এলাকায় একটি হাসপাতাল চেয়ে জমি, টাকা দান করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারপর ছ’বছর পেরিয়ে গিয়েছে। তৈরি হয়েছে হাসপাতাল ভবন। তৈরি হয়েছে চিকিৎসক, কর্মীদের জন্য আবাসনও। বিদ্যুতের সংযোগও এসেছে অনেক দিন ধরে। তারপরেও কেন হাসাপাতাল চালু হয়নি তার কোনও সদুত্তর নেই। যা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ডোমকলের বাগডাঙ্গার বাসিন্দারা।
ডোমকল ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র মহকুমা হাসপাতালে উন্নীত হওয়ার পর থেকে বাগডাঙ্গায় একটি হাসপাতাল গড়ার প্রস্তাব নেওয়া হয়। প্রস্তাবটা যখন এসেছিল তখন না করেননি স্থানীয় বাসিন্দারা। কেউ জমি, কেউ বা এগিয়ে দিয়েছিলেন নগদ টাকা। শেষ পর্যন্ত ২০০৯ সালের নভেম্বরে হাসপাতাল গড়তে বিঘা সাতেক জমি সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। চোখের সামনে সেই জমিতে তরতরিয়ে কংক্রিটের কাঠামো গড়ে উঠতে দেখে খুশি হয়েছিলেন তাঁরা। খুব বেশি হলে বছর খানেক, তারপর ঘরের কাছেই মিলবে যাবতীয় পরিষেবা সেই ভাবনা পেয়েছিল তাঁদেরকে। তখন আর সামান্য কাটাছেড়ার জন্য মাইলের পর মাইল উজিয়ে ডোমকল হাসপাতালে যেতে হবে না। কিন্তু কোথায় কী। তারপর পেরিয়ে গিয়েছে ছ’ছটা বছর! লালফিতের ফাঁস আর কাটেনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, হাসপাতাল চালু করার ব্যাপারে বারবার প্রশাসনকে জানানো হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা আজাদ আলি মণ্ডল বলেন, ‘‘আড়াই বিঘা জমি দান করেছিলাম। অনেকেই মোটা অঙ্কের টাকা দান করেছিলেন। এমনকী এলাকার বিপিএল তালিকাভুক্ত মানুষজনও হাসপাতালের জন্য জমি কিনতে ১০০ দিনের কাজ করে এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু এত করেও হাসপাতালের দরজা খুলল না।’’ জমি কিনতে আড়াই লক্ষ টাকা দান করেছিল স্থানীয় বাগডাঙ্গা বাজার ব্যবসায়ী সমিতি। সমিতির সম্পাদক সোলেমান বিশ্বাস বলেন, ‘‘এখান থেকে ডোমকল হাসপাতালের দুরত্ব প্রায় ১১ কিলোমিটার। এলাকায় কোনও প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র নেই। তাই এলাকায় একটি হাসপাতাল হবে শুনে সকলে এগিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু এতদিনে হাসপাতাল চালু না হওয়ায় আমরা খুব হতাশ।’’ একশো দিনের কাজ করে হাসপাতাল গড়তে টাকা দিয়েছিলেন হজরত মণ্ডলেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘এলাকায় একটি সরকারি হাসপাতাল হলে আমাদের মতো মানুষের বড় উপকার হবে ভেবে সাধ্য মতো এগিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু কোথায় কী।’’ আরও এক বাসিন্দা নীলরতন সরকার বলেন, ‘‘প্রসূতিদের নিয়ে ভীষণ অসুবিধায় পড়তে হয়। হাসপাতালটি চালু হলে এলাকার কয়েক হাজার মানুষ উপকৃত হতেন।’’
প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাও সঠিক করে বলতে পারছেন না কবে হাসপাতালটি চালু হবে। ডোমকলের এসিএমওএইচ প্রবীর মান্ডি বলেন, ‘‘পরিকাঠামো তৈরি। কিন্ত সরকারি নির্দেশ আসেনি। তাই চালু করা যায়নি।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভাশিস সাহা অবশ্য আশার কথা শুনিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতাল চালু করার ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা নেই। আমরা যত দ্রুত সম্ভব ওই হাসপাতাল চালু করব। ইতিমধ্যেই সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy