শনি গ্রহ সৌরমণ্ডলের ষষ্ঠ গ্রহ এবং দ্বিতীয় বৃহৎ গ্রহ। শনি সূর্যের চারিদিকে পরিভ্রমণ করতে কমবেশি ১০,৭৫৯ দিন সময় নেয়, অর্থাৎ ২৯ বছরের থেকে কিছু বেশি সময় লাগে। শনি রাশিচক্রে মেষ থেকে মীন রাশি পর্যন্ত ১২টি রাশি পরিভ্রমণ করতে ২৯ বছরের কিছু বেশি, প্রায় ৩০ বছর সময় নেয়। এক এক রাশিতে সময় নেয় কমবেশি আড়াই বছর। এই ক্ষেত্রে বক্র গতির কারণে সময়ের কিছু হেরফের থাকতে পারে।
শনি ধীর গতির গ্রহ। যে কোনও রাশিতে অন্যান্য গ্রহের তুলনায় শনি বেশি সময় ধরে অবস্থান করে। দীর্ঘ সময় অবস্থান করার জন্য সেই রাশির জাতক-জাতিকাদের উপর শনির প্রভাবও বেশি সময় ধরে থাকে। শুভ বা অশুভ, যে কোনও ফলের ক্ষেত্রেই এটি হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন:
গোচরকালে জন্মরাশির, অর্থাৎ জন্মকালীন চন্দ্রের অবস্থান থেকে অষ্টমে অবস্থানকে অষ্টম এবং চতুর্থে অবস্থানকে অর্ধ-অষ্টম শনি বলে।
শনি গ্রহ নিজের অবস্থান থেকে সপ্তম, তৃতীয় এবং দশমে বিশেষ দৃষ্টি দানে সক্ষম। এই কারণে শনির চতুর্থে অবস্থানকালে শনি চতুর্থ-সহ ষষ্ঠ এবং দশম রাশির স্থানকেও প্রভাবিত করে।
আরও পড়ুন:
চতুর্থ স্থান হল শিক্ষা, জ্ঞান, যানবাহন এবং ঘরবাড়ির স্থান। ষষ্ঠ স্থান হল শত্রু, মামলা-মোকদ্দমা, আঘাত, খারাপ কাজ, কুচিন্তা, দুশ্চিন্তা, রোগব্যাধি, মানহানি, অপমান ইতাদির স্থান। রাশির স্থান শরীর এবং মনের উপর প্রভাব ফেলে।
শনি অষ্টমে অবস্থানকালে অষ্টম ছাড়াও দশম, দ্বিতীয় এবং পঞ্চম স্থান প্রভাবিত করে। দ্বিতীয় স্থান আয়ের সঙ্গে এবং পঞ্চম স্থান সন্তান ও শিক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত।
আরও পড়ুন:
শমির অষ্টম এবং অর্ধ-অষ্টম স্থানে অবস্থানকালে নির্দিষ্ট জাতক-জাতিকাকে নানা সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হতে পারে। এই সময়কালে সরকার দ্বারা বিভ্রান্তি, জমা অর্থব্যয়, গৃহ বা স্থাবর সম্পত্তির মালিকানাহানি, হাজতবাস বা হাসপাতালে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি, স্ত্রী বা স্বামীর সঙ্গে বিবাদ বা বিচ্ছেদ, পশু দ্বারা আক্রমণ, সর্প দংশন, ভ্রমণকালে দুর্ঘটনা, বিদ্যাশিক্ষায় বিঘ্ন ইত্যাদির আশঙ্কা দেখা যায়।
একটি বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন, কণ্টক শনি যে সকলের ক্ষেত্রেই ক্ষতিকারক বা উপরিউক্ত সমস্ত বিষয় যে ঘটবেই তা কিন্তু নয়। শনির প্রভাব সাধারণত নির্ভর করে রাশিচক্রের বিভিন্ন গ্রহের অবস্থান এবং দশা-মহাদশার উপর।
আরও পড়ুন:
সাত্ত্বিক এবং সৎ জীবন যাপন করে শনির খারাপ প্রভাব থেকে অনেকটা হলেও নিস্তার পাওয়া সম্ভব। নিষ্ঠাভরে শনিদেবের উপাসনা, দক্ষিণাকালীর উপাসনা এবং দেবাদিদেব মহাদেবের উপাসনা অষ্টম এবং অর্ধ-অষ্টম শনির মৃত্যুসম যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দান করতে পারে বা কষ্ট হ্রাস করতে পারে। প্রয়োজনে অভিজ্ঞ জ্যোতিষীর পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।