বিজেপি একা লড়বে তেলঙ্গানায়
তেলঙ্গানায় ত্রিমুখী লড়াই!
তিন বিরোধী দল— কংগ্রেস, তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি) এবং সিপিআই দিন চারেক আগেই ‘মহা কুটামি’ বা বিরোধী জোটের কথা ঘোষণা করেছে। যে জোটে আগামীতে সিপিএম এবং অন্যান্য দলও জোট দিতে পারে। উল্টো দিকে মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি তথা টিআরএসের সঙ্গে বিজেপির সমঝোতা হয় কি না, সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছিল হায়দরাবাদে।
বিজেপি সভাপতি আজ হায়দরাবাদে ঘোষণা করলেন, বিজেপি তেলঙ্গানা বিধানসভার ১১৯টি আসনেই লড়বে। সেই সঙ্গে রাওকে নিশানা করে অমিত শাহ বললেন, ‘‘সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়ে রাও ভোট-ব্যাঙ্কের রাজনীতি করছেন। সংবিধানে ধর্মের নামে সংরক্ষণের অনুমতি নেই। তবু সংখ্যালঘুদের জন্য ১২ শতাংশ সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। এটা তোষণ ছাড়া আর কী?’’
এক সময় কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিজেপি বিরোধী ফেডারেল ফ্রন্ট গড়ার চেষ্টায় নবান্নে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন রাও। কংগ্রেস ও বামেরা অভিযোগ তুলেছিল, বিরোধী ভোটে ভাঙন ধরিয়ে বিজেপিরই সুবিধা করে দিতে চান রাও। এ বার তেলঙ্গানাতেও রাও-বিজেপি সমঝোতার গন্ধ পাচ্ছেন রাজনীতিকরা। তাঁদের ব্যাখ্যা, বিজেপির সঙ্গে গেলে মুসলিম ভোট-ব্যাঙ্ক হাতছাড়া হবে রাওয়ের। সেই ভোট যাবে কংগ্রেস, চন্দ্রবাবু, বামেদের ঝুলিতে। এর উপরে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভের আঁচও পড়বে রাওয়ের ভোট-ভাগ্যে।
বিজেপি সূত্র বলছে, সে কারণেই লোকসভা ভোটের সঙ্গে সব রাজ্যের বিধানসভা ভোট করার যে প্রস্তাব নরেন্দ্র মোদী দিয়েছিলেন, প্রথমে তা সমর্থন করলেও, পরে নিজের রাজ্যেই তড়িঘড়ি বিধানসভা ভেঙে দিয়েছেন রাও। ২০১৯-এর এপ্রিলে মেয়াদ ফুরোনোর অনেক আগেই। এখন তিনি চাইছেন এ বছরেই রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ, মিজোরামের সঙ্গেই ভোট হোক তেলঙ্গানায়। একসঙ্গে লোকসভা-বিধানসভার ভোট করা নিয়ে অবস্থান পরিবর্তনের জন্যও আজ রাওয়ের সমালোচনা করেন অমিত।
কিন্তু বিজেপি আর টিআরএস আলাদা লড়লে তো ত্রিমুখী লড়াইয়ে বিরোধীদের লাভ হওয়া সম্ভাবনা! রাজনীতিকদের একাংশ মনে করছেন, বিজেপির সঙ্গে লড়াই জিইয়ে রেখে কংগ্রেস-চন্দ্রবাবুর জোটকে বাড়তি সুবিধা দিতে রাজি নন রাও। লোকসভা ভোটের আগে প্রয়োজনে তিনি বিজেপি সম্পর্কে নরম সুর নেবেন। দরকারে ভোটের পরে সমঝোতায় যেতে পারেন।
রাও-বিজেপির এই কৌশল সামলাতে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী তেলঙ্গানার ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা আর সি খুন্তিয়া ও প্রদেশ সভাপতি উত্তমকুমার রেড্ডিকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কোনও ভাবেই দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যেন মাথা চাড়া না দেয়। দলে ঐক্য বজায় রেখে বিরোধী জোট মজবুত করে এগোতে হবে ভোটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy