টিএস সিংহদেও, তাম্রধ্বজ সাহু এবং ভূপেশ বাঘেল।—ফাইল চিত্র।
ট্রিং...ট্রিং...ট্রিং...ফোন বেজে চলেছে লাগাতার। ধরলেই ওপারে দলনেতার কণ্ঠস্বর। তাতে পছন্দের মুখ্যমন্ত্রীর নাম জানতে চাইছেন তিনি। ছত্তীসগঢ়ের হবু মুখ্যমন্ত্রী বাছতে নাকি এমন অভিনব উপায় খুঁজে বের করেছে কংগ্রেস। যা একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমসূত্রে সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, দলের নেতাদের মতামতকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে কংগ্রেস। তাই ভোটের ফল সামনে আসার পর, একে একে তাঁদের কাছে ফোন যাচ্ছে। তাতে রাহুল গাঁধীর একটি ভয়েস মেসেজ শোনানো হচ্ছে, যেখানে দলীয় নেতাদের কাছে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাকে পছন্দ জানতে চাইছেন তিনি। গত ২৪ ঘণ্টায় একাধিক দলীয় নেতা এমন ফোন পেয়েছেন বলে খবর।
গত ১২ এবং ২০ নভেম্বর, মোট দু’দফায় বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে ছত্তীসগঢ়ে। ফল ঘোষণা হয়েছে মঙ্গলবার। তাতে ১৫ বছরের বিজেপি সরকারকে উত্খাত করেছে কংগ্রেস। বিপুল ভোট পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে উঠে এসেছে তারা। ৯০ আসনের মধ্যে ৬৮টি পেয়েছে। কিন্তু তার পর প্রায় ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও, এখনও পর্যন্ত রাজ্যের হবু মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করে উঠতে পারেনি দল। লোকসভা সাংসদ ও দুর্গ গ্রামীণ বিধানসভা আসনে জয়ী হওয়া তাম্রধ্বজ সাহু, দলের রাজ্য সভাপতি ভূপেশ বাঘেল এবং সিনিয়র নেতা ও এতদিন বিধানসভায় বিরোধী দলনেতার পদে থাকা টিএস সিংহদেও এই মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন। তাঁদের নিয়ে রীতিমতো ‘স্বয়ম্বর সভা’র আয়োজন করতে চলেছে কংগ্রেস।
বুধবার রাত ৮টায় পরিষদীয় দলের বৈঠক রয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যে দলের সাধারণ সম্পাদক শৈলেশ নীতিন ত্রিবেদী। সেখানে পর্যবেক্ষক হিসেবে হাজির থাকবেন অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির (এআইসিসি) মল্লিকার্জুন খাড়গে, রাজ্যে এআইসিসি-র ভারপ্রাপ্ত পিএল পুনিয়া এবং অন্যান্য শীর্ষ নেতা। সেখানে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীর নাম জানাবেন নব নির্বাচিত বিধায়কেরা। সেই অনুযায়ী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে বলে জানা গিয়েছে। তার পরই আনুষ্ঠানিকভাবে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষিত হবে।
জয়ের পর উল্লাস কংগ্রেস সমর্থকদের। ছবি: পিটিআই।
আরও পড়ুন: গহলৌত না পাইলট? মুখ্যমন্ত্রীর ‘তাজ’ কার মাথায় উঠবে, জোর জল্পনা রাজস্থানে
আরও পড়ুন: রাজ্যপালের কাছে কমলনাথ-জ্যোতিরাদিত্য, পদত্যাগ করলেন শিবরাজ
মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য যাঁদের নাম বিবেচিত হচ্ছে
টিএস সিংহদেও, বয়স ৬৬
তবে বৈঠকে যে সিদ্ধান্তই নেওয়া হোক না কেন, এখনও পর্যন্ত পাল্লাভারী টিএস সিংহদেও-র। দলের নির্বাচনী কর্মসূচি ঠিক করায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর। ভোটের ফল সামনে আসার পর তিনিই প্রথম স্বয়ম্বরের কথা তোলেন। বলেন, ‘‘ভগবান রামের মতো ১৫ বছরের বনবাস কাটিয়ে ফিরছি আমরা। স্বয়ম্বর করে মুখ্যমন্ত্রী বেছে নেওয়া হবে। ’’দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার পাশাপাশি রাহুল গাঁধীর ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত তিনি।
তাম্রধ্বজ সাহু, বয়স ৬৯
লোকসভা সাংসদ। দুর্গ গ্রামীণ বিধানসভা আসনে এ বার জয়ী হয়েছেন তিনি। কৃষিবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। রাজ্যের মন্ত্রীও ছিলেন। তবে তাঁর সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট হল সাহু সমাজের প্রতিনিধি তিনি, যাঁরা কিনা রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ। দলের ওবিসি বিভাগের ভারও তাঁর হাতে। ২০১৩ সালেঅন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির অধিকাংশ মানুষই বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন। এ বছর তাঁদের সকলকে কংগ্রেসে ফেরানোই দায়িত্ব ছিল সাহুর। যাতে ফুল মার্কস পেয়ে উতরে গিয়েছেন তিনি। আবার পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির জন্য দলীয় সদস্যদের সমর্থনও রয়েছে।
ভূপেশ বাঘেল, বয়স ৫৭
বাকিদের তুলনায় বয়স কম তাঁর। সেই সঙ্গে ওবিসি শ্রেণির প্রতিনিধি। আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তিনি। দলীয় নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ মেটাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তবে রাহুল গাঁধীর সঙ্গে তেমন দহরম মহরম নেই। আবার এআইসিসি-র পিএল পুনিয়ার সঙ্গে ঝামেলাতেও জড়িয়ে পড়েন। তবে দলে তাঁর সমর্থকের সংখ্যা কম নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy