জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকের পর সাংবাদিক বৈঠকে অরুণ জেটলি। পিটিআই-এর তোলা ফাইল ছবি
গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স (জিএসটি) বা পণ্য পরিষেবা করের হার কি শূন্যে নামিয়ে আনা সম্ভব? অরুণ জেটলি মনে করেন, সব না হলেও অন্তত নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে হতেই পারে। একটি ফেসবুক পোস্টে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর দাবি, একটা সময় কিছু পণ্যে শূন্য শতাংশ জিএসটি, কিছু পণ্যে ৫ শতাংশ এবং বিলাসিতা ও ক্ষতিকারক দ্রব্যে (সিন গুডস)একটি নির্দিষ্ট হারে জিএসটি ধার্য করার মতো শক্তিশালী হতে পারে দেশের অর্থনীতি।
দু’দিন আগেই ২৩টি পণ্যে জিএসটি-র হার কমিয়ে ১৮ শতাংশের নীচে নিয়ে আসার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন অরুণ জেটলি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা অবশ্য মনে করেন, তিন রাজ্যে বিধানসভা ভোটে হারের ধাক্কা খেয়ে লোকসভা ভোটের মুখে আমজনতার মন পেতেই জিএসটিতে এই ছাড়। বিরোধী কংগ্রেসের খোঁচা, ‘‘হঠাৎ শীত ঘুম থেকে জেগে উঠেছেন প্রধানমন্ত্রী।’’
তবে সেসবে কান না দিয়ে এবং এখানেই না থেমে আরও কত এবং কীভাবে জিএসটি-র হার কমানো সম্ভব, তার পথ বাতলেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। দু’দিন আগের জিএসটি কমানোর বিষয়টি উল্লেখ করে ফেসবুকে জেটলি লিখেছেন, ‘‘জিএসটি-র পরিবর্তন সম্পূর্ণ। প্রথম ধাপে বিলাসিতা ও ক্ষতিকারক দ্রব্য ছাড়া সব পণ্যকে ২৮ শতাংশ হারে জিএসটি নামিয়ে আনার প্রথম ধাপ প্রায় সম্পূর্ণ। ভবিষ্যতের লক্ষ্য হিসেবে ১৮ এবং ১২ শতাংশ হারে দু’টি জিএসটি-র হারের বদলে দু’টির মাঝামাঝি একটি হারে জিএসটি নির্দিষ্ট করার দিকে এগনো যেতে পারে। অবশ্যই এটা এক দিনে সম্ভব নয়, পর্যাপ্ত সময় লাগবে। এবং সেই লক্ষ্যমাত্রার পর জিএসটির হার শুধুমাত্র ০% এবং ৫% করার দিকে অগ্রসর হওয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন: পর্ন সাইট রুখতে গিয়ে খাল কেটে কুমির ডেকে আনল কেন্দ্র?
‘জিএসটি-র ১৮ মাস’ নামে দীর্ঘ ওই পোস্টে জিএসটি চালুর আগের পরিস্থিতি, চালুর পরের অবস্থা এবং বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে জেটলি সবিস্তার আলোচনা করেছেন। তাতে দেখাতে চেয়েছেন, জিএসটি চালুর আগে কীভাবে পরোক্ষ কর জিএসটি-র চেয়েও বেশি ছিল। তার পর ২০১৭-র জুলাইয়ে চালুর পর কীভাবে সেই সব প্রত্যক্ষ করকে এক ছাতার তলায় এনে জিএসটি-র আকারে চালু করা হয়েছে। তাতে যে কর আদায়ের ভিত্তি বেড়েছে, তাও বোঝাতে চেয়েছেন জেটলি।
আরও পড়ুন: ঘন কুয়াশায় ঢাকা রাস্তায় পর পর ৫০ গাড়ির ধাক্কা, আট জনের মৃত্যু
অন্য একাধিক পোস্টে কংগ্রেস তথা ইউপিএ জমানার কর নীতির সমালোচনাও করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। বলেছেন, আগে পরোক্ষ ভাবে ৩১ শতাংশ কর নেওয়া হত। ক্রমাগত জিএসটি চালুর বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। দায়িত্বজ্ঞানহীন রাজনীতি ও অর্থনীতি বাস্তবে তলানির দিকেই ঠেলে দেয়।
তবে পাল্টা কটাক্ষ করেত ছাড়েনি কংগ্রেসও। অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘তিন রাজ্যে হারের ধাক্কাতেই কি জিএসটি-তে এই ছাড়। রাহুল গাঁধী তো বলেই দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর শীত ঘুমে হঠাৎ ধাক্কা লেগে জেগে উঠেছেন।’’ একটি প্রচলিত প্রবাদবাক্যকে কিছুটা পাল্টে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের খোঁচা, ‘‘বিজেপি এবং এনডিএ সরকারের মন্ত্রই ছিল, ‘কোনও কিছু না দেখেই ঝাঁপ দাও’ (লিপ বিফোর ইউ লুক)।’’
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy