কর্মব্যস্ততায় হাঁপিয়ে পড়লেও আমরা গুরুত্ব দিই না শরীরকে। তখন এই ভাবনাই মাথায় ঘোরে যে, প্রচুর কাজে ক্লান্ত হয়ে পড়ছে শরীর। কিন্তু সমস্যাটা হতে পারে আরও গভীর। মেয়েদের তো বটেই, ছেলেদেরও রক্তে আয়রনের ঘাটতি এখনকার দিনে বড় সমস্যার। আর রক্তে আয়রনের অভাব পরে সৃষ্টি করতে পারে নানা জটিলতার। কিন্তু রোজকার খাদ্যতালিকার দিকে সামান্য নজর দিলেই কমানো যায় আয়রনের ঘাটতি।
প্রাথমিক লক্ষণ
শারীরিক ক্লান্তি ছাড়াও আয়রন ডেফিশিয়েন্সির নানা লক্ষণ রয়েছে। সকালে ঘুম থেকে উঠেও ক্লান্ত লাগে শরীর। ফ্যাকাশে ভাব ছড়িয়ে পড়ে মুখে, চোখে। আবার কোষে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেওয়ার কারণে অল্পেই হাঁপ ধরে। সঙ্গে রয়েছে মাথা ধরা, ঠিক মতো ঠাহর করতে না পারার মতো সমস্যা। ত্বকে ফুটে ওঠে রুক্ষতা। আবার ঠোঁট, জিভ ফুলে ওঠে। কমবেশি এই ধরনের লক্ষণগুলি শরীরে নিয়মিত দেখা দিলে বুঝতে হবে, এ নেহাতই কর্মব্যস্ততার ক্লান্তি নয়। তখন চিকিৎসকের পরামর্শ মতো করাতে হবে হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা। তা হলে ধরা পড়বে রক্তাল্পতা ও আয়রনের ঘাটতির প্রমাণ।
ঘাটতি রোধে
রক্তে আয়রনের মাত্রা বাড়াতে প্রথমেই দরকার এমন খাবার, যাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। নিউট্রিশনিস্ট দীপিকা সিংহ বলছেন, ‘‘খাবারে প্রাপ্ত আয়রন দু’ধরনের— হিম আয়রন ও নন-হিম আয়রন। হিম আয়রন পাওয়া যায় মাছ, মাংস, ডিমে। এ ধরনের আয়রনের প্রায় শতকরা ৪০ শতাংশ সরাসরি শরীর শোষণ করতে পারে। আর নন-হিম আয়রন পাওয়া যায় উদ্ভিজ্জ খাবার থেকে।’’ তবে সব আয়রন শরীর শোষণ করতে পারে না। তাই আয়রন-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হবে, যাতে শরীর তা শোষণ করতে পারে। ‘‘যেমন ভাতের সঙ্গে শাক ভাজা খাওয়ার সময়ে দু’ফোঁটা লেবুর রস দিতে পারেন। এতে আয়রন অ্যাবজ়র্বশন হবে ভাল,’’ বলছেন ডায়াটিশিয়ান কোয়েল পালচৌধুরী। পালংয়ের মতো শাক, ব্রকোলি, ডাল, বিন, বাদাম, বেদানা, নানা ধরনের বীজ, ব্রাউন রাইস, নানা সিরিয়াল বা দানাশস্য, হোল হুইট খেতে পারেন। আবার ভিটামিন এ এবং সি সমৃদ্ধ খাবার তালিকায় রাখলে তা আয়রন শোষণ করতে শরীরকে সাহায্য করে।
আয়রনের বিকল্প
কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা প্রয়োজন বুঝে দেন আয়রন সাপ্লিমেন্ট। তার ফলে পেট ব্যথা, পেট খারাপের মতো বেশ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। তাই সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসককে নিজের শারীরিক ইতিহাস ও অ্যালার্জি সম্পর্কে জানিয়ে রাখা জরুরি।
আয়রনের অভাব এবং রক্তাল্পতার মতো সমস্যা ভারতের প্রায় ঘরে ঘরে। তাই বিপদ বাড়ার আগেই প্রয়োজন এর প্রতি সচেতন হওয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy