Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

কোনও প্রশ্ন নয়, ফরমান রাফালে

রাহুল গত কয়েক মাস ধরে যে বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে সব থেকে বেশি আক্রমণ করছেন, সেই রাফাল দুর্নীতি নিয়ে বিজেপি কর্মীরাও জটায়ুর মতোই জেনে গিয়েছেন, ‘‘কোনও প্রশ্ন নয়!’’ 

বিজেপির কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানাচ্ছেন অমিত শাহ। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে। পিটিআই

বিজেপির কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানাচ্ছেন অমিত শাহ। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে। পিটিআই

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় 
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:২৩
Share: Save:

সোনার কেল্লায় জটায়ু বলেছিলেন ‘‘উট সম্বন্ধে প্রশ্ন চলবে?’’

ফেলুদার উত্তর ছিল, ‘‘চলবে।’’

নরেন্দ্র মোদীর দরবারে কিন্তু রাফাল সম্বন্ধে কোনও প্রশ্ন চলবে না!

মোদী সরকারের মেয়াদ প্রায় শেষ হতে চলল। কিন্তু এখনও তাঁকে খোলাখুলি প্রশ্ন করার সুযোগ কেউ পাননি। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সেই সুযোগ পাচ্ছেন বিজেপি কর্মীরা। কিন্তু তাঁদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রাফাল নিয়ে কোনও প্রশ্ন চলবে না।

ভোটের আগে বিজেপি কর্মীদের চাঙ্গা করতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে সরাসরি কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিটি পর্বেই বিজেপি কর্মীরা তাঁকে রাহুল গাঁধীর নানা মন্তব্য-আক্রমণ নিয়ে প্রশ্ন করছেন। মোদী হাসিমুখে সে সবের জবাবও দিচ্ছেন। কিন্তু রাহুল গত কয়েক মাস ধরে যে বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে সব থেকে বেশি আক্রমণ করছেন, সেই রাফাল দুর্নীতি নিয়ে বিজেপি কর্মীরাও জটায়ুর মতোই জেনে গিয়েছেন, ‘‘কোনও প্রশ্ন নয়!’’

আরও পড়ুন: মোদীর মুঠোই আলগা হচ্ছে কি

রাফাল নিয়ে আজও চন্দ্রবাবু নায়ডুকে পাশে বসিয়ে ফের তোপ দেগেছেন রাহুল। কিন্তু সে সব নিয়ে কোনও প্রশ্নেরই সুযোগ নেই বিজেপি কর্মীদের কাছে।

এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ভোটমুখী এক রাজ্যের বিজেপি কর্মীর মন্তব্য, ‘‘কী প্রশ্ন করা হবে, সেটি আগে থেকেই ঠিক করা থাকে। রাফাল নিয়ে প্রশ্ন করতেই বারণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীও জানেন, কোন কেন্দ্রের কোন কর্মী কী প্রশ্ন করবেন। এমনও হয়েছে, প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে প্রধানমন্ত্রী ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রশ্ন শুনতেই পাননি। কিন্তু যে হেতু তিনি জানতেন, কী প্রশ্ন হতে চলেছে, তার ভিত্তিতে উত্তরটি দিয়ে দিয়েছেন!’’ দিল্লির বিজেপি নেতারা অবশ্য এমন দাবি মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, মোদীর সঙ্গে কর্মীদের পুরো আলোচনাটাই হয় স্বতঃর্স্ফূত। কিন্তু সেই ‘স্বতঃর্স্ফূত’ আলোচনাতেও জায়গা করতে পারেনি রাফাল!

সদ্য গত কালই মোদী সরকারের উপর চাপ বাড়িয়ে সুপ্রিম কোর্ট রাফাল যুদ্ধবিমানের দাম জানতে চেয়েছে। শুধু তাই নয়, মনোহরলাল শর্মা রাফাল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকার তদন্ত চেয়ে শীর্ষ আদালতে যে মামলা করেছিলেন, গতকাল এই সংক্রান্ত আরও একাধিক মামলার সঙ্গে সেটিও গ্রহণ করেছে শীর্ষ আদালত।

আজ চন্দ্রবাবুকে পাশে নিয়ে রাহুল বলেন, ‘‘রাফাল নিয়ে স্পষ্ট দুর্নীতি হয়েছে। যে প্রতিষ্ঠান এর তদন্ত করবে, তার উপর আঘাত হানছে সরকার। ঠিক মতো তদন্ত হলে স্পষ্ট হবে, কে দুর্নীতি করেছেন, টাকা কে নিয়েছেন? তাই আমি আরও আক্রমণাত্মক হয়ে প্রচার করছি।’’ কালই রাফাল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ঘএরাও করবে যুব কংগ্রেস। এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, বাকি বিরোধীরা রাহুলের মতো তত সরব হচ্ছেন না কেন? চন্দ্রবাবুর বক্তব্য, তিনিও এ নিয়ে সরব হয়েছেন। জোটের রূপরেখা স্পষ্ট হলে সকলেই অভিন্ন বিষয়ে সরব হবেন বলে আশাবাদী তিনি।

রাফাল নিয়ে নীরব থাকলেও রাহুলের অন্য মন্তব্যের মোকাবিলা কী করে করা হবে, মোদী কিন্তু তার দাওয়াই নিয়মিত দিচ্ছেন। গত কালই বলেছেন, রাহুল ফাটা রেকর্ডের মতো মিথ্যা প্রচার করছেন। কংগ্রেসের ‘কুকথা’কে উপেক্ষা করার পরামর্শও দিয়েছেন মোদী।

নীরব শুধু রাফাল নিয়ে! ়

প্রধানমন্ত্রী। বিজেপি কর্মীরাও!

অন্য বিষয়গুলি:

Rafale Narendra Modi BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE