স্বাস্থ্যকর খাবার দিলেও খুদের টিফিন বাক্স হবে খালি। — ‘হামি’ ছবির দৃশ্য।
খুদে স্কুলে কী টিফিন নিয়ে যাবে, আগের রাত থেকেই চিন্তা ঘুরতে থাকে মায়েদের মাথায়। সকাল শুরু হলেই হেঁশেলে রীতিমতো যুদ্ধে নেমে পড়েন। খুদের স্বাস্থ্যরক্ষা হবে আবার সোনামুখ করে খেয়েও নেবে— এমন খাবার বাছতে গিয়ে খানিক নাজেহাল হয়ে পড়েন অনেকেই। সকাল থেকে অনেকটা সময় স্কুলে কাটে শিশুদের। বাবা-মায়েদের চোখের আড়ালে থাকে তারা। ফলে টিফিনে এমন খাবার দিতে হবে যে, দীর্ঘ ক্ষণ চনমনে এবং চাঙ্গা থাকে শিশু। পাস্তা, চাউমিন বানিয়ে দিলে টিফিনবাক্স খালি হবে কি না, তা নিয়ে একটা ভয় থাকে। কিন্তু সেই সব খাবার মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। আগের দিন নয়, শিশুর টিফিনে কী দেবেন, তার ভাবনা শুরু হোক আগে থেকেই। আগে থেকে কিছু পরিকল্পনা সেরে রাখলেই খুদের টিফিন নিয়ে আর বেশি ভাবতে হবে না অভিভাবকদের।
১) তালিকা তৈরি রাখুন: খুদের টিফিনের জন্য সবার আগে চারটি ভাগ করে নিতে হবে। সেই ভাগের প্রত্যেকটি যেন টিফিনে থাকে সেই বিষয় নিশ্চিত হতে হবে। টিফিনে থাকবে মূল খাবার, সব্জি, ফল আর মুখরোচক কিছু খাবার। টিফিনের মূল খাবারে ছ’দিন ছ’রকম খাবার দিন। কখনও আলুর চিলা, রুটির ট্যাকোজ, সুজির ইডলি কখনও আবার ব্রেড পিৎজ়া, চি়জ় পরোটা কিংবা সিমুইয়ের চাউমিন। সঙ্গে অবশ্যই কোনও দিন ফ্রুট স্যালাড কোনও দিন একটি গোটা ফল দিতে হবে। একটি ছোট্ট বাটিতে সেদ্ধ করা গাজর, ক্যাপসিকাম, মটরশুঁটির মতো সব্জি অল্প মাখনে ভেজে দিতে পারেন। মুখরোচক হিসাবে কখনও মশলা মাখানো মাখানা, কখনও রাঙা আলুর ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, ড্রাই ফ্রুটস দিতে পারেন।
২) হেঁশেল রাখুন গুছিয়ে: টিফিনের জন্য যাবতীয় জিনিস যেন বাড়িতে আগে থেকেই মজুত থাকে, সে দিকে নজর দিতে হবে। সকালে দ্রুত গতিতে কাজ করার জন্য আগের রাতেই খানিকটা কাজ এগিয়ে রাখতে পারেন। সব্জি কেটে রাখা থেকে পরোটার আটা মেখে রাখা— কিছুটা কাজ এগিয়ে রাখলে সকালে উঠে আর হিমশিম খেতে হবে না। সকালের তাড়াহুড়োর সময়ে যেন সব জিনিস হাতের কাছেই থাকে, যে বিষয়টি নিশ্চিত করুন। ভাগে ভাগে খাবার দিলে শিশুদেরও খেতে সুবিধা হয়। তাই আলাদা আলাদা টিফিনে খাবার ভরে দিতে পারেন। টিফিন বাক্স ও জলের বোতলটি যেন শিশুদের মনের মতো হয়, সে দিকটাও খেয়াল রাখুন।
৩) টিফিন তৈরির কাজে খুদের সাহায্য: টিফিন তৈরির জন্য খুদের সাহায্য নিতে পারেন। ধরুন স্যান্ডউইচ বানাচ্ছেন, সে ক্ষেত্রে শিশুর সামনে সমস্ত উপকরণ সাজিয়ে রাখুন। তার পর তাকেই বলুন পাউরুটিতে মাখন মাখিয়ে সমস্ত উপকরণ সাজিয়ে দিতে। নিজের হাতে তৈরি খাবার টিফিনে সে ভালই উপভোগ করবে। এ ছাড়াও ড্রাই ফ্রুটস টিফিনে ভরা, জলের বোতল ভরে রাখার মতো ছোট ছোট কাজগুলি খুদেকে দিয়ে করালে সেও ছোট থেকে স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে।
৪) অবসর সময়ে টিফিনের জন্য খাবার বানিয়ে রাখুন: টিফিনে খুদেকে বার্গার বানিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন? আগে থেকে বার্গারের প্যাটি তৈরি থাকলে কিন্তু সকালে বার্গার বানাতে মিনিট পাঁচেকের বেশি সময় লাগবে না। এর জন্য ছুটির দিনে আগে থেকে সব্জি দিয়ে আলুর প্যাটি তৈরি করে ফ্রিজ়ারে রেখে দিতে পারেন। তা হলে টিফিন তৈরির কাজ অনেকটাই সহজ হবে। এ ছাড়া, টিফিনের জন্য নিমকি, মাফিন, কুকিজ় বানিয়ে রাখতে পারেন। বাইরের তৈরি খাবারের চেয়ে বাড়িতে তৈরি খাবার অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর হবে।
৫) টিফিনে চমক: প্রতি দিন টিফিনের সঙ্গে যদি একটি চমক থাকে, তা হলে কিন্তু খুদেরা বেশি খুশি হয়। সে ক্ষেত্রে কোনও দিন শেষপাতে একটু মিষ্টি কোনও দিন চকোলেট দিতেই পারেন। কোনও দিন বার চমক হিসাবে শিশুর জন্য একটি মজার চিঠিও রাখতে পারেন টিফিন বক্সে। কোনও দিন আবার পরোটা গোল না বানিয়ে হৃদয়ের আকারে বানিয়ে দিলেন, সেই দেখেই কিন্তু খুশি হয়ে যাবে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy