প্রতিযোগীর কাছে তিনি কঠিন প্রতিপক্ষ। প্রতিযোগিতার আসরে শরীরী কসরতে কয়েক মিনিটে ধরাশায়ী করতে পারেন শক্তিশালী কুস্তিগিরকেও। দেশের হয়ে পদকজয়ী, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো কুস্তিগির সাক্ষী মালিকের জীবনে নতুন অধ্যায়ের সূত্রপাত হয়েছে কয়েকটি মাস আগেই। তিনি এখন মেয়ের মা।
গত নভেম্বর মেয়ে ইয়োশিদা কাদিয়ানের জন্ম দিয়েছেন অলিম্পিক্সজয়ী কুস্তিগির সাক্ষী। রাতের পর রাত জেগে সদ্যোজাত সন্তানকে লালন করতে গিয়ে ধৈর্যচ্যুতি ঘটলেও, মাতৃত্বের অনুভব সুখের পরশ দিয়েছে তাঁর জীবনে। সাক্ষী বলছেন, ‘‘সন্তানের জন্মের পর বদলে গিয়েছে অনেক কিছুই। সদ্যোজাতের জন্য অনেক রাত না ঘুমিয়ে কেটেছে। এই যাত্রা কঠিন হলেও আলাদা সুখানুভূতি রয়েছে। সন্তানের জন্ম দেওয়া এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।’’ তবে একই সঙ্গেই কুস্তিগির বলছেন, ‘‘সন্তান জন্মের আগের দিন পর্যন্ত আমি শরীরচর্চা চালিয়ে গিয়েছি যাতে প্রসবের পরের শারীরিক এবং মানসিক বদলের ধাক্কা দ্রুত সামলে নিতে পারি।’’
সন্তানপ্রসবের আগে যখন ভীষণ সাবধানে থাকতে হয়, তখন শরীরচর্চা কতটা জরুরি? এতে কি সত্যি প্রসব-পরবর্তী মানসিক বদল, শারীরিক ধাক্কা সামলানো সহজ হয়?
আরও পড়ুন:
অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন শরীরচর্চা করেন অনেক তারকাই। বি-টাউনের অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন থেকে অনুষ্কা শর্মা, সকলেই তাঁদের শরীরচর্চার ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন। স্ত্রীরোগ চিকিৎসক ইন্দ্রাণী নায়েক বলছেন, ‘‘এই অবস্থায় শরীরচর্চায় বাধা নেই। তবে ওজন নিয়ে বেশি কসরত, বেশি কায়িক শ্রম না করাই ভাল। এই অবস্থায় ওজন নিয়ে দীর্ঘ ক্ষণের কসরতের ফলে জল ভেঙে যাওয়া, আগাম প্রসবযন্ত্রণা ওঠার মতো সমস্যা হতে পারে। তবে যোগাসন বা হালকা শরীরচর্চা করলে স্বাস্থ্য ভাল থাকবে।’’
ফিজ়িয়োথেরাপিস্ট চঞ্চল মোহান্তি বলছেন, ‘‘অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় সঠিক এবং নিয়মিত শরীরচর্চা প্রসবের পর শারীরিক দুর্বলতা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। এই সময় হাঁটাহাটি, নির্দিষ্ট কয়েকটি যোগাসন শরীর ভাল রাখতে সাহায্য করে।’’
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অনেকেরই ওজন অনেকটা বেড়ে যায়। হরমোনের তারতম্যে মনোজগতেও বদল হয়। আবার প্রসবের পরেও এমন একটি অধ্যায় চলে। মেজাজে প্রভাব পড়ে। শরীরেও বদল আসে। ঠিক সে কারণে শুধু অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নয়, তার পরেও শরীরচর্চা জরুরি বলছেন চিকিৎসক। তবে সন্তানপ্রসবের পরপরই নয়। স্বাভাবিক প্রসব হলে ১৫ দিন পর থেকেই শরীরচর্চা করা যাবে। তবে সি-সেকশনের ক্ষেত্রে অন্তত ৩০ দিন সময় লাগবেই। ওজন নিয়ে শরীরচর্চা করতে হলে অন্তত মাস দুয়েক পর থেকে শুরু করাই ভাল। যোগাসন এবং শরীরচর্চা ওজন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি প্রসব-পরবর্তী মানসিক, শারীরিক বদলের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে, বলছেন তিনি।