গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করা যাবে না। সিবিআই বনাম কলকাতা পুলিশ মামলার শুনানিতে আজ এই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে রাজীব কুমারকে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হবে বলেও জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। রাজীব কুমারকে শিলং-এ জেরা করা হতে পারে, জানা যাচ্ছে এরকমই।
অন্য দিকে সিবিআই-এর দায়ের করা আদালত অবমাননার মামলায় কেন্দ্রের তরফে আজ আদালতে বক্তব্য রাখেন অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেনুগোপাল। এই পরই আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জবাব দিতে হবে বলে কলকাতা পুলিশের কমিশনার রাজীব কুমার, রাজ্যের মুখ্য সচিব মলয় দে এবং রাজ্যের ডিজিপি বীরেন্দ্রকে নোটিস পাঠিয়েছে শীর্ষ আদালত। এই জবাব পাওয়ার পরই শীর্ষ আদালত ঠিক করবে, তাঁদের আদালতে হাজিরা দিতে বলা হবে কি না। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
আজ শুনানিতে রাজ্য সরকারের তরফে আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি অভিযোগ করেন, ‘‘ইচ্ছাকৃত ভাবে সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। এত তাড়া কেন? শেষ পাঁচ বছরে রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের একটি অভিযোগও আনা হয়নি।’’
আরও পড়ুন: সারদাকর্তার কল রেকর্ডস বিকৃত করেছেন রাজীব কুমার, সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা সিবিআইয়ের
মেট্রো চ্যানেলের ধর্নামঞ্চ থেকে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই জয়কে ‘গণতন্ত্রের জয়’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্রের জয়, সুপ্রিম কোর্টের রায় শুনেই ধর্নামঞ্চ থেকে বললেন মমতা
অন্য দিকে শীর্ষ আদালতের রায়ের পর বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদের মন্তব্য, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টই বলে দিয়েছে, সিবিআই ডাকলে জেরায় আসতে হবে কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে। সেটা কলকাতায় হবে না। হবে শিলংয়ে। কেউ কেউ এটাকে তাঁদের জয় বলছেন। আমরা আর কী বলতে পারি? প্রশ্নটা হল, দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে উনি সিবিআইয়ের জেরা এড়িয়ে চলছিলেন কেন? সিবিআই অনেক দিন ধরেই চাইছিল, উনি জেরায় আসুন। সুপ্রিম কোর্ট সেই নির্দেশই দিয়েছে।’’
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জয় হল সিবিআইয়ের, বললেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী
কলকাতার পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে সিবিআই আধিকারিকদের যাওয়া নিয়ে আজ শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টে। প্রধান বিচারপতি গগৈ, বিচারপতি দীপক গুপ্ত ও বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। সিবিআই-এর তরফে একটি হলফনামা আজ জমা দেওয়া হয় শীর্ষ আদালতে।
আরও পড়ুন: মমতাকে রাস্তার লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনা খুব বড় ভুল হল না তো? চিন্তায় বিজেপি
গতকালই বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল সিবিআই। শীর্ষ আদালতে সিবিআইয়ের হয়ে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা দাবি করেছিলেন, সিবিআই বনাম পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দ্বৈরথে সংবিধান ভেঙে পড়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। রাজীবকে ‘সম্ভাব্য অভিযুক্ত’ আখ্যা দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগও তোলে সিবিআই।
একই সঙ্গে সিবিআই-এর আর্জি ছিল, সুপ্রিম কোর্ট রাজীব কুমারকে আত্মসমর্পণ করতে বা সিবিআইয়ের সামনে হাজির হতে নির্দেশ দিক। অন্য দিকে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যে তদন্ত হচ্ছে, তাতে রাজ্য প্রশাসন বাধা দিচ্ছে বলে আদালত অবমাননার মামলা হোক।
এর পরই প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেছিলেন, ‘‘আপনাদের আবেদন পড়েছি। এতে (নথি লোপাটের প্রমাণ) কিছুই নেই।’’ একই সঙ্গে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘ যদি প্রমাণ করতে পারেন, উনি প্রমাণ লোপাট করেছেন বা এক বারও সে কথা ভেবেছেন, তা হলে এমন শিক্ষা দেব যে ওঁকে অনুতাপ করতে হবে।’’
সিবিআই সোমবার রাতেই একটি হলফনামা জমা দিয়ে দেয়। রাজীব কুমারের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি গতকাল বলেন, সব অভিযোগ মিথ্যা। সাক্ষী হিসেবে রাজীবের কাছে সিবিআইয়ের যা প্রশ্ন ছিল, তার লিখিত জবাব দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারি সিট-এর প্রধান হিসেবে সারদার নথিও তিনি সিবিআইকে দিয়েছেন।
(কী বললেন প্রধানমন্ত্রী, কী বলছে সংসদ- দেশের রাজধানীর খবর, রাজনীতির খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy