কী বলছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা? ছবি: সংগৃহীত।
সিনেমার নামেই এখন বেঁচে থাকার নির্ভেজাল আশ্বাসবাক্য লুকিয়ে রয়েছে— ‘চিনি কম’। চিনির পরিমাণে লাগাম রাখতে পারলেই রোগে ভোগান্তির আশঙ্কা কম! শুধু রক্তে শর্করার পরিমাণ নয়, দেহের বাড়তি ওজন বা মাত্রাতিরিক্ত মেদ নিয়ন্ত্রণ করতে ‘নো সুগার’ মন্ত্রে দীক্ষিত হয়েছেন অনেকেই। কিন্তু মিষ্টি ছাড়া চা যাঁদের মুখে একেবারেই রোচে না, তাঁদের জন্য বিকল্প উপায় হল আর্টিফিশিয়াল সুইটনার বা কৃত্রিম চিনি! এই চিনি খেলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি যাওয়ার ভয় থাকে না। তাই ‘আর্টিফিশিয়াল সুইটনার’-এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু এই ধরনের কৃত্রিম চিনির অতিরিক্ত ব্যবহার যে শরীরের জন্য বিপজ্জনক, তেমনটাই বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।
রান্নাবান্না থেকে চা-কফি, ডায়াবিটিকদের সবেতেই ভরসা কৃত্রিম চিনি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, কৃত্রিম চিনি খেলে ওজন তো কমেই না, উল্টে এতে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদান শরীরের ক্ষতি করে। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও এই চিনির খুব একটা ভূমিকা যে নেই, তারও প্রমাণ মিলেছে। এ বিষয়ে গত বছর একটি নির্দেশিকাও প্রকাশ করেছিল ‘হু’। সংস্থার ‘নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড সেফটি’ বিভাগের ডিরেক্টর ফ্র্যান্সেস্কো ব্রাঙ্কার মত, কৃত্রিম চিনি শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। মিষ্টি জাতীয় কিছু খেতে ইচ্ছা করলে কৃত্রিম চিনি দেওয়া খাবারের বদলে তাই ফল খাওয়া ভাল। তাঁর কথায়, ‘‘কৃত্রিম চিনিতে কোনও পুষ্টিকর উপাদান থাকে না। সুস্থ ভাবে বাঁচতে গেলে মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছাকে দমন করাই শ্রেয়।’’
কৃত্রিম চিনির মূল উপাদানগুলি হল— অ্যাসপার্টেম, সুক্রোজ়, সুক্রালোজ়, স্যাকারিন, নিওটেম এবং স্টিভিয়া। যে কোনও প্রক্রিয়াজাত খাবার, জাঙ্ক ফুড, ডায়েট পানীয়ের মধ্যে এই রাসায়নিকগুলি থাকে। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, সাধারণ চিনির তুলনায় কৃত্রিম চিনির মিষ্টত্ব অন্তত পক্ষে তিনশো গুণ বেশি। ব্যবসায়িক কারণে মধ্যবিত্তের সাধ্যের নাগালে আনতে তাই অনেক সময়েই এতে সিলিকা-সহ নানা ধরনের ক্ষতিকর পণ্য মেশানো হয়। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যাসপার্টম প্রবেশ করলে ক্যানসারের মতো মারণরোগের আশঙ্কা বাড়ে। মাইগ্রেন, উদ্বেগ এবং স্নায়ুজনিত সমস্যাও বাড়তে পারে। তবে কৃত্রিম শর্করা খেলে মেদের পরিমাণ কমে। কিন্তু তার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি নয়। তা ছাড়া, কৃত্রিম চিনিতে থাকা স্যাকারিন শরীরে ইনসুলিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে তোলে। এই হরমোনের কলকাঠিতেই ওজনে যত বিপত্তি ঘটে।
সাম্প্রতিক বিভিন্ন রিপোর্টেও দেখা গিয়েছে, কৃত্রিম সুইটনার টাইপ-টু ডায়াবিটিস, কার্ডিয়োভাসকুলার রোগ, হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা, কিডনির সমস্যা এবং মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয়। কৃত্রিম চিনিতে যে সুক্রালোজ় থাকে, তা চিনির তুলনায় অনেক গুণ বেশি মিষ্টি হয়। তাই চিনির বদলে গুড়ের বাতাসা, গুড় বা নারকেলজাত চিনি খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy