অভিনেতা ওম পুরী (বাঁ দিকে) এবং পোশাক শিল্পী মাসাবা গুপ্তা। —ফাইল চিত্র।
তাঁর মা নীনা গুপ্ত বলিউডের অভিনেত্রী। তিনি খ্যাতি অর্জন করেছেন পোশাকশিল্পী হিসাবে। অম্বানী বাড়ির মেয়ে-বৌমারা তাঁর নকশা করা পোশাক পরেন। বলিউডের তাবড় তারকাদের পছন্দের পোশাকশিল্পী তিনি। সেই মাসাবাকেও তাঁর রূপের জন্য কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছিল। এক সাক্ষাৎকারে সেই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন পোশাকশিল্পী। মাসাবা বলেছেন, ‘‘আমি আমার ব্র্যান্ডের একটি ত্বকের প্রসাধনী নিয়ে লাইভ করছিলাম। আচমকাই এক জন মন্তব্য করেন, ‘আরে আপনি মেকআপ ব্র্যান্ড নিয়ে কী করছেন, আপনার নিজের ত্বক তো ওম পুরীর মতো’। কথাটা শুনে হতভম্ব হয়ে যাই! আমার মনে হয়েছিল, অভিনয় গুণ ছাড়া ওম পুরীর মতো অভিনেতার বিষয়ে আর কী আলোচনা করার থাকতে পারে?’’
কাউকে দেখতে কেমন, তা নিয়ে বাঁকা মন্তব্য আমাদের সমাজে প্রায়ই শোনা যায়। আকছার তাতে মনে আঘাতও পান অনেকে। মনোবিদ গুরলীন বরুয়া বলছেন, এই ধরনের তুলনা মানসিক ভাবেও বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে যে কোনও মানুষকে।
চেহারা নিয়ে কটাক্ষ কী কী মানসিক ক্ষতি করতে পারে?
গুরলীন বলছেন, ‘‘আমাদের সমাজে রূপের একটা বাঁধাধরা সংজ্ঞা আছে। সেই সংজ্ঞার বাইরে কিছু পরলেই আমরা নিজের মতো করে তার বিচার করি। বিনা দ্বিধায় মতামতও দিই। যদি কাউকে তাঁর চেহারা নিয়ে ক্রমাগত অন্য কারও সঙ্গে তুলনা করা হয় বা নিন্দা করা হয়, তবে তার মানসিক ক্ষতি হওয়া স্বাভাবিক।’’
আত্মবিশ্বাসের অভাববোধ: বার বার একই বিষয়ে তুলনা এবং তাচ্ছিল্য করা হলে কেউ মনে করতেই পারেন তিনি বাকিদের থেকে অনেকটা কম বা নিচু মানের। তা থেকে আত্মবিশ্বাসের অভাব তৈরি হতে পারে।
বডি ডিসমরফিক ডিজ়অর্ডার: এই ধরনের সমস্যায় এক জন মনোরোগী হয় বার বার নিজেকে আয়নায় দেখবেন অথবা সব সময়ে আয়না এড়িয়ে চলবেন। টুপি, চাদর, স্কার্ফ বা প্রসাধনীর আড়ালে নিজেকে ঢেকে রাখার চেষ্টাও করতে পারেন। দেখতে ঠিক লাগছে কি না, তা জানার জন্য আশপাশের মানুষকে বার বার প্রশ্নও করতে পারেন।
অবসাদ এবং উদ্বেগ: অবসাদ বা স্থায়ী হতাশবোধ তৈরি হতে পারে। কোনও কোনও সময় মনে হতে পারে জীবনে আশার কোনও আলো নেই। সমাজে মেলামেশা বন্ধও করে দিতে পারেন।
খাওয়াদাওয়ার সমস্যা: হয় বেশি খাওয়া বা না খাওয়া— যে কোনও ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে এমন হলে। উল্টোপাল্টা খাবার খাওয়ার ফলে অন্য শারীরিক রোগও দেখা দিতে পারে।
কী ভাবে নিজেকে ঠিক রাখবেন?
১। অনেক সময় বাইরের সমালোচনায় প্রভাবিত হয়ে আত্মসমালোচনা শুরু করেন অনেকে। সেটা আগে বন্ধ করুন।
২। নিজের প্রতি কঠোর না হয়ে বরং বিষয়গুলি একটু ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখুন। নিজেকে বলুন কেউ নিখুঁত নয়। হতে পারে না। নিজের সঙ্গে কথা বলুন কিন্তু সমালোচক হিসাবে নয়।
৩। আপনার মধ্যে কী কী ভাল গুণ আছে, সেগুলি খুঁজে বার করার চেষ্টা করুন। বাইরের রূপের থেকে সেই সব গুণেই মন দিন বেশি।
৪। সমাজমাধ্যম এড়িয়ে চলুন। অন্তত কিছু দিনের জন্য। প্রয়োজন হলে পরে চেহারা নিয়ে এমন মন্তব্যের শিকার যাতে আর কেউ না হয়, তার জন্য প্রচারের কাজ করতে পারেন। তাতে মনের জোর বাড়বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy