সিরোহী কেন্দ্রে হেরে গেলেন গো-পালন মন্ত্রী ওটারাম দেওয়াসি। —ফাইল চিত্র
শুধু রাজস্থান নয়, সারা দেশেই তিনি প্রথম ‘গরু বিষয়ক মন্ত্রী’। সোমবার পর্যন্ত সেটাই ছিল তাঁর পদমর্যাদা। কিন্তু মঙ্গলবার ভোটের ফল বেরোতেই দেখা গেল, এই গো-পালন মন্ত্রী ওটারাম দেওয়াসিই কার্যত গো-হারা হেরে গিয়েছেন। তাও আবার কোনও রাজনৈতিক দল নয়, বিজেপির প্রার্থী দেওয়াসি পর্যুদস্ত হয়েছেন নির্দল প্রার্থীর কাছে, ১০ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে। অথচ এবারের ভোটেও ‘গো-রক্ষা’ নিয়ে প্রচারে নেমেছিল বিজেপি। রাজনৈতিক শিবিরের ব্যাখ্যা, ‘গরু’ রাজনীতি কার্যত বিজেপির বিপক্ষেই গিয়েছে। অনেকেরই প্রশ্ন, গেরুয়া ব্রিগেডের হিন্দুত্ববাদের বাড়াবাড়িতে কি তবে সাধারণ মানুষ বিরক্ত।
কে এই ওটারাম দেওয়াসি? আগে ছিলেন রাজস্থান পুলিশের অফিসার। কিন্তু শারীরিক কারণে চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। তবে পরে সুস্থ হয়ে রাজনীতিতে যোগ দেন। বালি বিধানসভা কেন্দ্রের মুন্দারা গ্রামের বাসিন্দা দেওয়াসি ২০০৮ এবং ২০১৩ পর পর দু’বার রাজস্থানের সিরোহী কেন্দ্র থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন। পশ্চিম রাজস্থানের একটা বড় অংশ জুড়ে দেওয়াসি সম্প্রদায়ের বাস। তাঁরা মূলত পশুপালন করে জীবিকা নির্বাহ করেন। আর সেই সূত্রেই এই সম্প্রদায়ের মধ্যে ওটারাম দেওয়াসির যথেষ্টই প্রভাব রয়েছে।
এ হেন দেওয়াসিও এবার ভোটে হেরে গিয়েছেন তাঁর সিরোহী কেন্দ্র থেকে। প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নির্দল প্রার্থী সন্যম লোধা। তিনি পেয়েছেন ৮১ হাজার ২৭২ ভোট। দেওয়াসির বাক্সে ৭১ হাজার ১৯ ভোট। ব্যবধান ১০২৫৩ ভোটের।
আরও পড়ুন: মধ্যপ্রদেশে চূড়ান্ত ফল ঘোষণা হতেই সমর্থন মায়াবতীর, সরকার গড়ছে কংগ্রেস, পাশে অখিলেশও
গরু চোর সন্দেহে গণপিটুনি থেকে গোমাংস বিক্রি বা খাওয়ার অভিযোগ মারধর, গণপিটুনির মতো ঘটনায় বারবার শিরোনামে উঠে এসেছে রাজস্থান। অলওয়ারে দু’বার গরু চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল। তার পরও গরু নিয়ে রাজনীতি কমেনি। বরং গত বারের বিধানসভা নির্বাচনের পর মন্ত্রিসভা গঠনের সময় আস্ত একটি মন্ত্রকই বানিয়ে ফেলেন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া। মন্ত্রকের দায়িত্ব পান ওটারাম দেওয়াসি।
আরও পড়ুন: মধ্যপ্রদেশে ভোট গণনায় এত দেরির কারণ কি ভিভিপ্যাট?
সেই গরু-মন্ত্রীই হেরে যাওয়ায় প্রশ্নের মুখে বিজেপির কট্টরপন্থী রাজনীতি। গোরক্ষার নামে তাণ্ডব, মারধর গণপিটুনি—এসব কারণে সাধারণ ভোটাররা পদ্ম শিবির থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন, এবং ইভিএম-এ তারই প্রতিফলন হয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একটা বড় অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy