পাঁচ রাজ্যে বিজেপির হার। দরজায় কড়া নাড়ছে লোকসভার ভোট। বিজেপির আসন কমলে কি নরেন্দ্র মোদীর বদলে অন্য কোনও নেতাকে প্রধানমন্ত্রী করতে চাইবেন শরিকরা? তাই কি নিতিন গডকড়ী, রাজনাথ সিংহ, শিবরাজ সিংহ চৌহানরা স্বতন্ত্র গ্রহণযোগ্য ভাবমূর্তি তৈরির চেষ্টা করছেন?
এ বছরের গোড়ার দিক। বিরোধী জোট তখনও দানা বাঁধেনি। সংসদের সেন্ট্রাল হলে ঘরোয়া আলোচনায় রাহুল গাঁধী বলেছিলেন, লোকসভায় বিজেপির সংখ্যা কমলে এনডিএ-র শরিকদের উপর নির্ভরতা বাড়বে। তখন রাজনাথ বা গডকড়ীর মতো কাউকে প্রধানমন্ত্রী চাইবে শরিকরা।
বছর প্রায় শেষের মুখে বিরোধীদের সেই ছবি বদলেছে। বিরোধীরা এখন অনেক জোটবদ্ধ। অন্য দিকে পাঁচ রাজ্যে শোচনীয় হারের পরে বিজেপিতে মুখ বদলের প্রশ্নটি ফিরেছে। বিজেপি-সঙ্ঘের অন্দরে কান পাতলে এমন সম্ভাবনা উড়িয়েও দিচ্ছেন না অনেকে।
বিষয়টি দানা বেঁধেছে সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের বিদর্ভের কৃষক নেতা কিশোর তিওয়ারির লেখা একটি চিঠি ঘিরে। মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকারের ‘প্রতিমন্ত্রী’র মর্যাদাপ্রাপ্ত এই নেতা আরএসএসের দুই শীর্ষ নেতা মোহন ভাগবত এবং ভাইয়াজি জোশীকে লিখেছেন, মোদীর মতো ‘ঔদ্ধত্যে’ ভরা নেতার বদলে গডকড়ীর মতো কাউকে মুখ করা হোক। না হলে পাঁচ রাজ্যের দশা হবে লোকসভাতেও।
এর পরেই খোদ গডকড়ীর কিছু মন্তব্য জল্পনা বাড়িয়েছে। গডকড়ীর সাম্প্রতিকতম মন্তব্যটি গত কাল, পুণেতে। যেখানে তিনি বলেছেন, ‘‘শক্তিশালী নেতা হারের দায় নেন।’’ পাঁচ রাজ্যের হারের পরেও মোদী-শাহ যেটা করেননি। তাঁর মন্তব্য মোদী-শাহের দিকে, এই প্রচার হতেই আজ গড়কড়ী বলেন, দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর বিবাদ দেখানোর ‘ষড়যন্ত্র’ চলছে। তাঁর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বাসনা নেই।
বিরোধীরা বলছেন, বিষয়টি এত সরল নয়। মোদী-শাহ যেমন বিরোধীদের সঙ্গে কথাই বলেন না, রাজনাথ আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কেজরীবালের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। বিরোধীদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যও তিনি। গডকড়ীকে নিয়ে জল্পনা আছেই। মধ্যপ্রদেশে ভোট শুরুর মুখেই সুষমা স্বরাজের আর ভোটে না লড়ার ঘোষণা উল্লেখযোগ্য। আর মধ্যপ্রদেশে হারলেও শিবরাজ কিন্তু বিরোধীদের প্রশংসা কুড়োচ্ছেন।
শরিক হলেও নীতীশ যে কাঁটা, তা জানেন মোদী-শাহ। একই অবস্থা অকালির। শিবসেনা শুধু ‘একলা চলো’ ঘোষণা করেনি, মোদীকে খোঁচা দিয়ে রাহুলের প্রশস্তিও করছে। আর উপেন্দ্র কুশওয়াহার মতো এনডিএ-ত্যাগীরা সরাসরিই বলছেন, এনডিএতে কোনও সম্মান নেই।
ব্যতিক্রম অরুণ জেটলি। জিএসটি থেকে বিহারে শরিকি জট— বারেবারে ত্রাতা হয়ে উঠে এই প্রজন্মের নেতাদের মধ্যে তিনিই মোদীর একমাত্র স্বস্তি।
যশবন্ত সিন্হার মতো বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতার মতে, ‘‘বিজেপিতে এখনও মোদী-শাহের যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ আছে। তৃতীয় কাউকে তাঁরা প্রধানমন্ত্রী হতে দেবেন না।’’ কংগ্রেস বলছে, ‘‘পাঁচ রাজ্যের ফল দেখিয়েছে, মোদী-শাহকে হারানো সম্ভব। এ বারে সব বিরোধী একজোট হয়ে বিজেপিকে হারাবে। বিজেপির জাহাজ ডুবছে বুঝেই তাদের সমঝদার নেতারা মোদী-শাহের থেকে দূরত্ব বাড়াচ্ছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy