কুর্সি মেলেনি। এ বার দলে অন্তত গুরুত্বপূর্ণ কোনও দায়িত্ব দেওয়া হোক— আওয়াজ তুললেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার অনুগামীরা। দিল্লিতে তাঁর বাসভবনের সামনে আজ তাঁর সমর্থকেরা বড় সংখ্যায় জড়ো হন। স্লোগান দিতে থাকেন, গুনার সাংসদকে মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি করার দাবিতে। কেউ স্লোগান তোলেন উপমুখ্যমন্ত্রী করা হোক সিন্ধিয়াকে। আসলে সচিন পাইলট দলের নেতৃত্বের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে রাজস্থানে উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ আদায় করে ছেড়েছেন। এটাই জ্বলুনি বাড়িয়েছে জ্যোতিরাদিত্যের অনুগামীদের মধ্যে। দলীয় সূত্রে অবশ্য গত কালই ইঙ্গিত মিলেছে, ধৈর্য ধরার পুরস্কার হিসেবে জ্যোতিরাদিত্যকে সাংগঠনিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিতে পারেন রাহুল গাঁধী। দলের সাধারণ সম্পাদক করে নিয়ে লোকসভা ভোটে আগে তাঁকে নিজের ‘টিম’-এ নিতে পারেন।
জ্যোতিরাদিত্যের গভীর বিশ্বাস ছিল, তিনিই হতে চলেছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার ভোটের ফল বেরনোর পরে তাই ছিলা টান মেজাজে ছিলেন গুনার সাংসদ। দিল্লি থেকে এ কে অ্যান্টনি পর্যবেক্ষক হিসেবে ভোপালে গেলে কার্যত সারা ক্ষণ গায়ে সেঁটে থেকে আগলেছেন তাঁকে। কিন্তু হাওয়া কমলনাথের দিকে বুঝে, সটান হাজির হন কংগ্রেস সভাপতির দরবারে। তবু দান হাতছাড়া হয়েছে। আজ এ নিয়ে নিজে কিছু না বললেও সমর্থকদের মধ্যে হাজির হয়ে তাঁদের উদ্দীপনায় উৎসাহই জুগিয়েছেন জ্যোতিরাদিত্য।
রাজ পরিবারের ছেলে। চালচলনে খানিকটা ঔদ্ধত্যের জন্য কংগ্রেসে কারও কারও অপছন্দের কারণ হলেও দলে একটা সহানুভূতিও রয়েছে তাঁর প্রতি। দলের নেতারা তুলছেন তিন দশক আগের প্রসঙ্গ। ক্ষমতার পেয়ালা ঠোঁটের কাছে এলেও চুমুক দেওয়া হয়নি জ্যোতিরাদিত্যের বাবা মাধবরাও সিন্ধিয়ারও। ১৯৮৯ সালে তাঁর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়ে ওঠেনি অর্জুন সিংহের কট্টর বিরোধিতায়। এ বার জ্যোতিরাদিত্যকে হার মানতে হল কমলনাথের অভিজ্ঞতার কাছে।
পাইলট ঘরানার সঙ্গে সিন্ধিয়া ঘরানার তফাতের কথাও উঠছে আলোচনায়। সচিন কার্যত দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেছিলেন, রাজস্থানে তাঁকে পদ না দিলে ভুল বার্তা যাবে। তাঁর বাবা রাজেশ পাইলটও দলের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ ছুড়তেন। সভাপতি পদের জন্য লড়েছিলেন সীতারাম কেশরীর বিরুদ্ধে। সনিয়া গাঁধীকেও চ্যালেঞ্জ করেছিলেন রাজেশ।
জ্যোতিরাদিত্য বলছেন, ‘‘পদ নয়, মধ্যপ্রদেশের জনগণের সেবা করাই তাঁর লক্ষ্য।’’ লক্ষ্যণীয় ভাবে, ‘দেশ’ নয় ‘মধ্যপ্রদেশ’ শব্দটিই উচ্চারণ করেছেন জ্যোতিরাদিত্য। তাঁর অনুগামীরাও আজ স্পষ্ট করে দিলেন, তাঁর ‘আত্মত্যাগের’ উপযুক্ত পুরস্কার হতে পারে রাজ্যে সংগঠনের হাল তাঁর হাতে তুলে দেওয়া। সেই লক্ষ্যেই চাপ বাড়াতে চাইছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy