হোটেল-রেস্তরাঁ থেকে প্লাস্টিকের কৌটোয় বাড়িতে অথবা অফিসে আসছে বিরিয়ানি থেকে চাউমিন, মাটন চাঁপ থেকে চিকেন কবাব। সঙ্গে প্লাস্টিকের চামচ অথবা কাঁটা চামচ। প্লাস্টিকের ব্যবহার যতই নিষিদ্ধ করা হোক না কেন, রোজের কাজে সেই প্লাস্টিকই আমাদের হাতে উঠে আসে বিভিন্ন ভাবে। অফিসে টিফিন নেবেন বা সন্তানকে স্কুলে যাওয়ার আগে খাবার দেবেন, সেটিও কিন্তু প্লাস্টিকেরই বাক্স। রান্না করা গরম ভাত, তরকারি প্লাস্টিকের টিফিন বাক্সে ভরে নিয়ে যান কমবেশি সকলেই। সেই পাত্রটি আবার মাইক্রোঅভেনে গরমও করা হয়। কিন্তু জানেন কি, যে পাত্রটিতে খাবার ভরে আনছেন সেটি কতটা সুরক্ষিত? এমন পাত্রে খাবার রাখলে কী কী সমস্যা হতে পারে?
প্লাস্টিকের বাক্সে ভাত নিয়ে অফিসে যান অনেকেই। শুধু ভাত নয়, ডালিয়া, কিনোয়া বা ওট্সের খিচুড়ি যা-ই হোক না কেন, তা প্লাস্টিকের টিপিন বাক্সে বেশি ক্ষণ রাখলেই বিপদ। ভাত বা যে কোনও দানাশস্যের কার্বোহাইড্রেট প্লাস্টিকের সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে এমন ‘টক্সিন’ তৈরি করে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। সাধারণত দেখা যায়, গরম ভাত টিফিনবাক্সে ভরলে যে বাষ্প বাক্সের গায়ে লেগে থাকে তা থেকেই ‘আফলাটক্সিন’ ও ‘মাইকোটক্সিন’ নামে দু’রকম রাসায়নিক মিশে যায় খাবারে। এই রাসায়নিক পেটে গেলে লিভার ও কিডনির জটিল অসুখ হতে পারে।
এ বার ধরুন, তরকারিও রাখছেন ওই একই রকম পাত্রে। শাকপাতা দিয়ে রান্না তরকারি যদি হয়, তা হলে প্লাস্টিকের অতি সূক্ষ্ম কণা বা মাইক্রোপ্লাস্টিক তাতে তাড়াতাড়ি মিশে যাবে। সেই পাত্রটি আবার গরম করলে, তাতে প্লাস্টিক কণার পরিমাণও বাড়বে। দিনের পর দিন এমন প্লাস্টিক-সমেত খাবার খেতে থাকলে তা পেটের গোলমাল তো বটেই, আরও নানা জটিল অসুখের কারণ হয়ে উঠবে।
আরও পড়ুন:
ডাল বা ওই জাতীয় খাবার যদি প্লাস্টিকের কৌটোয় রাখেন, তা হলে ডালের পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের পরিমাণ কমে যাবে। সেই ডাল খেলে কোনও লাভই হবে না।
প্লাস্টিকের টিফিনবাক্সে কাটা ফল নিয়ে যান অনেকেই। এখানেও ক্ষতি। কমলা, মুসম্বি, পেয়ারার মতো ফল, যাতে ভরপুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে, প্লাস্টিকের প্রভাবে তাতে ক্ষতিকর রাসায়নিক তৈরি হবে। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের মাত্রা কমবে। তাই টক জাতীয় ফল বা ভিটামিন সি আছে, এমন ফল প্লাস্টিকের কন্টেনারে রাখা ঠিক নয়।