রাহুল-প্রিয়ঙ্কাকে এক পংক্তিতে বসিয়ে আক্রমণ অমিত শাহের। —ফাইল চিত্র
রাজনীতিতে প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর সক্রিয় অংশগ্রহণ নিয়ে এত দিন বিজেপি-র নিচুতলার কর্মীরাই শুধু কটাক্ষ করছিলেন। এ বার পরিবারতন্ত্রের অস্ত্রে তাঁকে বিঁধলেন খোদ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। প্রাক্তন সেনাকর্মীদের ‘ওআরওপি’ (ওয়ান র্যাঙ্ক, ওয়ান পেনশন)-র সেই দাবির কথা মনে করিয়ে রাহুল গাঁধীর সঙ্গে প্রিয়ঙ্কাকে এক পংক্তিতে বসিয়ে কটাক্ষ করলেন তিনি।
প্রিয়ঙ্কার রাজনীতিতে অভিষেকের ঘোষণা হয়েছে গত ২৩ জানুয়ারি। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক করে তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পূর্ব উত্তরপ্রদেশের। তার পর উত্তরপ্রদেশ-বিহারের বিজেপি নেতারা প্রিয়ঙ্কাকে কটাক্ষ, তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য পর্যন্ত করেছেন। কিন্তু প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব এ নিয়ে কার্যত মৌনী ছিল। অবশেষে সোমবার মুখ খুললেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।
সোমবার তিনি হিমাচল প্রদেশের উনায় একটি দলীয় সভায় যোগ দেন। সেখানেই রাহুল-প্রিয়ঙ্কাকে নিশানা করে অমিত বলেন, ‘‘প্রায় ৭০ বছর ধরে সেনা কর্মীদের দাবি কেউ শোনেনি। মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার এক বছরের মধ্যে ‘এক পদ এক পেনশন’ চালু করেছি।’’ এর পরই বিজেপি সভাপতির খোঁচা, ‘‘কংগ্রেসও ওয়ান র্যাঙ্ক ওয়ান পেনশন মেনে চলে। আর সেটা হল ‘ওনলি রাহুল, ওনলি প্রিয়ঙ্কা’।’’
আরও পড়ুন: ‘হিন্দু মেয়ে’ থেকে ‘মুসলিম মেয়ে’! কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পরপর বিতর্কিত মন্তব্যে টুইটার তোলপাড়
দীর্ঘ দিন ধরেই ‘ওয়ান র্যাঙ্ক ওয়ান পেনশন’-এর দাবি করে আসছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মীরা। ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের আগে সেই দাবি চরমে ওঠে। অবস্থান, অনশন আন্দোলন শুরু করেন তাঁরা। ক্ষমতায় আসার আগেই মোদী দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সেই দাবি পূরণও হয়েছে। প্রিয়ঙ্কাকে আক্রমণ করতে গিয়ে সোমবার এই বিষয়টিই তুলে আনেন অমিত।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, লোকসভা ভোটের মুখে প্রিয়ঙ্কাকে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণের ঘোষণায় বিজেপি কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত ছিল। কোন পথে এই ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ মোকাবিলা করা হবে, তা নিয়ে সংশয় ছিল দলের অন্দরেই। অনেকেই মনে করেন, সেই কারণেই আগে সুশীল মোদীর মতো আঞ্চলিক নেতাদের দিয়ে আক্রমণ করিয়ে হাওয়া বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছিল বিজেপি। সেই সঙ্গে চলছিল স্ট্যাটেজি তৈরি। সেটা হওয়ার পরই আক্রমণের অভিমুখ ঠিক করে দিলেন অমিত শাহ।
আরও পডু়ন: বিদেশে পালাতে পারেন কে ডি সিংহ! তৃণমূল সাংসদের বিপুল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ইডি
রাহুল গাঁধী সভাপতি হওয়ার পর বরাবরই পরিবারতন্ত্রের অভিযোগে সরব ছিল বিজেপি। এমনকী, সম্প্রতি পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটেও সেই পথেই আক্রমণ চলেছে। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন, গাঁধী পরিবারের বাইরে কাউকে সভাপতি করে দেখাক কংগ্রেস। এ বার প্রিয়ঙ্কাকেও যে সেই পরিবারতন্ত্রের তিরে বিদ্ধ করা হবে, সেটা বুঝিয়ে দিলেন অমিত শাহ।
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy