জীবন্ত পুড়িয়ে মারা একটি কুকুরছানা। ছবি: পিপল ফর অ্যানিম্যাল-এর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে
চার-চারটি ছোট্ট ফুটফুটে কুকুরছানার গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে এক দল লোক। ছোট্ট নির্বিবাদ প্রাণীগুলো যন্ত্রণায় ছটফট করছে। আর্তনাদ করছে। পাশেই দাঁড়িয়ে তাদের মা। দাঁড়িয়ে কখনও প্রাণপণে ছুটছে এদিক-সেদিক, কখনও অসহায় হয়ে ডেকে চলছে একটানা। আর সব কটা সন্তান যখন আগুনে ঝলসে নেতিয়ে পড়েছে, মা সারমেয় তখন তাদের পাশে ঠায় বসে। হয়তো গড়িয়ে পড়েছে অশ্রুধারাও। এমনই ভয়ঙ্কর এবং মর্মন্তুদ ঘটনায় শিউরে উঠল হায়দরাবাদ।
ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে জীবন্ত পোড়ানো কুকুরছানাগুলির ছবি। স্থানীয় একটি পশুপ্রেমী সংগঠনের কর্মীরা খবর পেয়ে ছুটে আসেন। কিন্তু ততক্ষণে তিনটি কুকুরছানা আর বেঁচে নেই।
একটি সামান্য নড়াচড়া করছিল। তাকে নিয়ে পশু হাসপাতালে ছোটেন ওই সংগঠনের কর্মীরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকেও বাঁচানো যায়নি। চিকিৎসায় সাড়া না দেওয়ায় ওই পশু হাসপাতালেই মৃত্যু হয় চতুর্থ কুকুরছানাটিরও। শোকগ্রস্ত এলাকাবাসী সোচ্চার হয়েছেন অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে।
আরও পডু়ন: এই কুকুর-বিড়ালদের সম্পত্তির পরিমাণ শুনলে চোখ কপালে উঠবে
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কুকুরছানাগুলি নিস্তেজ হয়ে পড়ার পর মা কুকরটি সারাক্ষণ তাদের পাশে বসে ছিল। কখনও মুখ দিয়ে নাড়াচাড়া করে দেখছিল, হয়তো কেউ বেঁচে আছে। একজন বলেন, ‘‘মা কুকুরটির সন্তানহারা হওয়ার ওই দৃশ্য দেখে নিজেকে ঠিক রাখতেই পারছিলাম না। কেঁদে ফেলেছি। মনে হচ্ছিল, নিজেরই কোনও পরিজনকে হারিয়েছি। কোনও মানুষ যে এত নিষ্ঠুর হতে পারে, ভাবতেই পারছি না।’’
অন্য দিকে, ‘পিপল ফর অ্যানিম্যাল’ নামে হায়দরাবাদের ওই পশুপ্রেমী সংগঠন পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে। কিন্তু কে বা কারা, কী কারণে এই নিরীহ পশুগুলিকে পুড়িয়ে মারা হল, তার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখতে শুরু করেছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। পশুদের বিরুদ্ধে নৃশংসতারোধী আইনে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: শব্দতাণ্ডবের নথিপ্রমাণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন পরিবেশকর্মীরা
এর পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়াতেও এ নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন নেটিজেনরা। অপরাধীদের খুঁজে বের করে দ্রুত কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন কেউ। ফেসবুক-টুইটারে অধিকাংশই জঘন্য এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে।
২০১৬ সালে হায়দরাবাদে প্রায় একই রকম ঘটনা ঘটে। ওই সময় কয়েকটি সদ্যোজাত কুকুরছানাকে একসঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। কয়েকজন কিশোর ওই ঘটনা ঘটিয়েছিল। পরে পুলিশ তাদের গ্রেফতারও করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy