কেমন চলছে হাসপাতাল? বুধবার বিষ্ণুপুরে তদন্তে বাঁকুড়া জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি। —নিজস্ব চিত্র।
পাঁচ ঘণ্টা ভর্তি থাকার পরেও থ্যালাসেমিয়ায় অসুস্থ কিশোরের চিকিৎসা হয়নি। সেই ঘটনার দু’দিন পরে বুধবার বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতাল পরিদর্শনে দিয়ে রোগীদের কাছে গুচ্ছগুচ্ছ অভিযোগ শুনলেন বাঁকুড়া জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি। এ দিনই ওই ঘটনার তদন্তে হাসপাতালে যান প্রশাসনের আধিকারিক।
কমিটির চেয়ারম্যান শেখ মুরসালিনের নেতৃত্বে তিন প্রতিনিধিকে সামনে পেয়ে শিশু ওয়ার্ডে কান্নায় ভেঙে পড়েন বিষ্ণুপুরের ত্রিবঙ্ক গ্রামের টুম্পা লোহার। তাঁর দশ মাসের শিশুকে দেখিয়ে বলতে থাকেন, “অসুস্থ ছেলেকে ডাক্তারবাবুরা সকালে বাঁকুড়া মেডিক্যালে স্থানান্তর করেছেন। কিন্তু হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যাচ্ছে না। বাইরের অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে স্বামী টাকা আনতে ১০ কিলোমিটার দূরে বাড়িতে ছুটেছেন। কিন্তু ততক্ষণে ছেলেটা বাঁচবে তো?”
মেল ওয়ার্ডে ওই প্রতিনিধিরা ঢুকতেই ক্ষোভ উগরে দিলেন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ১০ বছরের সম্পদদীপ দে-র মা সুমিত্রাদেবী। তিনি বলেন, “ভড়া গ্রাম থেকে আমরা এসেছি। কিন্তু ডাক্তার দেরি করে আসায় রক্ত পেতে দেরি হচ্ছে। প্রতিবার একই সমস্যা হচ্ছে।” একই অভিযোগ করেন মাজুরিয়া গ্রামের খোকন মাকুড়। সব দেখে শেখ মুরসালিন বলেন, “১০ মাসের বাচ্চার জন্য হাসপাতাল থেকেই অ্যাম্বুলেন্স পাওয়ার কথা। অব্যবস্থার চূড়ান্ত দেখলাম। আমরা জেলাশাসককে লিখিত রিপোর্ট দেব।”
প্রায় একই সময়ে বিষ্ণুপুর মহকুমা প্রশাসনের তরফে ঘটনার তদন্তে আসেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অমরেশ দাস। সুপারকে হাসপাতালে না পেয়ে খোঁজ করে তিনি জানতে পারেন বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য জেলা আধিকারিকের অফিসে একটি বৈঠক চলছে। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে ওই বৈঠকেই সিএমওএইচ-এর সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সিএমওএইচ (বিষ্ণুপুর) সুরেশ দাস বলেন, “ঘটনার তদন্তের জন্য কয়েকজন চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ড মাস্টার ও গ্রুপ ডি কর্মীকে ডাকা হয়েছিল। বিষ্ণুপুর মহকুমার ডেপুটি ম্যজিস্ট্রেটও তাঁদের সঙ্গে কথা বলছেন। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিশেষ কিছু বলা যাবে না।” বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক পলাশ সেনগুপ্ত বলেন, “ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি রিপোর্ট জমা দেবেন।”
যার অকাল মৃত্যুর জন্য তদন্ত, সেই দীপঙ্কর দত্ত-র পরিবারের কাউকে অবশ্য এ দিন হাসপাতাল চত্বরে দেখা যায়নি। দুই তদন্ত দলের গাড়ি দেখে অবশ্য ভিড় জমান হাসপাতালে আসা কিছু মানুষ। তাঁদের দাবি, “এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে তার জন্য দোষীদের দ্রুত শাস্তি দাবি করছি আমরা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy