Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Rajnikanth

‘ঈশ্বরের সাবধানবাণী’, রাজনীতিতে আসছেন না রজনী

থালাইভার আজকের সিদ্ধান্ত ঘিরে রাজনীতির অলিন্দে জোরদার জল্পনা শুরু হয়েছে।

রজনীকান্ত

রজনীকান্ত

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:৫৮
Share: Save:

ঠিক ছিল আগামী ৩১ ডিসেম্বর তিনি ঘোষণা করবেন, তাঁর রাজনীতির ময়দানে অবতীর্ণ হওয়ার দিনক্ষণ। কিন্তু তার দু’দিন আগেই রজনীকান্ত জানালেন, শরীর বাধ সেধেছে। তাই এখনই রাজনীতিতে আসছেন না তিনি। তাঁর রাজনীতিতে না-আসার কারণ উল্লেখ করে টুইটারে আজ নিজের লিখিত বক্তব্য পোস্ট করেছেন এই দক্ষিণী সুপারস্টার। তাঁর সাম্প্রতিক অসুস্থতাকে ‘ঈশ্বরের সাবধানবাণী’ হিসেবে দেখছেন রজনীকান্ত।

থালাইভার আজকের সিদ্ধান্ত ঘিরে রাজনীতির অলিন্দে জোরদার জল্পনা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, শুধু শারীরিক কারণেই কি এই সিদ্ধান্ত? নাকি দ্রাবিড় রাজনীতির সমীকরণ সহজ নয় বুঝেই সরে গেলেন রজনীকান্ত।

বছর চারেক আগে কিডনি প্রতিস্থাপন হয়েছে রজনীকান্তের। তাই ৭০ বছরের এই দক্ষিণী সুপারস্টারকে ভোট ময়দানে নামতে দিতে বরাবরই আপত্তি ছিল তাঁর চিকিৎসকেদের। কিন্তু আপত্তিকে গুরুত্ব না-দিয়ে রাজনীতিতে আসার কাজ এবং শ্যুটিং সমান ভাবে চালিয়ে যাচ্ছিলেন থালাইভা। শ্যুটিং শুরু করেছিলেন তাঁর ১৬৮ নম্বর ছবি ‘অন্নাথে’-র। হায়দরাবাদে শুটিং চলাকালীন আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন রজনীকান্ত। হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল তাঁকে। গত পরশু হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি। তাঁর বিবৃতিতে রজনীকান্ত লিখেছেন, ‘‘আমার হাসপাতালে ভর্তি হওয়াটা ঈশ্বরের সাবধানবাণী। অতিমারি পরিস্থিতি আমার শরীরের উপরে প্রভাব ফেলতে পারে।’’

রাজনীতিতে না-আসার কথা জানাতে গিয়ে রজনীকান্ত লিখেছেন, ‘‘ভারাক্রান্ত মনে জানাচ্ছি যে রাজনীতিতে আসছি না। এই সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে আমাকে কতটা কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে, তা শুধু আমিই জানি। নির্বাচনী রাজনীতিতে যোগ না-দিয়েও মানুষের সেবা করব। এই সিদ্ধান্তে আমার অনুগামী ও আমজনতা দুঃখ পাবেন। কিন্তু আপনারা আমাকে ক্ষমা করুন।’’

আজ থেকে ঠিক এক মাস আগে চেন্নাইয়ে তাঁর দল রজনী মাক্কাল মান্দ্রাম-এর জেলা সম্পাদকেরা-সহ ৫২ জনকে নিয়ে বৈঠক করেছিলেন এই দক্ষিণী সুপারস্টার। নির্বাচনী রাজনীতিতে নামার ব্যাপারেও কথা হয়। জল্পনা শুরু হয়েছে এক মাসের মধ্যে কী এমন হল যে রাজনীতিতে যোগ না-দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন থালাইভা! রাজনৈতিক সূত্রের মতে, রজনীকান্ত নাকি তাঁর ঘনিষ্ঠদের বলেছেন, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে মাত্র ১৫ শতাংশ ভোট পাবেন। ওইটুকু ভোটের জন্য লড়ার অর্থ হয় না। রজনীকান্ত চেয়েছিলেন ভোট রাজনীতিতে তাঁর অভিষেক হোক এম জি রামচন্দ্রনের মতো। ভোটযুদ্ধে নেমেই এমজিআর ৩০ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর আগে দীর্ঘ দিন ধরে নিজের জমি প্রস্তুত করেছিলেন এমজিআর। রজনী কিন্তু সেই কাজ একেবারেই করেননি। তামিলনাড়ুতে বিধানসভা নির্বাচনের মাসপাঁচেক আগে তিনি ভোটে লড়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন।

ওই রাজনৈতিক সূত্রটি আরও মনে করিয়ে দিচ্ছে, দ্রাবিড় রাজনীতিতে এখন বহু দল, বহু জোট— ডিএমকে-কংগ্রেস জোট, এডিএমকে-বিজেপি জোট, দিনাকরণ-শশীকলা, বামপন্থীরা, ভাইকো, বিজয়কান্তেরা রয়েছেন। জানুয়ারিতে মুক্তি পাওয়ার সম্ভবনা জয়ললিতার সঙ্গী শশীকলার। ভোটে তিনিও সক্রিয় হবেন। বহু বিভক্ত ভোটে রজনী নিজের দিকে কতটা ভোট টানতে পারতেন তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। মনে করা হচ্ছিল, এডিএমকে-র ভোটে থালাইভা ভাগ বসাবেন। কিন্তু দলের অন্দরের দ্বন্দ্ব মিটিয়ে এডিএমকে-র রাশ হাতে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ই পলানীস্বামী। প্রশাসক হিসেবেও ইতিবাচক ছাপ রেখেছেন। ফলে তাঁর ভোটে ভাগ বসানো কঠিন হচ্ছিল রজনীর। তার উপরে প্রচার চলছিল, রজনীকান্ত বিজেপির ‘পুতুল’ হয়ে ভোটের লড়াইয়ে নামছেন। ‘স্পিরিচুয়াল পলিটিক্স’, ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা রজনীকে এই প্রচার যথেষ্টই অস্বস্তিতে ফেলেছিল বলে মনে করা হচ্ছে। তা ছাড়া সুপারস্টার হিসেবে তিনি তামিল জনতার মধ্যে যে বিপুল জনপ্রিয়তা উপভোগ করেন, রাজনীতি হয়তো তার মধ্যে কোথাও একটা গণ্ডি কেটে দিত।

সম্ভবত তাই সাত-পাঁচ ভেবে আপাতত রাজনীতি থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন থালাইভা।

অন্য বিষয়গুলি:

Rajnikanth Tamil Nadu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy