ছবি: এএফপি।
চেষ্টা চলছে জোরকদমে। তবে ১৫ অগস্টের মধ্যে যে করোনার ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে না, তা একপ্রকার স্পষ্টই করে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। ২০২১-এর আগে যে এই অতিমারির টিকা আসা সম্ভব নয়, সে কথা গত কালই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সংসদীয় প্যানেলকে জানিয়েছিলেন সরকারি আধিকারিকেরা। গত রবিবারের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিজ্ঞান মন্ত্রকও এমনটাই জানিয়েছে। আজ খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবিপি নিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বললেন, ‘‘কোন মাসে বা কত তারিখে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে, সেটা বলা সম্ভব নয়। টিকা তৈরির ক্ষেত্রে কয়েক মাস বা এক বছরও লাগতে পারে। আমরা এ ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছি।’’
চলতি মাসের গোড়াতেই আইসিএমআর দাবি করেছিল, স্বাধীনতা দিবসেই আসছে কোভিড-টিকা। এর পর থেকেই শুরু হয় বিতর্ক। প্রশ্ন ওঠে, অহেতুক তাড়াহুড়ো নিয়েও। বিষয়টি জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ব্যাপক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে সুর চড়াতে থাকেন বিরোধী দল থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞরাও। আজ এই বিষয়ে কেন্দ্রের অবস্থান স্পষ্ট করেই হর্ষ বর্ধন বললেন, ‘‘ভ্যাকসিন তৈরিতে সময় তো লাগবেই। কাজ চলছে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল কিংবা গবেষণার কোনও পর্যায়েই আপস করা হবে না।’’ তাঁর দাবি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী, সব পদ্ধতি মেনেই ভ্যাকসিন সংক্রান্ত পরীক্ষা চালাচ্ছে ভারত।
মন্ত্রীর কথায় স্পষ্ট, প্রতিষেধক এখনও অধরাই। এ দিকে দেশ জুড়ে সংক্রমণ বাড়ছে হু-হু করে। ৮ লক্ষের গণ্ডি ছাড়িয়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। তবু হর্ষ বর্ধনের দাবি, আর পাঁচটা দেশের তুলনায় ভারতের করোনা-পরিস্থিতি অনেকটাই ভাল। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ওয়েবসাইটও বলছে, সুস্থের সংখ্যা আজই ৫ লক্ষ ছাপিয়ে গিয়েছে। অ্যাক্টিভ রোগীর থেকে সুস্থের সংখ্যা এখন ২ লক্ষ ৩০ হাজারেরও বেশি। সুস্থতার হার প্রায় ৬৩ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় যেমন ‘রেকর্ড’ ২৭,১১৪টি নতুন সংক্রমণের খবর মিলেছে, তেমনই সুস্থ হয়েছেন ১৯,৮৭০ জন। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, টানা তিন দিন এ ভাবেই বাড়ছে সুস্থের সংখ্যা।
আরও পড়ুন: করোনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব, হু-র উদাহরণে ধারাভি মডেল
দিল্লি সরকারেরও দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। হোম আইসোলেশনে থাকা আক্রান্তের কেউ এ-মাসে মারা যাননি বলে আজ জানিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের সরকার। দু’সপ্তাহ ধরেই মৃত্যুর হার নামছে। তবু পরিস্থিতির সঙ্গে যুঝতে দিল্লি সরকারের অধীনে থাকা সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আগামী সিমেস্টার এমনকি ফাইনাল পরীক্ষাও বাতিল করার কথা ঘোষণা করেছেন রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া।
আরও পড়ুন: চিন ফের সেনা সরাল, এখনও মুক্ত নয় প্যাংগং
আজই দেশের করোনা-পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য হর্ষ বর্ধনের পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং নীতি আয়োগের সদস্যদের নিয়ে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যক্তিগত স্বচ্ছতা বজার রাখা এবং দূরত্ব-বিধি মেনে চলার উপরই জোর দেন তিনি। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে কোভিড-মোকাবিলায় কেজরী-সরকারের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন মোদী। দিল্লি সরকার যা-যা ব্যবস্থা নিয়েছে, তা বাকি রাজ্যেরও নেওয়া উচিত বলে পরামর্শ দেন তিনি। বিহারে সংক্রমণ ক্রমে বেড়েই চলেছে। তবু অভিযোগ, এরই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার সরকারের একাংশ আগামী বিধানসভা নির্বাচনের তোড়জোড় চালিয়ে যাচ্ছে। আজ তা নিয়েই নীতীশকে বিঁধে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর সাফ বলেন, ‘‘এটা ভোট যুদ্ধের সময় নয়। করোনা-মোকাবিলায় মন দিন। ভোটের জন্য তাড়াহুড়ো করে রাজ্যের মানুষকে বিপদে ফেলবেন না। ’’
করোনা-ত্রাসের আবহে এ দিকে কিছুটা স্বস্তি দিয়ে আজই চর্মরোগ সোরিয়াসিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত বায়োকনের ওষুধ ইটোলিজ়ুমাব ব্যবহারে ছাড়পত্র দিয়েছে দেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তীব্র শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভোগা করোনা রোগীদের চিকিৎসায় এই ওষুধ ‘জরুরি অবস্থায় পরিমিত পরিমাণে ব্যবহার’ করা যেতে পারে বলে জানিয়েছে তারা। তবে এই ওষুধ কিংবা রেমডেসিভিয়ার যাতে যথেচ্ছ ব্যবহার করা না-হয়, প্রতিটি রাজ্যকে তা নিয়ে আজ সতর্ক করেছে এমস ও আইসিএমআর। এতে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা করছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy