একটা-দু’টো নয়, তিন-তিনটে ভুল। ইবোলা-জ্বরে সন্ত্রস্ত টেক্সাস-সহ গোটা আমেরিকা। প্রমাদ গুনছেন সকলেই, না জানি আরও কত জন আক্রান্ত হবেন এই মারণব্যাধিতে।
ইবোলা-আক্রান্ত লাইবেরিয়া থেকে জ্বর গায়ে ফিরেছেন জানা সত্ত্বেও সম্প্রতি টেক্সাসের হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল এক রোগীকে। চিকিৎসকদের প্রথম ভুল ছিল এটাই। পরে টমাস এরিক ডানকান নামে ওই ব্যক্তি ইবোলা ভাইরাস ডিজিজ (ইভিডি)-এ মারা যান। সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই আক্রান্ত হন ওই হাসপাতালের এক নার্স। তিনি ডানকানের চিকিৎসা করেছিলেন। তখনই অভিযোগ ওঠে, যথেষ্ট সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়নি টেক্সাসের ওই হাসপাতাল। এর দু’দিনের মাথায় ভাইরাস মেলে আরও এক নার্সের শরীরে। শুধু তা-ই নয়, গত কয়েক দিনের ঘটনাক্রমের পর, জ্বর এসেছে জানা সত্ত্বেও নজরবন্দি করে রাখা হয়নি দ্বিতীয় নার্সকে। ওই অবস্থাতেই তাঁকে বিমান সফরের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সে দিন ১৩২ জন সহযাত্রীর সঙ্গে জ্বর গায়ে বিমানে যাত্রা করেন ওই মহিলা। স্বাভাবিক ভাবেই এখন কপালে হাত চিকিৎসকদের। ক্ষমাও চেয়েছেন তাঁরা। ড্যানিয়েল ভার্গা নামে এক চিকিৎসকের আক্ষেপ, “হাসপাতালেরই গাফিলতিতে এত কিছু। না হলে এত ভাল পরিকাঠামো, দক্ষ চিকিৎসক দল থাকা সত্ত্বেও কেন রোগ ধরা গেল না! আমাদেরই ভুল।”
নার্সরাও আঙুল তুলছেন হাসপাতালের দিকেই। তাঁদের অভিযোগ, কোনও রকম প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি নার্সদের। ইভিডি কী, তা নিয়ে একটা সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিল হাসপাতালের তরফে। সেখানেও ইবোলা সম্পর্কে সামান্যই তথ্য দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই সেমিনারটাও বাধ্যতামূলক ছিল না। ফলে অনেকেই তাতে যোগ দেননি।
টেক্সাসে আসার পর ৪৮ জনের সংস্পর্শে এসেছিলেন ডানকান। নজর রাখা হচ্ছে তাঁদের সকলের উপরেই। নজরবন্দি ওই হাসপাতালের ৭৬ জন কর্মীও। সেই তালিকায় সংযোজন হল ওই বিমানের ১৩২ জন যাত্রীর নাম। তাঁদের উপরে কী ভাবে লক্ষ্য রাখা হবে, তাই নিয়ে সন্দিহান চিকিৎসকেরা। আতঙ্ক দানা বেঁধেছে ওই যাত্রীদের মধ্যেও। তাঁদের থেকে অন্যদের শরীরেও সংক্রমণ ঘটবে না তো সে আশঙ্কা দানা বাঁধছে বাসিন্দাদের মনে। আতঙ্কে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু স্কুল-কলেজও। কারণ এ রোগের চিকিৎসা তো কারও জানা নেই।
এ দিকে আমেরিকা যে ভুল করেছে, স্পেন আর তা করতে চায় না। তাই এয়ার ফ্রান্সের একটি বিমান মাদ্রিদ বিমানবন্দরে নামতেই বিমানের এক যাত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর এসেছিল। আপাতত তাঁকে মাদ্রিদের হাসাতালে আইসোলেশন চেম্বারে রাখা হবে। যদিও সন্দেহভাজন রোগীকে ২১ দিন আলাদা করে রেখে যে খুব একটা লাভ নেই, এত দিনে তা স্পষ্ট। চিকিৎসকেরাই বলছেন, তাতে রোগের বিনাশ ঘটছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy