙ্গে সম্পত্তি, আয় ব্যয়, প্যান কার্ডের কপি এবং বহু ব্যক্তিগত তথ্যের সঙ্গে শিক্ষাগত যোগ্যতাও হলফনামার আকারে জমা দিতে হয় নির্বাচন কমিশনে। সেই হলফনামা কমিশনের ওয়েবসাইটেও আপলোড করা হয়, যাতে সাধারণ ভোটাররা প্রার্থীর সম্পর্কে সব তথ্য জানতে পারেন। স্মৃতির হলফনামা কমিশনের ওয়েবসাইটে আপলোড হতেই দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে বিতর্ক। বেজায় অস্বস্তিতে পড়ে বিজেপি।
এ বারের লোকসভা ভোটে নির্বাচন কমিশনে স্মৃতি ইরানির হলফনামার সঙ্গে দেওয়া শিক্ষাগত যোগ্যতা।
আরও পডু়ন: স্মৃতির পাশে জেটলি, প্রশ্নে রাহুলের ডিগ্রি
আরও পডু়ন: বারাণসীতে কি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কাই? জল্পনা জিইয়ে রাখল কংগ্রেস
কেন অস্বস্তি? কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় দেখা যায়, তিনি স্নাতক নন। অথচ ২০১৪ সালে এই অমেঠী কেন্দ্রেই মনোনয়নের সঙ্গে যে হলফনামা দিয়েছিলেন, তাতে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কমার্সে স্নাতক বলে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছিল। হলফনামার এই ‘বিভ্রাট’ নিয়ে কংগ্রেস তুমুল আক্রমণ শুরু করে বিজেপিকে। এক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কী ভাবে এ রকম মিথ্যা তথ্য দিতে পারেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে স্মৃতির প্রার্থীপদ বাতিলের দাবি জানান কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সূরযেওয়ালা। পাশাপাশি স্মৃতির ছ’মাস জেল/ জরিমানার দাবিও করেন তিনি। বলেন, অশিক্ষিত মানুষ উঁচু পদে বসতেই পারেন। সেটা নিয়ে আপত্তি নেই। কিন্তু মানুষকে বার বার মিথ্যা তথ্য দিয়ে বোকা বানানো অন্যায়। জনপ্রিয় টেলি ধারাবাহিকে স্মৃতির অতীত স্মৃতি টেনে উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীর কটাক্ষ ছিল, ‘কিউকি মন্ত্রী ভি কভি গ্র্যাজুয়েট থি’।
২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে নির্বাচন কমিশনে স্মৃতি ইরানির হলফনামার সঙ্গে দেওয়া শিক্ষাগত যোগ্যতা।
প্রবল অস্বস্তির ঢাকতে শনিবার স্মৃতির হয়ে ব্যাট ধরেন অরুণ জেটলি। স্মৃতির বিরুদ্ধে অমেঠীর প্রার্থী কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর ডিগ্রি নিয়েও পাল্টা প্রশ্ন তোলেন। কিন্তু এই রাজনৈতিক তরজা, চাপানউতরের মধ্যেই সিদ্দিকীর অভিযোগের জেরে এ বার আইনি লড়াইও শুরু হয়ে গেল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy