Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
BEDROOM CULTURE

সারা বিশ্বে দম্পতিদের যৌন ইচ্ছা কমে যাওয়ার মূলে রয়েছে এই কারণ!

মূল সমীক্ষাটি আমেরিকাকে কেন্দ্র করে হলেও এই সমীক্ষার সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন এ দেশের মনস্তত্ত্ববিদরাও।

বিছানার আকর্ষণ কমে আসছে গোটা বিশ্ব জুড়েই। দাবি নানা সমীক্ষার। ছবি: আইস্টক।

বিছানার আকর্ষণ কমে আসছে গোটা বিশ্ব জুড়েই। দাবি নানা সমীক্ষার। ছবি: আইস্টক।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৩:১৩
Share: Save:

মনের সঙ্গে শরীর। এই দুইয়ের ঠিক মিলমিশই বিশ্বের যে কোনও সুস্থ ও স্বাভাবিক বিবাহিত সম্পর্কের বুনিয়াদ বলে মনে করা হয়। চিকিৎসকদের মতে, সুস্থ যৌনতা কেবল সম্পর্কের ভিতকে মজবুত করে এমনই নয়, মানসিক অবসাদ দূর করা, জীবনীশক্তি বাড়ানো ইত্যাদি নানা ইতিবাচক দিক রয়েছে এর। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, যৌন জীবনে নিরাসক্তি ও বিছানায় অনীহা বিশ্বের প্রায় সব দেশের দম্পতিদের মধ্যেই দেখা দিচ্ছে। আর তার মূলে রয়েছে স্মার্টফোন!

মূল সমীক্ষাটি আমেরিকাকে কেন্দ্র করে হলেও এই সমীক্ষার সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন এ দেশের মনস্তত্ত্ববিদরাও। সম্প্রতি এক মার্কিন তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থার গবেষণায় উঠে এল এমনই চমকপ্রদ তথ্য! লিভ ইন হোক বা বিবাহিত সম্পর্ক— সব ক্ষেত্রেই যৌন জীবনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বেডরুমেও স্মার্টফোনের হাতছানি। আর সোশ্যাল মিডিয়ার এই মোহপাশ কেটে সঙ্গীর দিকে মন দেওয়ার সময়ই থাকছে না কারও! এমনকি, সদ্য বিবাহিতরাও বাদ নন এই তালিকা থেকে। ফলে ‘কোয়ালিটি টাইম’-এর হাহাকার বাড়ছে। তৈরি হচ্ছে নানা সামাজিক ও সাংসারিক জটিলতা।

আমেরিকার বিভিন্ন প্রদেশ থেকে প্রায় ২ হাজার দম্পতির উপর সমীক্ষা চালালে দেখা যায়, তাদের প্রায় তিন-চতুর্থাংশই একান্ত নিজস্ব সময়ও রতিক্রীড়ার চেয়ে বেশি ব্যস্ত থাকেন মোবাইল ফোনে। শুধু তা-ই নয়, নারী-পুরুষ নির্বিশেষ অধিকাংশের দাবি, ঘুমোতে যাওয়ার আগে তাঁদের প্রেমিক বা জীবনসঙ্গীর মুখ নয়, মোবাইল দেখেই চোখ বোজেন তাঁরা। এমনকি, এঁদের কারও কারও একই বাড়িতে থেকেও পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে উঠছে সাধের স্মার্টফোনটি। প্রয়োজনীয় কথা বা তথ্য চালান হচ্ছে সোশ্যাল সাইটের মাধ্যমেই!

আরও পড়ুন: অফিসের কাজ থেকে বাড়ির দায়িত্ব, সারা দিন নিখুঁত ও কর্মক্ষম থাকতে চান? জেনে নিন কৌশল

মোবাইলে বুঁদ হয়েই অধিকাংশ সময় কাটছে দম্পতিদের। ছবি: আইস্টক।

পরীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রায় ৫৫ শতাংশের মত, কেবল যৌন জীবনই নয়, অত্যধিক ফোন ব্যবহারের কারণেই নিজেদের জীবনসঙ্গীর সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্কও ব্যাহত হচ্ছে। ৩৫ শতাংশ জানাচ্ছে, মোবাইল আসক্তির কারণে তাঁদের মধ্যে বিশেষ কোনও শারীরিক সম্পর্ক নেই বহু দিন ধরেই।

তবে এ ছবি কেবল মার্কিন দেশেই নয়, প্রযুক্তির শিখরে থাকা দেশগুলির মতো ভারতেও এই প্রবণতা দিনে দিনে বাড়ছে বলে দাবি মনোবিদদের। মনোবিদ জয়রঞ্জন রামের মতে, ‘‘কেবল মার্কিন দেশে নয়, এর আগেও বিভিন্ন সময় নানা দেশেই এই ধরনের সমীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে, এবং তাতে এমনই সব ফলাফল বেরিয়ে এসেছে, যা সমাজ ও সংসার জীবন দু’ক্ষেত্রেই বেশ বিপদের। ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও চাওয়া-পাওয়াকে গুরুত্ব না দেওয়ার কিংবা শীরীরিক চাহিদাকে সরিয়ে রেখে মোবাইলে বুঁদ হয়ে থাকতে পারার যে ক্ষমতা তৈরি হচ্ছে তা ভবিষ্যতে সমাজকে আরও বড় বিপদের দিকে নিয়ে যাবে।’’

আরও পড়ুন: টেনশনে হাত পা ঠান্ডা, কাঁপুনি বা ঘন ঘন বাথরুমে ছোটা? কী করে সামলাবেন?

গোটা দেশেই কর্মব্যস্ততা, বাড়ি ফিরেও অফিসের মেল-এ বুঁদ হয়ে থাকা, ছুটির দিনেও সময় না পেয়ে প্রায়ই রাত জেগে সিনেমা দেখার প্রবণতা, সোশ্যাল সাইটের হাতছানি— সব মিলিয়ে অবস্থা যে জটিলতর হচ্ছে তা মেনে নিচ্ছেন মনস্তত্ত্ববিদ ঈশাণী শর্মাও। তাঁর মতে, ‘‘আজকাল মানুষ নিজেকে নিয়ে এত বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ছে যো সেখানে সামাজিক বন্ধন, দায়-দায়িত্ব এমনকি সন্তানের দায়ভারও ফিকে হয়ে আসছে। নিজের জগৎ, নিজস্ব ব্যস্ততা ও জীবনের দ্রুততার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে গিয়ে বাড়ছে অবসাদ। আর তা থেকে চটজলদি মুক্তি খুঁজতে মানুষ আঁকড়ে ধরছে নানা সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মকে। তার ফলেই যৌনতার মতো আবশ্যিক চাহিদাতেও কোপ পড়ছে।’’

(ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন — ফিরে দেখা এই দিন।)

অন্য বিষয়গুলি:

Relationship Tips Life Hacks Smartphone Tech
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE