শরীরচর্চা থেকে হওয়া ব্যথার ‘জুজু’ জব্দ করুন ঘরোয়া কিছু পদ্ধতিতে। ছবি: শাটারস্টক।
শরীরচর্চার অন্যতম কার্যকর উপায় দৌড়নো। হালকা জগিং, একটু জোরে হাঁটা, ধীর লয় থেকে মধ্য লয়ে দৌড়নো— এ সব কেবল ওজন কমায়, মেদ ঝরায় তা-ই নয়, বরং মাংসপেশীগুলোকে মজবুত রাখতে, পেশীর শিথিলতা রুখতেও এই কসরত প্রয়োজনীয়। দৌড়লে একই সময়ে সম্পূর্ণ শরীরের কসরত হয়ে যায়।
কিন্তু দৌড়নো শুরু করার ইচ্ছে হলেই তা শুরু করে ফেললাম, এমনটা করা উচিত নয় বলেই মত ফিটনেস বিশেষজ্ঞদের। মাথায় রাখতে হবে হঠাৎ দৌড় শুরুর পর চোট-আঘাতের দিকটাও। চিকিত্সক সুকোমল সেন জানালেন, “এক দিন সকালে উঠে বা বিকেলে মনে হল, যাই একটু দৌড়ে আসি, বিষয়টা এ ভাবে না ভাবাই ভাল। মানসিক প্রস্তুতির সঙ্গে হঠাৎ শুরু করা শারীরিক কসরতের কারণে শরীরের নানা ব্যথা-বেদনা কী ভাবে সামাল দেব, তা জানাও জরুরি। ‘প্রতি দিন অভ্যাস করতে করতে কমে যাবে’— এই ভুল ধারণা থেকে আগে বেরতে হবে।’’
হঠাৎ তৈরি হওয়া নতুন রুটিনে শরীরের অভ্যস্ত হতে কিছুটা সময় লাগে। তাই জগিং বা দৌড়নো শুরু করার পর পেশীতে টান ধরা বা যন্ত্রণা হওয়া খুব স্বাভাবিক ঘটনা। ভয়ে পেয়ে দৌড়নো বন্ধ করে দেওয়ারও কোনও কারণ নেই। কিন্তু সঙ্গে এই যন্ত্রণাকে নিয়ন্ত্রণ করা নিয়েও ওয়াকিবহাল থাকতে হবে। এই যন্ত্রণা দীর্ঘ দিন স্থায়ী হয়, তা হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সাধারণত মাংসপেশীর যন্ত্রণাকে কিছু উপায়ে কব্জা করাও যায়। কেমন তা?
আরও পড়ুন: রোজ কতটা নুন খাবেন?
মালাইচাকিতে যন্ত্রণা: দৌড়নোর সময় মালাইচাকিতে আঘাত পাওয়া সবচেয়ে সাধারণ ব্যাপার। এর ফলে দৌড়নোর সময় মালাইচাকির নীচের অংশে যন্ত্রণা শুরু হয়। অতিরিক্ত দৌড়নো, পায়ের সমস্যা থাকলে এই ধরনের আঘাত লাগে।
কী করবেন: মালাইচাকিতে চোট পেলে ততক্ষনাৎ দৌড়নো বন্ধ করে দিন এবং পেশীর প্রদাহ কমানোর চেষ্টা করুন। তার পর নিতম্ব এবং গ্লুটসের শক্তি বাড়ানোর জন্য কসরত শুরু করুন। তবে ব্যথা না কমা পর্যন্ত স্কোয়াটের মতো ব্যায়াম এড়িয়ে যান।
সিন স্প্লিন্টস: এই ক্ষেত্রে পায়ের নীচের অংশের সামনে যে হাড় থাকে, তাতে ব্যথা অনুভূত হয়। সাধারণত খুব জোড়ে এবং অতিরিক্ত দৌড়নোর কারণে এই চোট লাগে। অতিরিক্ত দৌড়নোর ফলে হাড়ের চারদিকের টিসুতে ভাঙন ধরে এবং পা ফুলে যায়।
কী করবেন: যেহেতু অতিরিক্ত দৌড়নোর ফলে এই চোট লাগে, আহত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দৌড়নো বন্ধ করে দিন। বরফ নিয়ে ফোলা অংশে লাগালে কিছুটা আরাম মিলবে। যন্ত্রণা দীর্ঘস্থায়ী হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
পায়ের পাতায় যন্ত্রণা: যাঁদের হাঁটাচলার অভ্যাস কম এবং যখন পায়ের হিলের নীচের অংশের টিসুতে রক্ত সঞ্চালন সঠিক ভাবে হয় না, তাঁদের এই ধরনের যন্ত্রণা হয়। সাধারণত দৌড়নোর শুরুতে এই ব্যথা অনুভূত হয়। তবে দৌড়নোর ২-৩ মিনিটের মধ্যে ব্যথা চলে যায়।
কী করবেন: দৌড়নো শুরুর আগে ২-৩ মিনিট ওয়ার্ম আপ করে নিন। ব্যথা কমার জন্য স্ট্রেচিং করুন। ঠান্ডা জলের বোতলের উপর পা রাখলেও আরাম মিলবে।
আরও পড়ুন: প্রাপ্তবয়স্কদেরও ভ্যাকসিন প্রয়োজন
হ্যামস্ট্রিংয়ে টান: উরুর পিছনের অংশের মাংসপেশীর শক্ত হয়ে যাওয়ার ফলে হ্যামস্ট্রিংয়ে টান ধরে। অল্প সময়ের মধ্যে দ্রুত দৌড়লে বা জগিং করলে এই চোট লাগে। সাধারণত হাঁটু মু়ড়ে বসার সময় এই ব্যথা অনুভূত হয়।
কী করবেন: বেশি চোট লাগলে তত্ক্ষনাৎ দৌড়নো বন্ধ করুন এবং কিছু দিনের জন্য বিশ্রাম নিন। ফের ব্যায়াম শুরুর আগে ওয়ার্ম আপ করতে ভুলবেন না।
গোড়ালি মুচকে যাওয়া: গোড়ালি মুচ়ড়ে অথবা ঘুরে গিয়ে অসহনীয় ব্যথার সৃষ্টি হয়। হঠাৎ গোড়ালিতে আঘাত লাগলে গোড়ালির লিগামেন্ট ছিঁড়ে গিয়ে পা ফুলে যায়।
কী করবেন: কিছু দিনের জন্য দৌড়নো বন্ধ করে ফিটনেস ট্রেনারের পরামর্শ মেনে অন্য কিছু ব্যায়াম করুন। বরফ নিয়ে ফোলা অংশে লাগান। এই চোট সেরে উঠতে ২-৩ সপ্তাহ লেগে যায়। ভবিষ্যতে এই ধরনের চোট এড়াতে গোড়ালির মাংসপেশীর জোর বাড়ান। মেনে চলুন ফিজিওথেরাপিস্ট ও চিকিৎসকের পরামর্শ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy