মঙ্গলবার ব্রিটেনের বণিকমহলের সামনে বাংলার শিল্পবান্ধব পরিবেশ তুলে ধরেছিলেন বাংলায় ব্যবসা করা বাঙালি-অবাঙালি শিল্পপতিরা। তার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিস্তারিত পরিসংখ্যান দিয়ে জানিয়েছিলেন, কেন বাংলা এখন বিনিয়োগকারীদের গন্তব্য। সেই বৈঠকের সূত্র ধরেই বুধবার ব্রিটেনের বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করলেন রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা।
সরকার ও বণিকমহলের সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, শিল্পোন্নয়ন দফতরের প্রধান সচিব বন্দনা যাদব প্রমুখ। ব্রিটেনের বণিকমহলের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন বার্কলেসের সিইও স্টিভেন ফ্লাহার্টি, শক্তি বিষয়ক প্রযুক্তি সংস্থা গ্র্যাভিট্রিসিটির চেয়ারম্যান মার্টিন রাইট, স্কটিশ লাইফ সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশনের সিইও স্কট জনস্টোন, ভিসুভিয়াস গ্রুপের কর্ণধার হেনরি নোলেস।
রাজ্য সরকার সূত্রে খবব, পৃথক পৃথক বৈঠকে প্রত্যেকে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। বার্কলেসের সিইও স্টিভেন বলেছেন, তাঁদের সংস্থার ৫০ শংতাশ কর্মী ভারতীয়। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ব্রিটিশ বণিকের উদ্দেশে বার্তা দেওয়া হয়েছে বাংলায় বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে অতীতের (পড়ুন বাম জমানা) যে জটিলতা ছিল তা নেই। এখন পরিস্থিতি অনেক সুন্দর এবং সাবলীল।
আরও পড়ুন:
রাজ্য সরকার সূত্রে খবব, ব্রিটিশ বণিকমহলের প্রতিনিধিরাও বাংলার শিল্প সম্ভাবনা, পরিস্থিতির বিষয়ে আলোকপাত করেছেন।
যে কোনও বিনিয়োগকারীর কাছেই পরিবেশ, শ্রমিকের মান এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ সূচক। সেই তিন সূচকের কথাই মঙ্গলবার মমতা উল্লেখ করেছিলেন ব্রিটেনের বাণিজ্য বৈঠকে। বাম সরকারের সময়ের ধর্মঘটের সংস্কৃতির কথা উল্লেখ করে মমতা বলেছিলেন, ‘‘আগের সরকারের সময়ে ধর্মঘটের কারণে অনেক কর্মদিবস নষ্ট হত। কিন্তু আমরা বন্ধের সংস্কৃতিই বন্ধ করে দিয়েছি। এখন আর বাংলায় কোনও শ্রমদিবস নষ্ট হয় না।’’ নির্দিষ্ট কাজের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার যে ভাবে আইটিআই, পলিটেকনিক তৈরি করেছে, সেই পরিসংখ্যানও দিয়েছিলেন মমতা। একই সঙ্গে উল্লেখ করেছিলেন, আরও বিনিয়োগ টানার লক্ষ্যে রাজ্যে ছ’টি শিল্প করিডর তৈরি হচ্ছে। প্রসঙ্গত, রাজ্য বাজেটে সেই করিডর নির্মাণের জন্য অর্থের সংস্থানও রেখেছে রাজ্য সরকার। বাজার সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের আরও একটি আগ্রহ কাজ করে। তা হল সংশ্লিষ্ট বাজারে নগদের লেনদেন কেমন রয়েছে। সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘বাংলায় ক্যাশ ফ্লোয়ের কোনও সঙ্কট নেই।’’
মুখ্যমন্ত্রী বাণিজ্য বৈঠক করেছেন। রাজ্য সরকার বণিকমহলের সঙ্গে পৃথক ভাবে কথা বলেছে। পরের বছর বিধানসভা ভোট। তার আগে বাংলায় বিনিয়োগ টানা এবং তার বিপণনই মমতা তথা তৃণমূলের লক্ষ্য।