ভারতে ড্রাই আই ডিজিজের শিকার বহু মানুষ।
বুক ফাটে তবু চোখ ফোটেনা। চোখে কিছুতেই চোখে জল আসে না। সকলের সামনে কাঁদা তো রীতিমতো লজ্জার! এ সব ভাবনা যে সব সাহসীর মনে জায়গা করে নেয়, তাঁদের পিঠ ইয়ারদোস্তরা চাপড়ে দিলেও অশনি সঙ্কেত দেখছেন গবেষকরা।
‘দ্য অকুলার সারফেস’ নামক একটি জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষার রিপোর্টে এমনই তথ্য উঠে এসেছে। ২০১০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, ওড়িশা, কর্ণাটকের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে প্রায় ১৪.৫ লক্ষ মানুষের উপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখা যাচ্ছে, তাঁদের মধ্যে ২১ হাজার জন ড্রাই আই ডিজিজের শিকার। সমীক্ষকদের আশঙ্কা, ২০৩০ সালের মধ্যে মহামারির আকার ধারণ করবে এই রোগ।
ভারতের মোট জনসংখ্যার চল্লিশ শতাংশই এই রোগের শিকার হবেন। উল্লেখ্য মহিলাদের তুলনায় পুরুষের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। চক্ষু বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের এই মুহূর্তে সব থেকে অবহেলিত রোগগুলির একটি এই ড্রাই আই ডিজিজ। সময়মতো চিকিৎসা না এই হলে দৃষ্টিশক্তি হ্রাস তো পাবেই, সম্পূর্ণ অন্ধত্বও ঘটতে পারে।
আরও পড়ুন: বাড়ছে গরম, কেমন সানগ্লাস কিনলে বাঁচবে ত্বক ও চোখ?
কিন্তু কেন এই রোগের প্রকোপ? চমকে যেতে হয় বিশেষজ্ঞদের উত্তরে। চক্ষু রোগবিশেষজ্ঞ প্রজ্ঞান রাও ডনথিনেনি জানাচ্ছেন, ‘‘অন্তত ২০ শতাংশ রোগীরই চোখের জলের উৎপাদন স্বাভাবিকের থেকে কম। কী কারণে তাঁরা কাঁদতে পারেন না, এর পিছনে অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা কাজ করে কিনা, তা বুঝতেও গবেষণা চলছে।’’
আর এক চক্ষুবিশেষজ্ঞ এস কে চ্যাটার্জিজানিয়েছেন, ‘‘আগের তুলনায় পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ‘ড্রাই আই ডিজিজ’-এ আক্রান্ত রোগীর পরিমাণ। দূষণই এর প্রধান কারণ। তাছাড়া চোখের গ্রন্থি থেকে পরিমাণ মতো জল নিঃসারণ হয় না অনেকের চ্যানেলের অসুবিধের কারণে।’’
মহামারির মতো ছড়াতে থাকা এই রোগের থাবা থেকে বাঁচতে বেশ কিছু নিদান দিচ্ছেন এই চিকিৎসকরা। দেখে নিন সে সব।
কান্না চেপে রাখা উচিত নয়।
আরও পড়ুন: কনজাংটিভাইটিসের ভয়? মিথ ভুলে মেনে চলুন এ সব সতর্কতা
বাইরে থেকে এসে হাত মুখ ধোওয়ার সময়ে খুব ভাল করে চোখে জলের ঝাপটা দিতে হবে যাতে চোখের রাস্তার ধুলোবালির কণা অবশিষ্ট না থাকে। ধুলোবালির জায়গায় অবশ্যই সানগ্লাস ব্যবহার করা উচিত। সিগারেটের ধোঁয়া এড়িয়ে চলতে হবে। চোখকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দেওয়া জরুরি। খাবারে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। বাড়িতে এয়ার ফিল্টার ব্যবহার করা ভাল। কান্না চাপা চলবে না ।
তাই এবার থেকে কান্না পেলে কেঁদে ফেলুন। প্রকাশ্যে অসুবিধে হলে বাথরুমে যান। চোখদুটোকে রাখতে হবে তো!
ছবি: শাটারস্টক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy