অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।
গত সপ্তাহে পর পর তিন দিন নাগরিক পঞ্জি নিয়ে বলতে গিয়ে রাজ্যসভায় ঠায় দাঁড়িয়ে থেকেছেন। তাঁর সামনেই বিরোধীদের হট্টগোলে ভেস্তে গিয়েছে একের পর এক অধিবেশন। আজ তা সুদে-আসলে পুষিয়ে দিলেন বিজেপি সভাপতি। যে কারণে মোগলসরাই স্টেশনের নামকরণের সরকারি অনুষ্ঠান পরিণত হল বিরোধীদের আক্রমণের মঞ্চে।
আজ মোগলসরাই স্টেশনের মঞ্চ থেকে এনআরসি নিয়ে মমতা থেকে রাহুল, এসপি থেকে বিএসপি— কোনও সবাইকেই আক্রমণ করেছেন অমিত। তাঁর অভিযোগ, সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে মমতা বা রাহুল চাইছেন না নাগরিক পঞ্জি হোক। কিন্তু দেশের স্বার্থে বিজেপি তা করে দেখাবে। অমিত বলেন, ‘‘রাহুল বাবা-কে আমি প্রশ্ন করেছিলাম, তিনি এনআরসি-র পক্ষে কি না। তিনি জবাবই দেননি।’’
পাল্টা আক্রমণে আজ মমতা বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট কখনওই ভারতীয়দের নাম বাদ দিতে বলেনি। বিজেপির প্রত্যেকটি পদক্ষেপ ধ্বংসাত্মক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’’ এনআরসি ও শিলচরের ঘটনা নিয়ে সোমবার ফের সংসদে হইচই বাধাতে চায় তৃণমূল।
শুরু থেকেই বিজেপি অভিযোগ করে আসছে, বিরোধী দলগুলি ভোটব্যাঙ্কের জন্য অনুপ্রবেশকারীদের প্রতি সহমর্মিতা দেখাচ্ছে। উল্টো দিকে এসপি, কংগ্রেস বা বিএসপি-র মতো দলগুলির অভিযোগ, ২০১৯ সালের লোকসভার আগে এনআরসি নিয়ে মেরুকরণের রাজনীতি করতে চাইছে বিজেপি। অমিতের দাবি, ‘‘সংখ্যালঘু ভোট পেতেই সরব বিরোধীরা।
আরও পড়ুন: দেশকে রক্ষা করেও বিদেশি! অপমানিত সেনা
অথচ উত্তরপ্রদেশের আম-জনতা চান বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের যেন ফেরত পাঠানো হয়। সেটাই করে দেখাবে মোদী সরকার।’’ বিরোধীদের অভিযোগ, লোকসভার দিকে তাকিয়ে উত্তরপ্রদেশে মেরুকরণের সলতে পাকানো শুরু করে দিলেন অমিত শাহ। বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা যশবন্ত সিন্হার কটাক্ষ, ‘‘সরকারি খরচে করা সভা থেকে বিজেপির জন্য ভোট চাইছেন অমিত শাহ। গণতন্ত্রকে ধীরে ধীরে শেষ করে ফেলা হচ্ছে।’’
এনআরসি প্রকাশের পর রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে অমিত শাহ বুক ঠুকে বলেছিলেন, রাজীব গাঁধী নাগরিক পঞ্জি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যা রূপায়ণ করার সাহস একমাত্র বিজেপির রয়েছে। আজ কংগ্রেসের মুখপাত্র পবন খেড়া বলেন, ‘‘মোদী সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল গত নভেম্বরে আদালতকে জানান, খসড়া তালিকা প্রকাশ হলে অসম তথা দেশে গণ্ডগোল বাধতে পারে। তাই এনআসি-র খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে না। অমিতের কত সাহস বোঝা গিয়েছে!’’
মোদী সরকারের দীর্ঘসূত্রিতার সমালোচনা করে শীর্ষ আদালত বলেছিল, ‘‘২০১৭ সালের মধ্যে সরকারকে খসড়া তালিকা প্রকাশ করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু উপযুক্ত কারণ ছাড়াই তিন বছর ধরে তালিকা প্রকাশের কাজ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।’’ খেড়া বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের সক্রিয়তা না-থাকলে নাগরিক পঞ্জি প্রকাশিতই হত না।’’ খেড়ার কথায়, এখন কৃতিত্ব নিতে চাইছে শাসক দল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy