Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

আয়ুষ্মানে ‘সিজারিয়ান’-এ টাকা, সংশয় অনেকেরই

সরকারি বা বেসরকারি, কোনও হাসপাতালেই কেন্দ্রের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পের আওতায় সাধারণ প্রসবকে রাখা হচ্ছে না। শুধুমাত্র সিজারিয়ান সেকশন-এর ক্ষেত্রে ৯ হাজার টাকা খরচ বেঁধে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত কোনও মা সিজারের মাধ্যমে শিশুর জন্ম দিলে বিমা সংস্থা হাসপাতালকে ৯ হাজার টাকা দেবে। সাধারণ প্রসবে টাকা মিলবে না।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:২৪
Share: Save:

সরকারি বা বেসরকারি, কোনও হাসপাতালেই কেন্দ্রের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পের আওতায় সাধারণ প্রসবকে রাখা হচ্ছে না। শুধুমাত্র সিজারিয়ান সেকশন-এর ক্ষেত্রে ৯ হাজার টাকা খরচ বেঁধে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত কোনও মা সিজারের মাধ্যমে শিশুর জন্ম দিলে বিমা সংস্থা হাসপাতালকে ৯ হাজার টাকা দেবে। সাধারণ প্রসবে টাকা মিলবে না।

এর ফলে অনেক প্রসূতির পরিবারের উপকার হবে নিশ্চয়, তবে উঠছে অন্য প্রশ্নও। ভারতে ‘সিজারিয়ান সেকশন’ বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এমনিতেই উদ্বিগ্ন। নতুন নিয়মের ফলে সিজার করানো বেড়ে যাবে না তো? ‘আয়ুষ্মান ভারত’ এর সিইও ইন্দু ভূষণের দাবি, এই নিয়মে বরং সাধারণ প্রসব বাড়বে। কারণ, তাঁর কথায়, ‘‘কারও সিজার সত্যিই প্রয়োজন কিনা, তার লিখিত অনুমোদন নিয়ে আসতে হবে সরকারি হাসপাতাল থেকে। তবেই বেসরকারি জায়গায় সিজার হবে। বিমার টাকা পেতে বেসরকারি হাসপাতাল যাতে অপ্রয়োজনে সিজার করে না-দেয়, তার জন্য এই ব্যবস্থা।’’

তবে পশ্চিমবঙ্গের এক শীর্ষস্থানীয় স্বাস্থ্যকর্তার ব্যাখ্যা, ‘‘সরকারি হাসপাতালে প্রতি মাসের তথ্য থেকেই দেখা যাচ্ছে, বহু সরকারি চিকিৎসক অপ্রয়োজনে অনেক সিজার করছেন। এ ছাড়া, সিজারের জন্য টাকা মিললে সাধারণ প্রসব আর কেউ করাতে চাইবেন না।

পশ্চিমবঙ্গে ‘ফ্রি’ চিকিৎসা চালু হওয়ার পরে সরকারি হাসপাতালগুলিতে রোগী কল্যাণ সমিতির ভাঁড়ার তলানিতে। সিজার বাড়িয়ে অনেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই তা বাড়াতে চাইতে পারেন।’’

অনেকের প্রশ্ন, সরকারি হাসপাতালে ডাক্তারের অভাব ও রোগীর চাপ যথেষ্ট। সেই পরিস্থিতিতে এই বাড়তি দায়িত্ব চিকিৎসকেরা সামলাতে পারবেন তো? এ-ও প্রশ্ন, জরুরি অবস্থায় কোনও প্রসূতি হয়তো সরকারি হাসপাতালে যাচাইয়ের আগেই বেসরকারি জায়গায় ভর্তি হতে বাধ্য হলেন এবং স্বাভাবিক

প্রসব হল। সে ক্ষেত্রে দরিদ্র পরিবার কী করে খরচ মেটাবে?

কলকাতার এক সরকারি হাসপাতাল থেকে কিছু দিন আগে অবসর নেওয়া এক স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘‘এক শ্রেণির সরকারি চিকিৎসক বেসরকারি জায়গায় প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন। প্রয়োজন না-থাকলেও সিজারের পরামর্শ দিতেই পারেন তাঁরা। নজরদারি চালাবে কে?’’ এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে চোখের ছানি অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালে আসা যাবতীয় কেস এক শ্রেণির চিকিৎসক পাঠিয়ে দিচ্ছিলেন বেসরকারি জায়গায়।’’

এই সংশয় মেটাতে পারেননি ইন্দু ভূষণ। তিনি শুধু বলেছেন, ‘‘আমাদের বিশ্বাস করতেই হবে যে, সরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সরকারি ডাক্তারেরা সঠিক অভিমত দেবেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Ayushman Bharat Prakalpa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE