পানীয় জলে, খাবারে সর্বত্রই মিশে রয়েছে প্লাস্টিক। একটি প্লাস্টিকের বোতলে লক্ষ লক্ষ গুঁড়ো প্লাস্টিকের কণা মিশে থাকে বলে কিছু দিন আগেই গবেষকেরা জানিয়েছিলেন। খাবারের সঙ্গেও প্রতিনিয়ত অতি সূক্ষ্ম প্লাস্টিকের কণা বা মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে ঢুকে রক্তে মিশে যাচ্ছে। কারণ প্লাস্টিকের কন্টেনার থেকে শুরু করে প্লাস্টিকের কাপ, এমনকি নুন-চিনি ও মশলাপাতিতেও নাকি মিশে রয়েছে প্লাস্টিকের গুঁড়ো। এর মধ্যেই আরও চমকে দেওয়ার মতো তথ্য দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। চিউয়িং গামেও নাকি মিশে রয়েছে প্লাস্টিকের কণা। এক একটি চিবোনো মানেই শয়ে শয়ে প্লাস্টিকের কণা ঢুকবে শরীরে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের ক্যালোফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা এই বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই গবেষণা চালাচ্ছেন। গবেষক সঞ্জয় মোহান্তি জানিয়েছেন, চিউয়িং গামেও মিশে থাকে অতি সূক্ষ্ম প্লাস্টিকের কণা। চিবোনোর সঙ্গে সঙ্গেই সেগুলি লালায় মিশে যাবে। আর পরে গিয়ে রক্তে মিশবে।
আরও পড়ুন:
১০ রকম ব্র্যান্ডের চিউয়িং গাম নিয়ে নিজের উপরেই পরীক্ষা করেছেন বিজ্ঞানী লিসা লোয়ি। তিনি জানান, প্রতিটিতেই সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম প্লাস্টিকের কণা মিশে রয়েছে। ১ গ্রাম বা দেড় গ্রাম ওজনের এক একটি চিউইং গাম চিবোনোর পরে তাঁর মুখ থেকে নেওয়া লালার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। আর তাতে দেখা যায়, প্রতি বার চিবোনোর পরে ১০০-৬০০ প্লাস্টিকের কণা মিশেছে তাঁর লালায়। তিনি জানান, কেউ যদি বছরে ১৮০টি চিউইং গাম চিবোন, তা হলে ৩০ হাজারের বেশি মাইক্রোপ্লাস্টিক মিশবে তাঁর রক্তে।
মাইক্রোপ্লাস্টিক দিনের পর দিন শরীরে ঢুকে রক্তে মিশতে থাকলে তা বিভিন্ন জটিল রোগের কারণ হয়ে উঠতে পারে। প্লাস্টিক রক্তে মিশলে ইনসুলিনের ক্ষরণে প্রভাব ফেলে, যা পরবর্তী সময়ে ডায়াবিটিসের কারণ হয়ে উঠতে পারে। শুধু তা-ই নয়, প্লাস্টিক শরীরে হরমোনের ভারসাম্যও বদলে দিতে পারে। শুধু তা-ই নয়, প্লাস্টিকের ‘বিপিএ’ হরমোন ও ক্রোমোজ়োম-ঘটিত সমস্যাও ডেকে আনতে পারে। অধিক মাত্রায় প্লাস্টিক কণা শরীরে জমলে পুরুষদের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর পরিমাণ কমিয়ে দেয়। মহিলাদের বিভিন্ন হরমোন ক্ষরণে বাধা তৈরি করে।আর মস্তিষ্কে জমা হতে থাকলে তা বিভিন্ন রকম স্নায়বিক রোগের কারণ হতে পারে।